বিকেলের দিকে জ্বরটা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিলো। বমিও হয়েছে। সেইসাথে প্রচণ্ড মাথাব্যথা। সামান্য কিছু মুখে দিয়ে ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। ঘুমও এসেছিলো।
এই মাত্র ঘুম ভাঙলো হঠাৎই কার যেন চিৎকার শুনে। হঠাৎ ঘুম ভাঙায় প্রথমে কিছুই বুঝলাম না। একটু ধাতস্ত হতেই বুঝতে পারলাম পাড়ায় ওয়াজ মাহফিল এর আয়োজন করা হয়েছে। সে উপলক্ষে পুরো এলাকা জুড়ে অনেক গুলো মাইকও লাগানো হয়েছে শোনার সুবিধার্থে।
কিন্তু একটা জিনিস মাথায় আসছেনা , এতো মাইক থালা স্বত্বেও বক্তা এভাবে তীব্র গলায় চিৎকার করে এতো উত্তেজিত ভঙ্গিতে কথা বলছেন কেন? মাইকগুলোতো লাগানোই হয়েছে আস্তে কথা বললেও যাতে সবাই শুনতে পান। তাইনা? উনারা কি তবে শ্রোতাদের সবাইকে বয়রা মানে কানে খাটো মনে করেন? না করলে মাইক থাকতেও এভাবে সমানে একটানা চিৎকার করার আসলেই মাজেজাটা কি?!! আর চিৎকারই যদি করতে হয় , তাহলে আর এতো টাকা খরচ করে পুরো এলাকা জুড়ে মাইকগুলো লাগানোর আর দরকার কি? মাইকও থাকবে , আবার একটানা চিৎকারও করবেন , ব্যাপারটা কেমন জানি গোলমেলে হয়ে গেলোনা?!!
জানিনা রাত কটা পর্যন্ত চলবে। তবে ইতিমধ্যেই দুটো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে ফেলেছেন তিনি।
১.যেসব পিতামাতা ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় না পড়িয়ে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছেন , তাদের নিজেদের বেহেশতের রাস্তা তাঁরা নিজেই দুর্গম করে তুলছে।
২. আরেকটা হলো হিন্দুদের দূর্গা , কৃষ্ণ এসব দেবতাদের নিয়ে উনার স্পেশাল বক্তব্য। সরকার বিরোধী ইঙ্গিতও আছে যথেষ্টই।
এই মূহুর্তেও বলে যাচ্ছেন সমানে ফুল স্পীডে।
জানিনা , প্রশাসনের কেউ পুরো বক্তব্যটা শুনছেন কিনা। কারণ শুনলে যেভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে কটাক্ষ করছেন উনি , তার একটা কিছু ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে আশা রাখি।
সবার নিজ নিজ ধর্ম পালন করার বা নাকরার পূর্ণ অধিকার বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত।
কিন্তু অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলার অধিকার তো কোথাও উল্লেখ নেই।
যাইহোক , উনারা এভাবেই বক্তব্য দিতে সেই ছোটোবেলা থেকে শুনে আসছি। কাজেই এতে মোটেই আশ্চর্য হইনা। আরো যত ইচ্ছে বলে যান। বলে শান্তি পান।
শুধু একটাই অনুরোধ , প্লিজ মাইকের সামনে একটু আস্তে কথা বলার অনুরোধ রইলো বিনীতভাবে। পাড়ায় আমার মতো অসুস্থ আরো অনেকেই তো থাকতে পারেন আশেপাশে , তাইনা?
সেই মানুষগুলোর কথাও একটু বিবেচনা করুন প্লিজ।
(সবিনয় নিবেদন )