বাক স্বাধীনতা !
🗣✍🗣✍🗣✍🗣✍🗣✍
গান্ধী হলেন রাষ্ট্রপিতা,
মা হলো না কেউ ?
সঙ্গে লেজুর নেহেরু খুড়ো,
আন্তর্জাতিক ফেউ !
অহিংসা আর চরকা নেড়ে,
ডান্ডা হাতে, ডান্ডি ঘুরে,
মোপালা আর নোয়াখালী,
মৃত্যু-মিছিল ঢেউ !
লাখো হিন্দুর আর্তনাদে,
সেদিন ভারতমাতা কাঁদে,
হিন্দু নারীর লাজ বাঁচাতে,
আসলো না তো কেউ ?
গান্ধী হলেন জাতির জনক,
মা হলনা কেউ !
ছাগ-দুগ্ধপায়ী, ব্রহ্মচারী !
তার পরীক্ষাও তাই জরুরী !
কেনো মনু-আভার আঁচলে দাগ ?
জানলো না তো কেউ ?
গান্ধী আমার জাতির আব্বা !
আম্মু হলনা কেউ ?
।।মহন্ত সুন্দর গিরী মহারাজ।।
⚔⚔⚔⚔⚔⚔⚔⚔⚔⚔⚔
হ্যাঁ জাতিরপিতা নামক মিথ্যাচারে মোরা, গান্ধী নামক আপাদমস্তক এক ভন্ডকে, আমরা মনেপ্রাণে ঘৃণা করি । একই সাথে আমরা হৃদয়ে, চীরস্মরণীয়, বরণীয়, মহান দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে বরণ করি, মহান হুতাত্মা স্বর্গীয় রামচন্দ্র নাথুরাম গডসেজীকে । তাকে আমরা আমাদের আদর্শ বলে মনে করি, হ্যাঁ আমাদের আদর্শ বলে মনে করি, কারণ একজন ভণ্ডকে বধ করার মাধ্যমে, বৃহত্তর এই ভারতবর্ষের, এই হিন্দুস্তানের, হিন্দুদের ত্রাণকর্তারূপে নিজেকে চীরভাস্কর করে গিয়েছেন তিনি । হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এই হিন্দুস্থানে, যেখানে হিন্দুরা নিজের পিতৃ-পুরুষের ভূমিতেও, তথাকথিত ২৭ কোটি সংখ্যালঘুদের অত্যাচারে, টু শব্দটি পর্যন্ত করলেই, অসহিষ্ণু, মানবতার শত্রু বলে আখ্যায়িত হন ! সেখানে আজ আরও এক জন নয়, এরকম হাজারো নাথুরাম গডসের প্রয়োজন । আর তাই আমরা নাথুরাম গডসেকে আমাদের আদর্শ প্রাণপুরুষ বলে মনে করি । এ আমার বাক স্বাধীনতা, আমার চিন্তার স্বাধীনতা । এ কে হরণ করার, এ কে দমন করার, কোন অধিকার, কোন এক্তিয়ার, কোন রাষ্ট্রযন্ত্রের, কোন রাজনৈতিক দলের, কোন রাজনৈতিক নেতার নেই । আর তাই গান্ধীকে নিয়ে এইরকম একটি ব্যঙ্গাত্মক কবিতা লেখার স্পর্ধা রাখতে পারি । হ্যাঁ, যা করেছি, বেশ করেছি । আমরা গডসের ভক্ত । যদিও তাকে নিয়ে বাজারে বহু বিতর্ক, বহু দূর্নাম, ইচ্ছাকৃতভাবে, দীর্ঘ বহু বছর ধরে প্রচার করা হয়েছে সংঘবদ্ধভাবে এবং একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত হিসেবে । আজ এই লেখার পরিসরে, কিছুটা হলেও সেই সব অপবাদের খণ্ডন করে, এই মহাপাপের প্রায়শ্চিত্ত করা হবে বলে আমি মনে করি । তাই বিভিন্ন মানুষের এবং ব্লগারদের লেখা ও কিছুটা নিজের পড়াশোনায় মাধ্যমে, নাথুরাম গডসেকে নিয়ে, আজকে সামান্যতম আলোচনার প্রয়োজন আছে, কারণ আজ তার ১১০ তম জন্মপূর্ণ তিথি । আজকের দিনেই ১৯১০ সালে ১৯শে মে, নাথুরাম গডসে, এই ভারত ভূমিতে হিন্দুদের পরিত্রাতা হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ।
আপনারা নেটে সার্চ দিয়ে গডসে সম্পর্কে যতগুলো লেখা পাবেন, সেগুলোর অধিকাংশই ইসলাম ধর্মাবলম্বী লেখক ও ব্লগারদের লেখা । তাই দেখবেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা, নাথুরাম গডসের নামের আগে ঘাতক শব্দটি ব্যবহার করেছে । কিন্তু নাথুরাম গডসেজী সারাজীবনে তো মাত্র ১ জনকেই বধ করেছে; তাই তার ক্ষেত্রে ঘাতক শব্দটি ব্যাবহার করা, অত্যন্ত কুরুচিকর এবং শব্দের উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপব্যবহার । কিভাবে ? যুক্তি সহ ধীরে ধীরে আসছি ।
ভাষা বিজ্ঞান অনুযায়ী যখন কোন নিরীহ ব্যক্তিকে অকারণে হত্যা করা হয়, তখন তাকে খুন করা বলে, কিন্তু যখন কোন দুষ্কৃতীকে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে বাঁচানোর জন্য মেরে ফেলা হয়, তখন তাকে বধ করা বলা হয়, যেমন আমাদের আরাধ্যা মা দুর্গা, অসুরকে বধ করেছেন, তিনি খুন করেননি । একইভাবে গান্ধীর ক্ষেত্রেও আমরা বধ শব্দটিই ব্যবহার করি ।
দেশভাগের অপরিণামদর্শিতায় ভারত ভূমি দ্বিখন্ডিত হয়েছে; প্রায় ২০ লক্ষ হিন্দু ও শিখ নিহত হয়েছে; প্রায় লক্ষাধিক মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে; নিজ জন্মভূমি-ভিটেমাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছে কয়েক কোটি মানুষ; সেকারণেই এখনও উদ্বাস্তু হতে হচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে। গডসে বধ করেছে এত সব কারণের মহাখলনায়ক গান্ধীকে।
গান্ধীর কারণে হিন্দুদের এত পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে যে, পৃথিবীতে আর কেউ হিন্দুর এত ক্ষতি করে নি আর ভবিষ্যতে কারো পক্ষে এত ক্ষতি করা কখনোই সম্ভব হবে না এবং গান্ধী বেঁচে থাকলে হিন্দুদের আরও ক্ষতি হবে, এই বিবেচনা করেই নাথুরাম গডসে গান্ধীকে বধ করে । কিন্তু মাত্র একজন লোককে বধ করার কারণে তথাকথিত মুসলমান কিছু লেখক ও ব্লগার, নপুংসক সেক্যুলার ও আনন্দবাজারের মতো- পেট্রো ডলারে বিক্রি হওয়া, সেক্যুলার ও মুসলমানদের পাছার গু চাটা- পত্রিকাগুলোর কাছে নাথুরাম গডসে এক মহা ঘাতক; তাদের কথা বলার ভাব দেখলে মনে হয়, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত একটাই মাত্র খুন হয়েছে, সেটা গান্ধী, আর তাকে খুন করেছে গডসে, পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে আর কোনো খুন, কেউ কোনো দিন করেই নি।
নাথুরাম গডসে শুধুমাত্র চিৎপাবন সম্প্রদায়ের হিন্দু ব্রাহ্মণই ছিলেন না, তিনি একই সাথে গান্ধীজীর পরম একনিষ্ঠএকজন ভক্তও ছিলেন ।
নাথুরাম গডসের রাজনীতিতে পদার্পণ হয়েছিল কিন্তু গান্ধীজীর আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেই । তিরিশের দশকে, বিখ্যাত সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দিয়ে, নাথুরাম হাসিমুখে জেল খেটেছিল। অথচ পরে এই লোকটিই হিংসার পথ বেছে নেয়। হত্যা করে নিজেরই সাবেক রাজনৈতিক আদর্শকে । কিন্তু কেন ? সে কথায় আসব তবে অদ্ভুত ভাবে এই গান্ধী বধে, গডসের ভূমিকা নিয়ে, যতটা না হিন্দুদের আগ্রহ ! তার থেকে অনেক বেশি চুলকানি ও মাথাব্যথা দেখতে পাওয়া যায়, এদেশের মুসলিমদের একাংশের মধ্যে ! কিন্তু এর কারণ কী ? নাথুরাম তো আর জিন্নার মত কোন মুসলমান নেতাকে বধ করে নি । যখনই হিন্দুদের কোনো ব্যাপারে, মুসলমানের মধ্যে অতিআগ্রহ দেখবেন, তখনই বুঝে নেবেন, ঐ ব্যাপারে মুসলমানরা, হিন্দুদের বড়োসড়ো কোন বদনাম দেওয়ার, ষড়যন্ত্র করার পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
আসল কথা হল, এই ভারতীয় উপমহাদেশে এখনো যে সামান্য পরিমাণ মুসলিম বুদ্ধিজীবী আছেন, তারা বেশ ভালো করেই জানেন যে, গান্ধীর মতো একজন মুসলিমদের পা চাটা নেতা হিন্দুদের মাথার উপর না থাকলে, তারা কিছুতেই পাকিস্তান পেতো না বা পাকিস্তান আদায় করতে পারতো না । গান্ধী, প্রতিটা ক্ষেত্রে মুসলমানদের এতটাই সমর্থন করতো যে, একসময় লোকে আড়ালে আবডালে তাকে বলতো মোহাম্মদ গান্ধী । এই গান্ধীর কারণে, কত সহজে, জিন্নাহ যে পাকিস্তান আদায় করতে পেরেছে, তার কিছু উদাহরণ দিচ্ছি:
ভি.পি মেনন তাঁর ট্রান্সফার অব পাওয়ার গ্রন্থের ১৬২ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “১৯৪৪ সালে জিন্নার সাথে গান্ধীজির বেশ কয়েক বার সাক্ষাৎ হয়। তিনি সেখানে জিন্নাকে ’কায়েদ-এ-আজম’ বলে সম্বোধন করেন। কিন্তু গুজরাটি রীতি অনুযায়ী গান্ধীর, জিন্নাহকে, জিন্না ভাই বলে সম্বোধন করার কথা । জিন্না কিন্তু গান্ধীকে, মি. গান্ধী বলেই সম্বোধন করেছিলেন । ঐ সময় গান্ধী, জিন্নার কাছে করুণা ভিক্ষা করে বলেন, “আমি আপনার বা ইসলামের শত্রু নই। আমি আপনাদের দীন সেবক মাত্র। আমাকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না।”
এখানে নজর দেওয়ার বিষয় হলো, গান্ধী, জিন্নাকে কায়েদ-এ-আজম বলে সম্বোধন করা শুরু করেছে সেই ১৯৪৪ সাল থেকে। কায়েদ-এ-আজম শব্দের অর্থ “মহান নেতা”। জিন্না কী এমন কাজ করে গান্ধীর কাছে এত মহান হয়ে গেলো ? তার পর গান্ধী বলছে, “আমি আপনার বা ইসলামের শত্রু নই। আমি আপনাদের দীন সেবক মাত্র। আমাকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না।”
এখানে গান্ধী, ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রু নয়, সেটা ঠিক আছে; কিন্তু গান্ধী, জিন্নার কাছে কী চাইছে, যে জিন্না তাকে ফিরিয়ে দেবে ? আর জিন্নার কাছে বা কী ছিলো, গান্ধীকে দেওয়ার ? মনিব যদি ভৃত্যের কাছে এমন অসহায়ভাবে আত্মসমর্পন করে, তাহলে ভৃত্য তো মনিবের মাথায় উঠবেই এবং তার সম্পত্তির ভাগ চাইবেই । জিন্নাও তাই করেছে। পাকিস্তান চেয়ে, ধমক দিয়ে তা আদায় করে নিয়েছে । আর তাই স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও আমাদেরকে, সেই পাকিস্তান নামক ভাইরাসটির মরণ যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে ।
গান্ধীর এই অসহায় ও অপমানকর আত্মসমর্পনে উৎফুল্ল জিন্না, মুসলিম লীগের কার্যনিবাহী কমিটিকে জানিয়েছিলো, “অবশেষে ভালো এবং সহায়ক অধিকতর প্রগ্রেস হয়েছে। গান্ধী, যেকোনো মূল্যে, তার ব্যক্তিগত ক্ষমতায় ভারতকে ভাগ করার মূল নীতি গ্রহন করেছে।”- মদন গোপাল রচিত, “স্যার ছোটু রাম” গ্রন্থের ১৩৪ পৃষ্ঠায় জিন্নার এই উৎফুল্ল হওয়ার ঘটনাটির বর্ণনা আছে।
শুধু তাই নয়, লিওনার্ড মোজলি, তার “লাস্ট ডেজ অব ব্রিটিশ রাজ” গ্রন্থের ২৭৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “হাসতে হাসতে পাকিস্তান পেয়ে অবাক জিন্না তার এ.ডি.সি এর কাছে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমি কখনোই আমার জীবনে পাকিস্তান দেখে যেতে পারবো, তা ভাবতে পারি নি।”
বাস্তবে জিন্না যাকে অসম্ভব বলে ভেবেছিলো, সেই অসম্ভব সম্ভব হয়েছিলো শুধু গান্ধীর কারণে। একারণেই নাথুরাম গডসে তার জবানবন্দীতে বলেছিলো, “গান্ধী, ভারতের নয়, পাকিস্তানের জাতির জনক।”
গান্ধীর অসহায় আত্মসমর্পনের কারণে ভারত ভাগ হলো, ২০ লক্ষ হিন্দু ও শিখ মরলো, প্রায় ১ লক্ষ হিন্দু ও শিখ মেয়েকে মুসলমানরা ধর্ষণ করলো, পাকিস্তান থেকে উদ্বাস্তু হলো কয়েক কোটি মানুষ।
তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, যা হবার হয়েছে। কিন্ত এর পর গান্ধী কী করলো ?
১৯৪৮ সালে, পাকিস্তান যখন দাবী করে বসলো যে, ভারতের কাছে, যৌথ সম্পত্তির অংশীদার হিসেবে তাদের ৫৫ কোটি রূপী পাওনা আছে। ভারত সরকার সেই দাবী না মানলে, গান্ধী তখন বললো,
“পাকিস্তানকে ঐ টাকা দিতে হবে, না হলে আমি আমরণ অনশন শুরু করবো।”
বস্তুত গান্ধী নামক ভন্ডটি সারা জীবন যে ব্যর্থ কাজটি বারেবারে করেছেন, সেটি হল অনশন এবং এই অনশন কোনভাবেই, কখনোই ফলপ্রসূ হয়নি, তা ইতিহাস- পর্যালোচনা করলেই সহজেই পরিস্ফুট হয় ।
যেদিন পত্রিকায় গান্ধীর এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশিত হয়, সেদিনই গডসে গান্ধীকে বধ করার পাকা সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার বন্ধু নারায়ণ আপতেকে বলে,
“আর নয়, এবার গান্ধীকে মরতে হবে।”
সেই সময় আরও একটা কথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিলো যে, পাকিস্তানের এর পরের দাবী হলো, ভারতের মধ্যে দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য একটা রাস্তা । গান্ধী, এই রাস্তা দিতেও নাকি রাজী ছিলো ।
যা হবার হয়েছে, এবার অন্তত ভারত তথা হিন্দুদের ক্ষতি বন্ধ করতে হবে, এই বিবেচনা করেই, নাথুরাম গান্ধীকে বীরের মতোই বধ করে এবং গুলি করার পর সে এক ধাপও না সরে পুলিশ আসার অপেক্ষায় পিস্তলসহ হাত উঁচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।
যে গান্ধী মুসলমানদের জন্য এত কিছু করলো, তাদেরকে একটি দেশ দিয়ে দিলো, বেঁচে থাকলে নিশ্চয় আরও কিছু দিতো । সেই গান্ধী মরলো কিনা একজন প্রকৃত হিন্দুর গুলিতে! গান্ধীকে মারতে গিয়ে যে কি না নিজেকে বলি ই দিয়ে দিলো !
এরকম হিন্দু যাতে আর কেউ তৈরি না হয়, সেজন্যই মুসলমানদের প্রতিটা লেখায় উল্লেখ থাকে গডসের আগে “ঘাতক” শব্দটি। আসলে এর মাধ্যমে মুসলমানরা একটি সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক প্রতিরোধ করে চলেছে, যাতে আর কোনো প্রকৃত হিন্দু – সেক্যুলার নামধারী মুসলিম তোষকদেরকে খুন করে- মুসলমানদের বাড়া ভাতে যেন আর ছাই না দেয়।
যে বিষয়েই দেখবেন কিছু সংখ্যক মুসলমানদের আগ্রহ, নিশ্চয় জানবেন, সে বিষয়েই হিন্দুদের কোনো না কোনো ক্ষতি লুকায়িত আছেই আছে।
মুসলমানরা যে ঘাতক ঘাতক বলে চিৎকার করে গডসেকে ঘাতক প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, ওরা জানে ঘাতক কাকে বলে ? আর পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম কুখ্যাত ঘাতক কে ?
যদিও একজন বা দুজনকে খুন করার জন্য কাউকে ঘাতক হিসেবে অভিহিত করা যায় না; বড়জোর তাকে খুনী বলা যেতে পারে। কিন্তু যার হাতে বা যার নির্দেশে শত শত বা হাজার হাজার নিরীহ, সাধারণ ও নিরস্ত্র লোক নিহত হয়, তাকে বলে ঘাতক। যুদ্ধ ক্ষেত্রে সবাই থাকে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং একে অপরকে মারার জন্যই তারা যুদ্ধ করে, তাই যুদ্ধ ক্ষেত্রে যত লোকই মারা যাক না কেনো, সেই যুদ্ধের নির্দেশ দাতারা ঘাতক হিসেবে বিবেচিত হয় না। এই সূত্রে ঘাতক কারা, তা নিকটতম অতীত থেকে দূরতম অতীতের ইতিহাস ঘেঁটে তুলে ধরার চেষ্টা করছি :
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার জন্য ঘাতক হিসেবে পরিচিত, ইয়াহিয়া ও ভুট্টো। এরা কিন্তু দুজনই মুসলমান। প্রসঙ্গ যখন এলো ই, তখন বলে রাখি, ৭১ সালে বাংলাদেশে যে ৩০ লক্ষ মানুষকে খুন করা হয়েছে, এর মধ্যে ২৫ লক্ষ হিন্দু এবং যে ২ লক্ষ মা বোনের কথা বলা হয়, আসলে তা সাড়ে চার লক্ষ, এর মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ মেয়েই হিন্দু।
পাকিস্তানি সেনাদের উপর নির্দেশ ছিলো বেছে বেছে হিন্দুদেরকে খুন করার। দিন শেষে পাকিস্তানি সেনারা যখন ক্যাম্পে ফিরতো, তখন তারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করতো, আজ কয়টা হিন্দু মারলে ? এছাড়া ৭১ সালে রাস্তাঘাটের একটা পরিচিত দৃশ্য ছিলো, লুঙ্গি খুলে বা কাপড় খুলে লিঙ্গ পরীক্ষা করে কে হিন্দু তা নিশ্চিত করে তাকে খুন করা আর লিঙ্গে খতনা করা থাকলে তাকে ছেড়ে দেওয়া। এরকম একটি ছবি নেটে সার্চ করলে পাওয়া যায়। আর সব ছেড়ে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা কেনো জগন্নাথ হলে হামলা করেছিলো, সেই বিষয়টি একবার ভাবুন আর আমার কথার সত্যতা যাচাই করুন। জগন্নাথ হলে হামলা করার একটাই কারণ, ঐ হলের সব ছাত্র ছিলো হিন্দু।
এবার আরেকটু পেছনে যাই। ১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর থেকে শুরু করে মাসব্যাপী চলা নোয়াখালির হিন্দু নিধন যজ্ঞের মাস্টারমাইন্ড এবং নির্দেশক ছিলো মুসলিম লীগ নেতা গোলাম সারোয়ার । ওই ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার অসহায় নিরস্ত্র হিন্দু নিহত হয়, ১২ থেকে ৫২ এর প্রায় সকল হিন্দু মেয়ে ধর্ষিতা হয় এবং তখনকার বৃহত্তর নোয়াখালি অর্থাৎ বর্তমানের নোয়াখালি, চাঁদপুর, ফেনী, কুমিল্লা ও ত্রিপুরার কিছু অংশের প্রায় সকল হিন্দুকে জোর পূর্বক মুসলমান হতে বাধ্য করা হয় । সংজ্ঞানুসারে এই গোলাম সারোয়ারও একজন ঘাতক; সে কিন্তু হিন্দু নয়, মুসলিম।
উপরের এই ঘটনার মাত্র ৫৫ দিন আগে, ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট, কোলকাতায় ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে পালন করে মুসলমানরা প্রায় ২০ হাজার হিন্দুকে হত্যা করে। আর এর রেশ ধরে ঢাকা সহ পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকহাজার হিন্দুকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিলো জিন্না এবং এর বাস্তবায়নকারী ছিলো হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। এদেরকে কি মুসলমানদের ঘাতক মনে হয় না ? নাকি “যে মুসলমান, অপর মুসলমানের দোষ গোপন করবে, আখিরাতে আল্লাহও তার দোষ গোপন রাখবে”- এই হাদিসের কথা মনে করে সোহরাওয়ার্দীর কোনো দোষ ই মুসলমানরা মনে আনতে চায় না ? মানুষ হওয়ার জন্য একটা সুস্থ বিবেক আর সমান দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন দুটো চোখ দরকার। তথাকথিত কিছু সংখ্যক মুসলমানদের তো সেটা নেই। সকল ঘটনাকে ওরা সমান চোখে দেখবে কিভাবে ?
আরেক আগস্টের ঘটনা, ১৯২১ সালের। কেরালার এই মোপলা বিদ্রোহে প্রায় ২৩০০ হিন্দুকে মুসলমানরা খুন করে, আহত করে প্রায় ৩/৪ হাজার, ধর্মান্তর অগণিত। এটি ছিলো একটি সংঘবদ্ধ আক্রমন বা ইসলামিক জিহাদ । এই সূত্রে ঐ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকটি মুসলমান একেকজন ঘাতক।
ভারতে যত বিদেশি মুসলমান শাসক আক্রমন করেছে এবং যারা ভারত দখল করে শাসন করেছে, যেমন- মুহম্মদ বিন কাশিম, মুহম্মদ ঘোরী, কুতুবুদ্দিন, আলাউদ্দিন খিলজি, ফিরোজ শাহ, টিপু সুলতান, তৈমুর লং, সুলতান মাহমুদ, বখতিয়ার খিলজি, বাবর, আকবর, ঔরঙ্গজেব এবং অন্যান্যরা, প্রত্যেকেই এক একজন মহা ঘাতক। কারণ এরা প্রত্যেকেই লক্ষ লক্ষ অসহায়, নিরস্ত্র হিন্দুকে হত্যা করেছে, জেনোসাইড করেছে ।
এবারে নেহাতই বাধ্য হয়ে ও প্রসঙ্গক্রমে, প্রতিটি মুসলমানের আদর্শগত প্রাণ ভোমরা ইসলামের বিস্তার এবং তাদের নবীর জীবনী জীবনী নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে ।
মদীনায় হিজরতের মাত্র ১ বছরের মাথায়, মুহম্মদ, লোক পাঠিয়ে, তিন ইহুদী কবি- কাব, আকাফ এবং আসমাকে গুপ্তভাবে হত্যা করে। ৫ম হিজরিতে খন্দকের যুদ্ধের পরেই মুহম্মদ কুরাইজা গোত্রের ৮০০ জন ইহুদিকে আলী ও জোবায়েরের মাধ্যমে হত্যা করায়। এই হত্যাকাণ্ড চলে ভোর থেকে শুরু হয়ে পরের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত। মুহম্মদ এক জায়গায় বসে বসে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে এবং হত্যাকাণ্ড শেষ হলে কুরাইজা গোত্রের সুন্দরী মেয়ে রিহানার সাথে রাত্রি যাপন করে মুহম্মদ তার ক্লান্তি দূর করে।
এরপর উকল গোত্রের ৮ জন ইহুদিকে মুহম্মদ নিজের হাতে – প্রথমে গরম লোহার রড দিয়ে চোখ গেলে দিয়ে, পরে একে একে তাদের হাত পা কেটে মরুভূমির তপ্ত বালির মধ্যে ফেলে রেখে এবং কাউকে জল পর্যন্ত দিতে নিষেধ ক’রে – নৃশংসভাবে হত্যা করে।
মুহম্মদ তার মদীনার জীবনে ১০ বছরে ৮২টি যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, এতে কত লোক তার কারণে খুন হয়েছে ? এমনকি মক্কা দখলের পর, যে মক্কা বিজয়কে মুসলমানরা বর্ণনা করে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয়, সেই বিনা রক্তপাতের মধ্যেও ২৮ জন যুদ্ধে নিহত হয় এবং মুহম্মদ ১০/১২ জনকে খুন করায় । এই ক্ষেত্রে তো মুহম্মদকে তর্কের খাতিরে কেউ ঘাতক, খুনি বললে মুসলমানদের কি আতে ঘা লাগবে না ? না কি ৭২ হুর সম্বলিত বেহেশত নামক পতিতালয় প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়েছে বলে, মুসলমানদের চোখে মুহম্মদের হাজার খুন মাফ ?
