একদিন এই পোড়া দেশের কর্তৃত্ব চলে যাবে জঙ্গিদের হাতে।

Uncategorized

একটা বিতর্ক অনুষ্ঠানের কিছুটা দেখলাম বাংলাদেশের এক চ্যানেলে। শাহরিয়ার কবির ছিলেন, মৌলানা মামুনুল হক ছিলেন। কোনও মৌলানার টেলিভিশনে এসে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বসে   বিতর্ক করা — এ আমাদের সময় কল্পনারও অতীত ছিল। দেশ কোথায় নেমেছে, ভাবলে শিউরে উঠি। শাহরিয়ার কবির নিঃসন্দেহে একজন নাস্তিক। কিন্তু তাঁকে ইসলামে ভালো কথা লেখা আছে, মামুনুল হকরাই ইসলাম ঠিকঠাক মানছেন না, বলতে হলো। উনি বললেন, ইসলামে ভাষ্কর্যের বিরুদ্ধে কিছু লেখা নেই, মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে লেখা আছে, অন্যান্য মুসলিম দেশে ভাষ্কর্য আছে, বাংলাদেশেও ভাষ্কর্য থাকা, মূর্তিপূজা নয়, ভাষ্কর্য থাকা  অনৈসলামিক নয়। মামুনুল হক সাফ বলে দিলেন,  অন্যান্য দেশে কী আছে কী নেই তা দেখবো না, কোরান সুন্নায় যা  লেখা আছে তা মেনে চলবো। দু পক্ষের একই কথা, কোরান সুন্না মেনে চলবো, তবে কোরান সুন্নায় কী আছে কী নেই — তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া হয়।

আমার প্রশ্ন হলো, শাহরিয়ার কবিররা কেন বলতে পারেন না, কোরান সুন্না মানবো না, কারণ কোরান সুন্না মানবাধিকার বিরোধী, নারী বিরোধী, বাক স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র বিরোধী? কেন শাহরিয়ার কবিরকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করে কথা বলতে হয়? কেন তিনি বলতে পারেন না এই সরকার মৌলবাদ আর জঙ্গিবাদ উত্থানের জন্য দায়ী? কেন বলতে পারেন না  ১৪০০ বছর আগে ইসলাম  যা বলেছিল, যা লিখেছিল,যা আদেশ দিয়েছিল, তা   এই একবিংশ শতাব্দিতে অচল, আমাদের   শিক্ষা দীক্ষা, চিন্তা ভাবনা,  ধ্যান ধারণা, আইন কানুন সবকিছুকে আধুনিক করতে হবে?  কেন বলতে পারেন না, মসজিদ মাদ্রাসায় ধর্ষণ চলছে, ওয়াজ মাহফিলে মোল্লা মৌলানারা  গ্রামে গঞ্জে শহরে বন্দরে  মানুষকে  সাম্প্রদায়িক এবং সন্ত্রাসী হওয়ার প্রেরণা দিচ্ছে, কেন বলতে পারেন না ওয়াজ নিষিদ্ধ করার জন্য? শাহরিয়ার কবিররা না বললে কারা বলবেন অত্যন্ত জরুরি সব কথা? দেশের কারা সমাজ পরিবর্তনের জন্য সাহসী ভূমিকা রাখবেন? যারা বলতে পারতো সব তো   সুড়সুড় করে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। 

ইসলামের ভালো দিকগুলো  দেখিয়ে ইসলামের মন্দ দিকগুলো  হটানোর কৌশল করে কোনও লাভ নেই।    মামুনুল হকরা  ইসলামের যত মন্দ আছে– নারীর বিরুদ্ধে যত  বৈষম্য আছে, বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যত আইন আছে, শিল্প সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যত আদেশ আছে সব  সেলেব্রেট করবেন। এটিই তাদের রাজনৈতিক ইসলাম। ইসলাম বিরোধী কাজ কওমী মাতাও সইবেন না। তিনি তো মামুনুলদের দয়ায় ক্ষমতার আরাম ভোগ করছেন।

একদিন এই পোড়া দেশের কর্তৃত্ব  চলে যাবে জঙ্গিদের হাতে। জঙ্গিদের নিজের কোনও দেশ নেই,   ইরাকে সিরিয়ায় গিয়ে একটুখানি জায়গার জন্য তাদের   লড়তে হয়। আর আস্ত একটি দেশ পেয়ে যাওয়া — এর চেয়ে চমৎকার সুখবর আর কী আছে!  থ্রি চিয়ার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *