মারিনা আবরামোবিক। ১৯৭৪ সালে ইতালির একটা হলে দাড়িয়ে ৬ ঘন্টা পারফরমেন্স করেছিল। মারিনা হলের ভিতর লিখিত একটা কাগজ হাতে দাড়িয়েছিল যে কাগজে লেখা ছিল…
“মনে করো আমি একটা বস্তু,আমি তোমাদের ৬ ঘন্টা সময় দিচ্ছি এর মধ্যে তোমরা আমার সাথে যা খুশি করতে পারো, এবং এর সম্পূর্ণ দায়ভার আমার নিজের।”
সময়টা ছিল রাত ৮টা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত।
মারিনা টেবিলের উপর রেখেছিল, ব্লেড,গোলাপ, আঙ্গুর,মধু, পাউডার, পিস্তল, কনডম, পালক,বাঁশি; যেগুলো দিয়ে মারিনাকে টর্চার করা যাবে। যেমন খুশি ব্যবহার করা যাবে।
একটা মেয়ে যখন ৬ ঘন্টার পারমিশন দিচ্ছে আসো আমার সাথে যা খুশি করো, ঠিক সেই সময় তার সাথে কেমন ব্যবহার করা হয়েছিল সেটা শুনলে শরীরের লোম শিহরি ওঠে। কেউ টাস করছিল, কেউ গায়ে ঠেলা দিচ্ছিল এবং ভাবছিল এর সাথে এখন কি কি করা যায়। একটা দল তাকে তুলে আছাড় দিচ্ছিল, কেউ ব্লেড দিয়ে শরিরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়। কেউ কেউ তার শরীরের পোশাক খুলে তার সঙ্গে যৌন সঙ্গমও করেছিল। এত কিছুর পরও তাদের মন ভরছিল না, তারা কেউ কেউ মারিনার শরীরে কাঁটা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এই ৬ ঘন্টার মধ্যে যা যা করার তার সবই করেছিল। তার পরেও তাদের খায়েশ কিছুতেই মিটছিল না।
একটা পর্যায়ে মারিনার দেয়া ৬ ঘন্টা সময় শেষ হলো। মারিনা হাঁটতে শুরু করল। আর হলে থাকা যত মানুষ ছিল যারা তার সাথে এমন আচরণ করেছে, শারীরিক নির্যাতন করেছে, গায়ে কাঁটা ঢুকিয়ে দিয়েছে, কাপড় খুলে দিয়েছে, মারিনা এক এক করে তাদের সামনে গিয়ে দাড়ালো এবং তাদের চোখে চোখ রেখে দেখা শুরু করে। এতক্ষন যারা তার সঙ্গে অসভ্য আচরন করল, তার গায়ের কাপড় খুলে দিল, সেই মানুষ গুলো তার চোখের দিকেও তাঁকাতে পারছিল না। মারিনা এই পারফরমেন্সে মানুষদের মাঝে লুকিয়ে থাকা একটা রাক্ষস দেখিয়েছে। খারাপ মনোভাবগুলো বের করে এনেছে। মানুষ মনের মাঝে কতটা রাক্ষস লালন করে সেটা দেখানোই মারিনার উদ্দেশ্য ছিল।
মানুষ যখন আপনাকে অসহায় পাবে তখন আপনাকে যন্ত্রণা দেয়ার একটা উপায়ও বাদ রাখবে না। অসহায় ও প্রতিবাদ করার ক্ষমতা না থাকলে সবাই আপনাকে বস্তু মনে করবে। ওরা তখন টর্চার করে মজা পাবে। ওরাও কিন্ত মানুষ। মানুষ রাক্ষস! যারা মারিনার সাথে অমন করেছিল।
পরিশেষে বলা যায় যে, আপনারা বনে জঙ্গলে কোথাও রাক্ষস পাবেন না, এই মানুষের মাঝেই রাক্ষস, মানুষরূপী জন্তু-জানোয়ার গুলো (অমানুষ) লুকিয়ে থাকে। আমাদের উচিত এদের থেকে সাবধান থাকা।
.
.
.
তথ্যসূএঃ উইকিপিডিয়া কৃতজ্ঞতা: মুনীর মুন্না