ইসলামের ইতিহাসে চার খলিফার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘাতক হলো আলী। সে সমগ্র জীবনে মোট ৯৮টা যুদ্ধ করে এবং প্রতিটা যুদ্ধেই সে ছিলো প্রধান ঘাতক। কুরাইজা গোত্রের যে ৮০০ জনকে মুহম্মদ খুন করায়, তার মধ্যে আলী হত্যা করে কমপক্ষে ৪০০ জনকে এক দিনে। এছাড়াও ৯৮ টা যুদ্ধে সে কতজন অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে খুন করেছে, সেই বিষয়টা একবার চিন্তা করুন। এখানে আরেকটা বিষয় মাথায় রাখবেন, ইসলামের যুদ্ধ মানেই মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের মতো ঘোষণা দিয়ে ১ মাস ধরে প্রস্তুতি নেওয়ার পর নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যায় ও আদর্শ সমন্বিত যুদ্ধ নয়, ইসলামের যুদ্ধ মানেই ভোর বেলা কোনো অমুসলিম জনবসতির উপর অতর্কিতে হামলা, খুন, লুঠপাট ও ধর্ষণ। ইতিহাস তার সাক্ষ্য বহন করে ।
মুসলমানদের হিসাব মতেই, মুহম্মদের শেষ হজ অর্থাৎ বিদায় হজে মোট জনসমাগম হয়েছিলো ২ লক্ষ। এর মানে হলো, তখন সমগ্র আরবের লোকসংখ্যা ছিলো ২ লক্ষ। কেননা, প্রাণের ভয়ে মুহম্মদ অধিকৃত এলাকার সকল লোক ওই বিদায়ের হজের ভাষণে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিলো। তো যেই সময় সমগ্র আরবে মাত্র ২ লক্ষ মানুষ, সেই সময় মুহম্মদের কারণে মারা গেছে কম করে হলেও ১ হাজার মানুষ। এছাড়াও ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকে মুসলমানরা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ইহুদি সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটি মানুষকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি ই হিন্দু। পৃথিবীর ইতিহাসে, ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের আগে, কোনো এক ব্যক্তির নির্দেশ ও পরিচালনায় এতগুলো নিরস্ত্র ও অসহায় লোক কখনো মারা যায় নি। এই হিসেবে, অন্য কেউ নয়, একমাত্র মুহম্মদ এবং মুহম্মদই পৃথিবীর প্রথম গণহত্যাকারী ঘাতক বলে, যদি আজ কেউ সোচ্চার হয়, তবে সেক্ষেত্রে মুসলমানদের ক্ষোভে ফেটে পড়ার কোন ন্যায় সঙ্গত এক্তিয়ার আছে কি ?
প্রকৃতপক্ষে, যুক্তিসঙ্গত কথার মাধ্যমে যদি কেউ এই ধরনের প্রতিস্পর্ধা দেখায় ! তবে সমবেত ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে, সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে, কি অশিক্ষিত জাহিল মুসলিম, কি বুদ্ধিজীবী তথাকথিত শিক্ষিত মুসলিম, সবাই গণআন্দোলন শুরু করেন । এটা করে হিন্দুদেরকে তারা মানসিকভাবে দুর্বল ক’রে হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিপীড়ন চালিয়ে যেতে চায়; যাতে আর কোনো নাথুরাম গডসের জন্ম না হয় এবং মুসলমানদের আগ্রাসনের পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু নাথুরাম যে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছে, সেই পথের পথিক হিসেবে আরো নাথুরামের জন্ম হবে এবং তারা হিন্দুদের উপর মুসলিম আগ্রাসন শুধু রুখবেই না, হিন্দুদের উপর হওয়া হাজার বছরের অত্যাচারের বদলাও নেবে, এটা নিশ্চিত।
এবার নজর দেওয়া যাক, বাজারি বেশ্যার দিকে। এই পত্রিকা বা এই ধরণের পত্রিকাগুলো কেনো হিন্দুদের সাথে এমন করে বা করছে ? হিন্দু স্বার্থের ব্যাপারে এরা কেনো এত উদাসীন ? আর মুসলিম স্বার্থ রক্ষা করতেই বা এরা এত বেপরোয়া ও উদগ্রীব কেনো ? কেনো মুসলমানদের বক্তব্য এবং এইসব বাজারি পত্রিকার বক্তব্য প্রায় হুবহু এক ? কেনো মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকেই এরা বারবার হাইলাইটস করতে থাকে ? কেন এদের সাংবাদিকতা ও বিষয় উপস্থাপনা, শুধুমাত্র প্রো-মুসলিম ও হিন্দু বিরোধী হিসেবে সিলেক্টিভ হয় ?
দুটো তথ্য জানলে এই পুরো বিষয়টা আপনাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময়, আনন্দবাজার পত্রিকার এক সম্পাদক পাকিস্তানে গিয়ে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সাথে গলফ খেলেছিলো। এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, এই পত্রিকাগুলোর সুতো বাঁধা কোথায় ?
কিন্তু এর শেকড় আরো অনেক গভীরে।
সৌদী আরবের রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমেদ টোটেনজী ১৭.৯.১৯৮২ তারিখে উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরে, জামাত-ই-ইসলাম কর্তৃক আয়োজিত এক জনসভায় বলেছিলো, “ভারতবর্ষের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো নীতিজ্ঞান শুন্য। এই দলগুলির নেতারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য পৃথিবীর এমন কোনো হীন কাজ নেই যা তারা করতে না পারে। ভারতীয় নেতা, সংবাদ মাধ্যম এবং মেকী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোকে হিন্দু বিরোধিতা করার জন্য ২৫০ কোটি ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মধ্যে এর আশাতীত ফল পাওয়া গেছে। এরা এখন থেকে নিরন্তর হিন্দু সংগঠগুলির সাথে লড়াই চালিয়ে যাবে। যখন ভারতবর্ষে মুসলমানরা ২০ থেকে ২৫ কোটিতে পৌঁছবে, তখন আমরা অতি সহজেই হিন্দু সংগঠনগুলিকে শেষ করে দিয়ে ভারত দখল করতে পারবো।”
মুসলমানদের সাথে তাল মিলিয়ে কেনো মিডিয়াগুলো নাথুরামকে ঘাতক হিসেবে উল্লেখ করে, এবার নিশ্চয় সেটা বুঝতে পেরেছেন ।
এখন টোটেনজীর উপরের ওই বক্তব্যের সাথে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির হুমকির এই বিষয়টি মিলিয়ে দেখুন, “ভারতের সরকার ১৫ মিনিটের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে তুলে নিলে আমরা মুসলমানরা সব হিন্দুকে শেষ করে দিতে পারবো।”
ভারতে বর্তমানে মুসলমান সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি। সংবাদ মাধ্যম, সেক্যুলার রাজনৈতিক দল এবং ভারতীয় মুসলমানদের নিয়ে মুসলিম উম্মাহ কিন্তু রেডি হয়ে আছে সব হিন্দুকে খতম করে দিয়ে ভারতে আবার ইসলামিক পতাকা উড়ানোর জন্য।
আমরা কি রেডি, নিজে বাঁচার জন্য ও ভারতকে রক্ষা করার জন্য ?
একটি সুস্থ ও ভালো বুদ্ধির মাথা যেমন সমাজ ও স্বজাতিকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়, ঠিক তেমনি একটি পচা মাথাও সমাজ স্বজাতির ধ্বংস ডেকে আনে, যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ নেহেরু ও গান্ধী। কিন্তু পচা মাথার বৈশিষ্ট্য হলো, তা কখনোই সুস্থ হয় না এবং অন্য সুস্থ মাথাতেও সংক্রমন ঘটায়। এজন্য সেক্যুলার নামের এইসব পচা মাথার কবল থেকে হিন্দু জাতিকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো, মহাভারতের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ অনুসারে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন কে বাস্তবায়িত করা ।
কাউকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে দেওয়ার পরেও, তার সেই স্বাধীন চিন্তার ফল, যখন তার নিজ সমাজ-ধর্ম ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, সর্বোপরি জাতিকে হীনদুর্বল ও আত্মরক্ষায় অসমর্থ করে দেয়, তখন তার চিন্তা করার ক্ষমতাকেই কেড়ে নেওয়া উচিত ।
তাই যত দ্রুত সম্ভব হিন্দুদের উচিত, সেক্যুলারদের এই চিন্তা করার ও তা প্রকাশ করার ক্ষমতাকে কেড়ে নেওয়া। না হলে মুসলিম উম্মাহর ষড়যন্ত্রে পড়ে, এই সেক্যুলারদের মাধ্যমেই, হিন্দু জাতির সকলের, ধ্বংস হওয়া অনিবার্য।
নাথুরাম গডসে, ভন্ড,কুচক্রী নেতা গান্ধীকে বধ করেছিলেন । তার পেছনে অকাট্য চুক্তিবদ্ধ কতগুলো বিশেষ কারণ ছিল । কিন্তু সেগুলো অধিকাংশ হিন্দু জাতীয়তাবাদী মানুষেরা, না জানার ফলেই, আজকে ভারতের মেকী ধর্মনিরপেক্ষ, দীর্ঘ মেয়াদী ষড়যন্ত্রকারী মিডিয়া, মুসলমান ব্লগার ও কিছু পেট্রো ডলার পুষ্ট দালাল, নাথুরাম গডসে, সাভারকার, ভাই পরমানন্দ, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ, এদের আদর্শকে বিকৃত করার দীর্ঘমেয়াদি কুপ্রচার করে আসছে । তাই আমরা জেনে নেব খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে, নাথুরাম গডসে গান্ধীকে কেন বধ করেছিলেন ?
