কেন হিন্দু-মুসলিমরা আগাচ্ছে না?

Uncategorized

কেন হিন্দু-মুসলিমরা আগাচ্ছে না?

মুসলিমদের উন্নয়ন ছাড়া ইসলামেরও উন্নয়ন সম্ভব নয়- এ সহজ কথাটা হেফাজতসহ ইসলামি দলগুলো এবং মৌলবাদি মুসলিমরা বুঝে না৷ ইহুদিদের উন্নতি দেখে অনেকে হায়-আফসোস করে৷ বাস্তবিক ইহুদি ধর্মের উন্নতি হয়নি, হয়েছে ইহুদি জাতির৷ কারণ শিক্ষা-গবেষণায় তারা এগিয়ে৷ পৃথিবির এক শতাংশের অনেক কম ইহুদির বিপরীতে হিন্দু-মুসলিম মিলে ৩৩% হয়েও নস্যি হয়ে আছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় হিন্দু মুসলিমরা ফ্যাসাদ করে আরো ধর্মান্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে দূরে থাকে৷ দুদলই ভেবে নিয়েছে ধর্মান্ধতাই তাদের উদ্ধার করবে, জ্ঞান-বিজ্ঞান অনুশীলন করা লাগবে না৷ বেদ-কোরআনসহ তাদের ধর্মগ্রন্থেও জ্ঞান চর্চার কথা বলেছে কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ীরা দেখেছে মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা করলে তাদের ধর্মবিরোধী উপার্জনের কথা মানুষ জেনে যাবে এবং তারা ক্ষমতাহীন হয়ে যাবে৷

হাজারো সমস্যার মধ্যে হেফাজতকে ভাস্কর্য ভাঙ্গার ইস্যুতে আসতে হয়, নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে আসতে হয়, পাঠ্য বই থেকে মানসম্মত লেখা সরানোর আন্দোলন করতে হয় ওই কারণেই৷ মুসলিমদের পিছিয়ে রাখতে না পারলে ধর্ম ব্যবসা ব্যহত হবে৷ তাঁরা কর্মহীন থেকেও আদিকালের হিন্দু ব্রাহ্মণদের মতো অগাধ ক্ষমতা ভোগ করতে পারবে না৷ দেশে দর্শন/বিজ্ঞানের উপর জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দিয়েও মেধাবি-জ্ঞানীরা ৫ হাজার টাকা পায় না আর ওয়াজ করতে এসে হাসি-তামাশা করে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়৷ সেই ক্ষমতাশালী ব্রাহ্মণ্যবাদি আচরণের কথাই মনে করিয়ে দেয়৷

ভাস্কর্য ইস্যুতে হেফাজত ইসলামের পরাজয় বা পতন আশার জায়গা তৈরি করেছে৷ মনে হয়েছে তারা ক্ষমতাসীন বা বিরোধী দলের খুঁটি নয়, ঘুঁটি হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ইসলামি আন্দোলনের গত নির্বাচনে অংশ নেয়া, হেফাজতের মতিঝিলে অবস্থান নেয়া, হাটহাজারি মাদ্রাসার সরকারি আনুকূল্য গ্রহণ ইত্যাদি বহু বিষয় সামনে আনা যায়৷ তারা নিজস্ব ক্ষমতা দেখাতে এগিয়েছিল ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে৷ এটা আবার বাস্তবায়নের জন্য প্রজ্ঞাহীনভাবেই বেছে নিয়েছিল ডিসেম্বর মাসকে৷ অনিবার্য পরাজয়ই বরণ করতে হয়েছিল৷

হিন্দু ও মুসলমানরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আঁকড়ে ধরে অজ্ঞানতাকে, ধর্মান্ধতাকে৷ যদি আধুনিকতার জন্য, জ্ঞান চর্চার জন্য, বিজ্ঞান্যের জন্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পকলার জন্য প্রযোগীতা করতো তবেই দুই ধর্মের লোকই এগিয়ে যেতে পারতো সভ্য ও সহনশীল হতে পারতো৷ কিন্তু সেটা করতে দিবে না ধর্মগুরুরা, তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *