আমি বলি‚ আমার জীবন একটা ত্রিভূজ!
বাচ্চাদের মা জিজ্ঞেস করে, ত্রিভূজের দুইটা ভূজতো তোমার ছেলে-মেয়ে। আরেকটা ভূজ কে?
আদতে বাচ্চাদের মা শুনতে চায় তৃতীয় ভূজ আসলে সে। আমি বিশ্বাসও করি তা। আমি আসলে তাদেরই। তারা কি আমার?
বাচ্চাদের মা সে উত্তর আসলে জানে। নিশ্বাস নেয় দীর্ঘ করে। তারপর বলে, কী যে মায়া!
আসলেই কী যে মায়া!
বাচ্চাদের মা তার তিন বাচ্চার কথাই বলে। চোখে উষ্ণতা ঝিলিক দেয়। আসলেই কী যে মায়া!
বাচ্চাদের মা কি সেই কথা মনে রাখতে পেরেছে, সেই আশির্বাদের কথা! মনে করিয়ে দেই আমি।
হাসপাতালে বসে আছি আমরা। রোগী দিয়ে ঠাসা হাসপাতাল। বাচ্চাদের মায়ের হাতে মেডিকেল রেকর্ড ফাইল। সামনের সিটে দুই ভদ্রমহিলা বসা। বাচ্চাদের মা একটু বের হয়েছিল চেয়ার ছেড়ে। বসতে গিয়ে তার হাতে থাকা মেডিকেল রেকর্ড ফাইল গিয়ে ঠেকলো সামনে বসা ভদ্রমহিলার পিঠে।
আমি আর্তচিৎকার করে বললাম, হুম! তুমি ইচ্ছে করে সামনের আপার পিঠে খোঁচা দিয়েছো?
সামনের ভদ্রমহিলা আমার থেকেও দ্বিগুণ আর্তচিৎকার করে বললেন, না ভাই! আপা ইচ্ছে করে আমাকে খোঁচা দেন নি। এমনি এমনি হয়েছে।
আমি বললাম, অবশ্যই ইচ্ছে করে দিয়েছে। আমি স্বাক্ষী।
আমারা হাসছিলাম। আমাদের হাসি দেখে সামনের আপার পাশেরজন বললেন, আজকে বাসায় গেলে ভাইর(আপনার) খবর আছে!!
আমাদের দুজনের হাসি দেখে ভদ্রমহিলা দুজন বুঝেছিলেন, আমরা তাদের সাথে মজা করছি। একজন বললেন, কী যে ভালো জুটি!!
পরে তারা আমাদের আশির্বাদ করলেন, আল্লাহ যেন আমাদের অনিন্দ্য সুন্দর বাচ্চা উপহার দেন। আমাদের দুষ্টামি দেখে বললেন, আমাদের বাচ্চা হবে সেই লেভেলের দুষ্টু! লাইক ফাদার লাইক সান অর ডটার।!
সে আশির্বাদের কথা আমরা ভুলি নি। আমার জীবন আসলে চতুর্ভূজ!আমার তিন বাচ্চা আমার তিন ভূজ। আমার জীবন!
ওহে বাচ্চাদের মা,
জীবন আসলেই মায়ার সমষ্টি! ঘুমিয়ে থাকা বাচ্চাদের মুখে তাকিয়ে থাকা মায়া! ঘুমিয়ে থাকা পাশের পৌরুষের প্রতি মায়া!
কি যে মায়া!
কি যে মায়া!