প্রথমেই আমরা গান্ধী হত্যার বিচারপতি জিডি খোসলার ‘মার্ডার অফ মহাত্মা’-বই থেকে কিছু প্রকৃত ইতিহাস জানব । ১৯৬৫ সালে এই বই প্রকাশ হয়েছিল জায়কো পাবলিশিং হাউস থেকে । বইয়ের অসংখ্য তথ্যের মাঝে যে ১০টি মারাত্মক জবানবন্দি গডসে দিয়েছিলেন, তা ছিল,
১) আমি বহু মহাপুরুষের জীবনী পড়েছি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি কাউকে নিয়ে পড়াশোনা করে থাকি তিনি গান্ধীজী। আমি ওনার ভাব ধারায় প্রভাবিত হয়েছিলাম।
এরপরের যে সব কথা বলেছিলেন নাথুরাম তা ভয়ঙ্কর। তিনি বলেছিলেন,
২) আমি জানি আমি কি করেছি। আমি গান্ধীজীর মত নেতাকে বধ করেছি । আমি আমার জীবন নষ্ট করেছি। আগামীদিনে ভারতবাসীর কাছে আমি তথাকথিত জাতীর জনকের হত্যাকারী রূপে চিহ্নিত হব । কিন্তু এতে আমার কোনও দুঃখ নেই।
তাঁর যুক্তি অনুযায়ী
৩) গান্ধী অহিংসার কথা অতিরিক্ত ভাবতে গিয়ে হিংসা এবং অহিংসার মধ্যে পার্থক্য ভুলে গিয়েছিলেন।
৪) দেশের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা বজার রাখার জন্য হিংসার আশ্রয় নিতে হলে হবে। এতে ভুলটা কোথায়? মহারানা প্রতাপ, ছত্রপতি শিবাজী, গুরুগোবিন্দ সিং এঁরাও তো হিংসার পথেই চলেছিলেন নিজের স্বজাতিকে রক্ষার্থে ।
৫) ১৯৩৯ সালে হরিপুরা অধিবেশনে নেতাজী সভাপতি নির্বাচিত হন কিন্তু গান্ধী পরাজিত পট্টভি সীতারামাইয়ার পক্ষ অবলম্বন করে নেতাজির বিরোধিতা করেছিলেন। নেতাজিকে দল ত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলেন। এটা কি কোন হিংসার পথ নয়?
৬) গান্ধীজি সেই মানুষ যিনি সশস্ত্র দেশীয় বিপ্লবীদের বিপথে যাওয়া তরুন বলতেন। কিন্তু হাজার হাজার ভারতবাসীর প্রান নিয়ে নেওয়া ইংরেজদের বিশ্বযুদ্ধের মত সশস্ত্র ও হিংস্রতায় পরিপূর্ণ প্রানঘাতী যুদ্ধে ভারতীয় সৈন্য দিয়ে সাহায্য করার সময় সেখানে হিংসাকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
৭) ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং শুকদেবের ফাঁসি রদ করার জন্য ভারতবাসী গান্ধীজীর শরনাপন্ন হয়েছিল। এমন আবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। ভগৎ সিংদের বিপথগামী তরুন আখ্যা দিয়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশকে সমর্থন করেছিলেন। এটা কি হিংসা নয়?
৮) জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের পরে ক্ষিপ্ত ভারতীয়রা চেয়েছিল ডায়ারের বিচার হোক কিন্তু গান্ধী সেই সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করেন।
উলটে উধম সিং ডায়ারকে হত্যা করলে গান্ধী প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করে উধম সিংকে বিপথগামী তরুন আখ্যা দিয়েছিলেন। এ কেমন বিচার ?
৯) গান্ধী ভারতের জাতির জনক হতেই পারেন না কারন গান্ধী অখণ্ড ভারত গড়েননি। ওনাকে পাকিস্তানের জনক বলাই ভালো কারন গান্ধীর জন্যই ভারতের একটা অংশ কেটে নিয়ে অন্য একটা দেশ পাকিস্তান বানিয়ে দেওয়া হল।
১০) আমার কাছে সবার আগে দেশ, তার আগে কেউ না। গান্ধীর দ্বারা দেশের কোনও উপকার আগেও হয়নি পরেও হবে না। আমার মনে হয় না গান্ধীকে মেরে আমি কোনও অপরাধ করেছি।
বিচারপতি তাঁর বইতে লিখেছেন, নাথুরাম এবং নারায়ন আপ্তেকে যখন ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে এসে গলায় দড়ি পরিয়ে দেওয়া হয় তখন নাথুরাম নাগাড়ে বলতে থাকেন ‘অখন্ড ভারত’ কথাটি। আপ্তে তাঁর কথায় মিলিয়ে বলছিলেন , ‘অমর রহে’। কাঠ থেকে ঝুলে যাওয়ার পরেই তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় আপ্তের। কিন্তু নাথুরাম ওই অবস্থায় প্রায় ১৫ মিনিট ঝুলেছিলেন। তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস চলছিল। যা দেখে যথেষ্ট অবাক হয়ে গিয়েছিলেন জিডি খোসলা।
নাথুরামের শেষ ইচ্ছা ছিল অখণ্ড হিন্দু ভারত প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগপর্যন্ত যেন তার চিতাভস্ম গঙ্গায় বিসর্জন না দেওয়া হয়। অমর হুতাত্মা পণ্ডিত নাথুরাম গডসের উত্তরসূরী ও তার ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত প্রতিটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী মানুষ, আজও সেই চিতাভস্ম সংরক্ষিত করে রেখেছে । আমাদের বুকে সেই চীরস্বপ্ন সদাজাগ্রত যে একদিন অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র হবেই ।
।। জয়তু অখন্ড হিন্দুরাষ্ট্রম্ ।।
।।বন্দেমাতারাম ।।
।।জয় হিন্দ।।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
🙏মহন্ত সুন্দর গিরী মহারাজ🙏