এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে… পুনরুত্থান হবে রক্তনদী পার করে রাসবিহারী বসুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই

Blog Uncategorized
মাত্র শতবর্ষ পূর্বের ঘটনাবলী: জাতির ইতিহাসে ১০০ বছর একটি সংখ্যামাত্র, মহাকালের চোখের পলক পড়তেই কেটে যায় কয়েক শতাব্দী – এক লহমায়। কথা হচ্ছে একটি সময়ের – ব্রিটিশের ভয়ঙ্কর অত্যাচারের বিরুদ্ধে লৌহ, স্বেদ ও রক্তের সাধনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে লৌহদৃঢ় মাংসপেশী, ইস্পাত-কঠিন স্নায়ু ও বজ্রভীষণ লক্ষ্য নিয়ে একদল বাঙ্গালী – বাঙ্গালী হিন্দু: স্বদেশী আন্দোলনের copyright তাঁদেরই। ভ্রান্ত বামপন্থীয় প্রচারে তা সকলের হয়ে যায় না: সকলের হলে তো বঙ্গভঙ্গই হতো না।…….১৯১১তে বড়লাট হার্ডিঞ্জের উপরে বোমা বিস্ফোরণ বুঝিয়ে দিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে যে কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী করে পালালেও বাঙ্গালীর হাত থেকে নিস্তার নেই তার… বজ্রদীপ্ত মূর্তিমান ন্যায়ের দন্ড আছড়ে পড়তে পারে যে কোন স্থানেই।…
ব্রিটিশ তা বুঝেছিল মোক্ষমভাবে – ১৯১৪-এর হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্রের ব্যাপ্তির প্রচন্ডতা শতবর্ষ পরেও আজ যদি অধ্যয়ন করা যায় অপার বিস্ময়ে হতে হয় স্তম্ভিত। – এইসকল কার্যের মধ্য দিয়েই উত্থান তাঁর: অকল্পনীয় প্রতিভাসম্পন্ন – কি শারীরিক শক্তি, কি রিভলভার – পিস্তল দখল, কি ছদ্মবেশ ধারণ – আক্ষরিক অর্থেই মহাক্ষত্রিয়।…. চন্দননগরের ও প্রবর্তক সঙ্ঘের মতিলাল রায়ের সাহচর্যেই তাঁর প্রথম প্রকাশ….ভারতবর্ষে থাকলে তাঁকে হত্যা করতো ব্রিটিশ: তাই সুদূর জাপানে আশ্রয়গ্রহণ – প্রতি মুহূর্তে ব্যস্ত রইতেন ভারতের সশস্ত্র বিপ্লব যজ্ঞের তরে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে তাঁর অকালে নিহত সতীর্থদের উদ্দেশ্যে জাপানে আপন গৃহের উদ্যানে পুঁতেছিলেন বেশ কিছু গাছের চারা। সন্তানস্নেহে রক্ষণাবেক্ষণের পাশে প্রতিদিন তাদের পাশে বসে একটি নির্দিষ্ট সময় ধ্যান করতেন তিনি। প্রতিষ্ঠিত হলো হিন্দু মহাসভা জাপানে তাঁর নেতৃত্বে – বিপ্লবের এক অন্তর্বর্তী অধ্যায় রূপে। যা ক্রমশ মহীরুহ ধারণ করলে প্রতিষ্ঠিত হয় আজাদ হিন্দ ফৌজ…. সামরিক অনুশাসন ও বৃত্তির প্রতি বাঙ্গালীর তীব্র আকর্ষণ, বাঙ্গালীকে সামরিক বিজ্ঞান সম্পন্ন সমাজ সৃষ্টি করতে হবে আপন রক্ষার্থে – ঊনবিংশ শতাব্দীর Masculine Hinduism – এর প্রজ্ঞার সার্থক রূপ প্রতিষ্ঠিত হল….
কিন্তু তার ভাবীকাল দেখার জন্য জীবিত রইলেন না তিনি – মহাক্ষত্রিয় রাসবিহারী বসু – ১৯৪৫ সালের ২১শে জানুয়ারি অর্থাৎ আজকের তারিখে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর মাত্র ৫৯ বছর বয়সে।…. তার কিছুদিন পরেই চিরতরে অন্তর্হিত হলেন তাঁর মানস পুত্র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু – আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক…. এবং এই সকল ঘটনার মাত্র দুবছরের মধ্যেই শুরু হল রাসবিহারী – সুভাষচন্দ্রের আপন বাঙ্গালী হিন্দু জাতির ক্রমাগত ভাগ্যনাশ…. বিনা বাধায় ও প্রতিনিয়ত আত্মসমর্পণে.. তাঁদের কর্মযজ্ঞের প্রভাব কি পড়েনি জাতির উপরে? অবশ্যই, নইলে বীরের এ রক্তস্রোত হয় না কিন্তু নয়া ষড়যন্ত্রকে পরাস্ত করতে স্থায়ী যোদ্ধৃবেশের প্রয়োজন যা গড়তে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তাঁর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম … এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে… পুনরুত্থান হবে রক্তনদী পার করে রাসবিহারী বসুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই….
বন্দেমাতরম।।

লেখা : অনিমিত্র চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *