এদেশে প্রথম মদিনা সনদে দেশ চালানোর কথা বলায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হবে

Uncategorized

কিছুক্ষণ আগে ফেইসবুক লাইভে মামুনুল হকের বক্তব্য শুনলাম। তার বক্তব্যের আগে পুলিশের এক এসপি বক্তব্য রাখলেন। তিনি আশ্বস্ত করলেন পুলিশ ও আলেমদের মাঝে কোন ভেদাভেদ নেই। আমরা সবাই মুসলমান। দেশে উন্নয়ন হচ্ছে আলেম ওলামা সবাই মিলে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখি…ইত্যাদি।

এরপর মামুনুল হক এসে বললেন,  ইমাম হাম্বলীর মত শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হকের কথা বলতে হবে। ভাস্কর্য মূর্তি হারাম এটা হাক্কানী আলেমরা বলে যাবেই। মদিয়া সনদের কথা বলায় যদি বাবুনগরীর বিরুদ্ধে মামলা হয় তাহলে এদেশে প্রথম মদিনা সনদে দেশ চালানোর কথা বলায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হবে

ভাবুন একবার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার কথা বলে আস্ফালন করা লোকটার সভায় পুলিশ এসে তেল দিয়ে যায়! তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা আদালতে বাতিল হয়েছে। মামুনুল হক দম্ভোক্তি করে বলেছে তার বিরুদ্ধে দুইটা মামলা আদালত গ্রহণ করে নাই বাকীটাও বাতিল হবে। অথচ ফেইসবুকের চিপায় চুপায় কে কখন বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি করল তাকে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়। চরমোনাই পীর রেজাউল করিম, মামুনুল হককে এখনো কেন বহাল তবিয়তে দম্ভোক্তি করে যেতে দিচ্ছে? আওয়ামী লীগের বন্ধুরা কেউ কিছু বলতে পারেন?  কেন এই আপোষ?

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিষয়ে ইসলামপন্থীদের আলোচনার প্রস্তাবে সরকার রাজি হয়েছে বলে বিবিসি নিউজ করেছে। হেফাজত নেতা আব্দুর রব ইউসুফী বলেছেন, “বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় ব্যাপারে একগুঁয়েমি করেন না। এটা আমাদের জানা এবং আমাদের বিশ্বাস। সেকারণে আলোচনায় বসলে একটা সমাধান বের হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।” ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, গত কয়েকদিনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনাগুলোতেই সমাধানের কিছু প্রস্তাব এসেছে। আমার কথা হলো, ভাস্কর্যটাই হবে। আমি বলছি, ওনারা অনেকে বলেছেন যে, ওখানে যদি বঙ্গবন্ধুর নামে একটা গেট করেন ভাল হয়। সেটা ভাল কথা। ওই জায়গায় গেট করলাম। আর ভাস্কর্য ওখান থেকে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলাম। হয়ে গেলো। সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এটা নিয়ে টেনশন করার কোন কারণ নাই”

১০ মিটার আগায় পিছায় দিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে নতিস্বীকারের কারণটা কি? আজকে ১০ মিটার সরিয়ে নিলে জিতটা যারাই হোক আগামীকাল সেই ১০ মিটার দূরে সরানো ভাস্কর্যই হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা ছাতু করে দিবে। আমার এখন নিজেরই সন্দেহ হয় ঈমানদার প্রধানমন্ত্রী নিজে ভাস্কর্য মূর্তি পছন্দ করেন কিনা! না হলে আমাদের কাছে পরিস্কার করতে হবে বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসার কাছে জিন্মি হয়ে পড়েছে কিনা। বাংলাদেশ নিয়ে এদেশের জনগণের সঠিক ধারণা পাওয়া জরুরী। হেফাজত বা অন্য যে কোন ইসলামী শক্তি যদি প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে থাকে, যদি তাদের হুমকিতে সরকারের কাপড় নষ্ট হয়ে যায় তাহলে বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু ও আদিবাসী পাহাড়ী ও মুসলিম প্রগতিশীল সেক্যুলার নাস্তিকদের এদেশে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশ্যই সময় নিয়ে ভাববার বিষয় আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার হোল ডিস্ট্রিবিউটর মদিনা সনদ বা খিলাফত মজলিসের সঙ্গে চুক্তি করার অভ্যাস আছে তাদের ঝাঁকের সঙ্গে মিশে যেতে সময় লাগবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *