আহা কুষ্টিয়া! প্রাণের শহর আমার

Uncategorized

আহা কুষ্টিয়া! প্রাণের শহর আমার;
মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার; সাংস্কৃতিক রাজধানী-কতো নামে ডাকা।
অতপর-
শিল্পকলার উঠোনে জন্মালো ঘাস। বন্ধ হলো জেলা স্কুল মাঠের বিজয় মেলা। মজমপুরের রাজাকার চত্বর উবে গেলো দখলদাপটে। লালন সাঁইজীর সমাধি অসম্মানিত হলো। বানানো হলো অনান্দনিক অডিটরিয়াম। প্রতিবাদে আক্রান্ত হয়েছিলেন শামসুর রাহমানেরা। কবিদের কলম চললো কিছুদিন। স্থানীয় সা্ংবাদিকেরাও ফুঁসলেন। এরিমধ্যে আবার পাংশায় কাটা হলো বাউলের ঝুঁটি। সেনগ্রামে আক্রান্ত হলো সাধুর দল। শীতপার্বনে গঞ্জের ফুকোফাঁকায় যাত্রা ছিলো উৎসবের মতোই। ক্যামনে ক্যামনে যেনো বন্ধ হয়ে গেলো পালাগান। কবি, ধুয়ো, গীতিকা, ভাসান-এ কেবলই সবে স্মৃতি। এসব নিয়ে যাদের ভাবতে দেখতাম তাঁরাও যেনো ক্যামন হয়ে গেলো। গানবিরোধী, শিল্পদোষী, শিল্পীবিবাগী।
নিরুপায় কেউ কুষ্টিয়া ছেড়েছেন নিরবে। এই অসুখের ঘোরে তবু লালিম হক, অশোক সাহা, প্রফেসর সরওয়ার মুর্শেদ রতন, ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, সৈয়দা হাবিবা, রীনা বিশ্বাসেরা চেষ্টা করলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের নামে সুরসর্বস্ব একখানি ব্যানার এখনও মেলে ধরে আছেন। শুনেছি, এডভোকেট অনুপ নন্দীর পড়োবাড়িতে সান্ধ্যকালীন আড্ডা আর নেই। কমরেড রওশন আলীরা মরে বেঁচেছে। ডা. মোসাদ্দেকদের সাহিত্য আড্ডা আঁতুরঘরেই বিলোপ হয়েছে। আমলাপাড়া, কোর্টপাড়া, থানাপাড়ার বাড়ি গলিয়ে সুর ভাসে না প্রতি সন্ধ্যায়। দেয়ালে নেই গান শেখানোর পোস্টার। শহরের খাম্বায় কাজী অফিসের সেল নম্বর সাঁটানো। আর আছে বাসায় গিয়ে বিশেষ ডিসকোর্স পড়াবার লিফলেট। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বধির কার্যক্রম রাজনৈতিক আগ্রাসনে ডিসএ্যাবল। পরিত্যক্ত অফিসবাড়ির মতো উদীচীও পুুরোণো হয়ে গেলো।
তাহলে-!
ভাঙা যায়!
এই শহরে জাতির পিতার ভাস্কর্য কেনো পুরো শহরটাও ভাঙা যায়!!
পুণশ্চ: বাঁচতে হলে গড়তে হবে। আসুন সংস্কৃতির ভাঙা আয়নায় নিজেকে দেখি। দুর্বলকে আর কতোদিন প্রতিপক্ষ বানাবেন??

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *