গুরু-শিষ্য আলাপচারিতা: ইসলামের একটিভ স্রষ্টা আল্লাহর কি অস্তিত্ব আছে?

Uncategorized

গুরু-শিষ্য আলাপচারিতা: ইসলামের একটিভ স্রষ্টা আল্লাহর কি অস্তিত্ব আছে?
————————-
গুরু:
আবার হঠাৎ করে নাস্তিকতার চেতনা বেড়ে গেছে নাকি? আপনি তো Surrender করে আগেই পালিয়েছেন। আবার কার থেকে জ্ঞান নিয়ে এসেছেন?
.
শিষ্য:
আপনে তো আমারে বুঝাইতে খুব উদগ্রিব হয়ে গেছেন। তাই আপনের কাছ থেকে বুঝতে চাইতেছি।
.
আপনেরে গুরু মানলাম। দেখি আপনের কাছে কী কী শেখা যায়। তো শুরু করে দিন কী কী শেখাবেন বা বুঝাবেন। আমি বুঝে নেয়ার জন্য তৈরী সর্বদা।
.
দিন প্রথম সবক —
.
গুরু:
আপনি যদি আমাকে গুরু মানেন এবং আমার কাছ থেকে বুঝতে চান তাহলে তো আমার কথা মানতে আপনি বাধ্য, বলেন রাজি আছেন কিনা?
.
শিষ্য:
আমার প্রশ্নের ক্ষেত্রে কোনো রেস্ট্রিকশন চলবে না। প্রশ্ন করতে বারণ করলে বা প্রশ্নের উত্তর বোধগম্য না হলে গুরু-সাগরেদ সম্পর্ক বিচ্ছেদ ঘটবে। আদারওয়াইজ সব শীরোধার্য। যদি বলেন তো গুরুর জন্য জান দিয়া দিমু। এবার বুঝানো শুরু করেন।
.
আমার প্রথম প্রশ্ন: পানি কেনো তরল আর হাইড্রোজেন সালফাইড কেনো গ্যাস?
.
উত্তর না দিতে পারলে সম্পর্কচ্ছেদ। ভেবে নেবো আপনে গুরু হওয়ার যোগ্য না।
.
গুরু:
পানি তরল, এর আনবিক ঘটনের কারণে। এর অণুগুলো কঠিন পদার্থের মত একসাথে লেপ্টেও থাকেনা আবার বায়বীয় পদার্থের মত খুব দূরেও থাকেনা। তাই লঘু আন্তঃআনবিক আকর্ষণের দরুন পানি তরল পদার্থ হিসেবে বিদ্যমান। হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস হওয়ার কারণ : হাইড্রোজেন সালফাইড একটি রাসায়নিক যৌগ।এটি বর্ণহীন; এটি বাতাসের থেকে ভারী, বিষাক্ত, ক্ষয়কারক, দাহ্য এবং বিস্ফোরক পদার্থ। জলাশয় এবং স্যাঁতসেঁতে স্থানে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে জৈব পদার্থের ব্যাকটেরিয় ভাঙনে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। শেষে লিখেছেন উত্তর দিতে না পারলে সম্পর্কচ্ছেদ। আর উত্তর দিতে পারলে কি সেটা তো বলেন নি? মানে আপনার অন্তরে দূর্বলতা আছে আর কি। আপনার সাথে তো আমার কোনো সম্পর্কই ছিল না, আপনি কিসের সম্পর্কচ্ছেদ করবেন? এটা একটা হুমকি হল নাকি? এটা তো শুধু একটা নিম্নমানের কথা ছাড়া আর কিছু নয়।
.
এবার আপনি উত্তর দেন দেখি -(1) পৃথিবীর যেহুতু শুরু আছে, পৃথিবীর শেষটা কি রকম হবে? বা শেষ হবে কিনা? (2) পৃথিবীর মতো এতো প্রকৃতির নিয়ম অন্য গ্রহে নেই কেন?
.
শিষ্য:
ধর্ম লেভেলে আটাকায়া থাকার একটা বড় কারণ হইলো বস্তু গঠনের রহস্য না জানা। এ না জনার কারণে এরা অনেক কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসে আটকায়া থাকে। আবার যারা বস্তু বা প্রকৃতির রহস্য জানেও তারা তারা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত করতে পারে না। ফলে একটা জটিলতরো স্তরে গিয়ে হতবাক হয়ে একজন পরিকল্পনা ও একটিভ সৃষ্টিকারী খোঁজে।
.
আপনাকে আমি রসায়নের এ সহজ প্রশ্নটি করার কারণ হলো, ছোট ছোট কণা পরমাণু ও তার সাব এটমিক পার্টকলগুলোর একটিভিটি কিভাবে জটিল থেকে জটিলতর কাঠামো গঠন করে, ইভেন আমাদের মানুষের মত গঠন অর্জনও একান্তই প্রাকৃতিক এ রুলের মাধ্যমে হতে পারে তা অনুধাবন করতে পারবেন কিনা তা বুঝতে পারা।
.
পানি H ও O দ্বারা তৈরী। হাইড্রেজোন সালফাইড H ও S (সালফার) দিয়া তৈরী। অক্সিজেন পরমাণু থেকে সালফার পরমাণু ভারী। অক্সিজেন ও সালফার পেরিওডিক টেবিলৈ একই গ্রুপে আছে। এদের রাসায়নিক বৈশিষ্টে মিল আছে। সাধারণত পেরিওডিক টেবিলে উপর থেকে নীচের দিকে গেলে যৌগের কাঠিন্য বাড়ে। কিন্তু এ দুই যৌগের ক্ষেত্রে আমরা উল্টা ব্যাপার দেখছি।
.
ভারী হওয়া সত্বেও হাইড্রোজেন সালফাইড অনু একটা থেকে আরেকটা বিচ্ছিন্ন থেকে গ্যাস হিসাবে থাকে আর পানির হালকা হলেও একটা অনু থেকে আরেকটা অনু বিচ্ছিন্ন হতে পারে না, ফলে পানি হয় তরল। আমাদের উপকারের জন্য খোদা স্পেশাল করে পানি তৈরী করেন নি। পানির এ স্পেশাল ক্ষমতার কারণ হলো অক্সিজেনের ইলক্ট্রণ বিন্যাস।
.
অক্সিজেনের দ্বিতীয় শক্তিস্তরে ৬ টি ইলেক্ট্রন আছে যাকে ভ্যালেন্সি ইলেকট্রন বলে। এগুলো যৌগ গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আর সালফারের ৩য় শক্তিস্তরে ৬টি ভ্যালেন্সি ইলেক্ট্রণ থাকে। অক্সিজেনে নেগেটিভ ইলেকট্রন তার পজেটিভ নিউক্লিয়াসের নকটতরো থাকে সালফারের  চেয়ে। ফলে নিউক্লিয়াস-ইলেকট্রন আকর্ষণ বেশী। সেখানে আরো ২টা ইলেকট্রনের স্থান খালি আছে। আর সালফারের ভ্যালেন্সি ইলেকট্রন তার নিউক্লিয়াস থেকে একটু দূরে ফলে নিউক্লিয়াস-ইলেকট্রন আকর্ষণ কম। সেখানেও আরো দুটি ইলেকট্রনের স্থান খালি আছে। দুজনেরই দুটি ইলেকট্রন কম থাকার ফলে তারা একই অন্য মৌলের সাথে যৌগ গঠন করে।
.
অক্সিজেনের শেষ শক্তিস্তর কাছে বলে সেখানে ইলেকট্রনের আকর্ষণ বেশী সালফারের চেয়ে। ফলে অক্সিজেন বন্ড ইলেকট্রন নিজের নিউক্লিয়াসের দিকে টেনে নিয়ে আসে। ফলে অক্সিজেনের প্রান্তে নেগেটিভ পোল তৈরী হয় আর তার সাথের অন্য মৌল (হাইড্রোজেন) এর প্রান্তে পজেটিভ পোল তৈরী হয়। সালফারে এ ঘটনাটি ঘটে না। ফলে হাইড্রোজেন সালফারে যথেষ্ঠ শক্তিশালি পোলারিটি তৈরী হতে পারে না। পানির অনুর এ পোলারিটি পানির প্রতিটি অনুকে চুম্বকের দ্বিমেরুক বানিয়ে দিয়েছে। নেগেটিভ পজেটিভ পোল  একে অপরকে আকর্ষণ করে ধরে রাখে। এ বলের মান অণুগুলোর বিচ্ছিন্ন থাকার মত কমও না আবার রিজিড বডি তৈরী করার মত বেশীও না। একটা প্রান্তে হাইড্রোজেন থাকে বলে আমরা এ আকর্ষণকে “হাইড্রোজেন বন্ড” বলি। হাইড্রোজেন সালফাইডে এ হাইড্রোজেন বন্ড হয় না। ফলে পানির অণু হালকা হলেও এটা তরল হয় আর হাইড্রোজেন সালফার গ্যাস হয়।
.
আমি এক কথায় “হাইড্রোজেন বন্ড এর কারণ” বলে শেষ করে দিতে পারতাম। এতো কথা বলার কারণ হলো এটা বোঝানো যে আমাদের চার পাশে যা কিছু আছে তা এ ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াস দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়। পরমানুর এ অন্তর্নিহিত পার্টিকল ইলেকট্রন ও স্থির প্রোটনের কারণেই আমাদের মত জটিল কাঠামো গঠনও সম্ভব। এটা বিবর্তনকেও সম্ভব করেছে। এ ইলেকট্রণ ও নিউক্লিয়াস সৃষ্টির পর আর কোনো একটিভ স্রষ্টার কোনো দরকার নেই। এ ইলেকট্রণ আর নিউক্লিয়াসের ক্ষমতা ইউনিভার্সে একজন একটিভ স্রষ্টাকে বাতিল করে দেয়। যদি কোনো স্রষ্টা থেকে থাকেও ইউনিভার্সের কার্যক্রম তার নিষ্ক্রিয় চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কোনো কাজ নেই।
.
তার মানে আমি দেখিয়ে দিলাম যে আপনের ইসলামের একটিভ আল্লাহ নামে আসলে কোনো স্রষ্টা নেই। ইউনিভার্স শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইউনিভার্সে একজন স্রষ্টার অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন মিটে গেছে।
.
“পৃথিবীর মতো এতো প্রকৃতির নিয়ম অন্য গ্রহে নেই কেন?”
এমন অদ্ভুত কথা আপনাকে কে বলেছে? ইউনিভার্সের সকল স্থানে প্রকৃতির সূত্র একই।
একটা পাত্রে হাইড্রোজেন অক্সিজেনকে মিশতে দিবেন। আরেকটা পাত্র খালি থাকবে। প্রথম পাত্রে ধামাকা হবে। দ্বিতীয় পাত্রে কিছুই হবে না। এটা দেখে বলেন প্রথমপাত্রে এতো নিয়ম কেনো, দ্বিতীয় পাত্রে এসব নিয়ম নেই কেনো?
এ কেমন শিশুশুলভ প্রশ্ন। আপনের ছাত্রের জন্য এরূপ প্রশ্ন অপমানজনক।
.
“পৃথিবীর যেহুতু শুরু আছে, পৃথিবীর শেষটা কি রকম হবে? বা শেষ হবে কিনা?”
গুরু এ প্রশ্নের উত্তর আমি এখনো শিখি নাই, শেখায়া দেন। আগামী পরশু কেয়ামতের মাধ্যমে ইউনিভার্স ধ্বংশ হবে — এমন ফালতু ব্যাখ্যায় আমি সন্তুষ্ট হইনা, গুরু।
গুরু:
দেখেন, দুইটা পাত্রের উদাহরণ দিতে গিয়ে আপনি কিভাবে ধরা খেলেন- প্রথম পাত্রে আমি কিছু করেছি বলেই হয়েছে আর দ্বিতীয় পাত্রে আমি কিছু করিনি বলেই হয়নি। সুতরাং,পৃথিবী এবং অন্য গ্রহের ক্ষেত্রে পাত্র দুইটি উদাহরণের জন্য যথেষ্ট এবং কাহারও নিয়ন্ত্রণ করা প্রমাণিত। আপনার যুক্তিতে আপনি নিজেই ধরা খেলেন। এমন কোনো নাস্তিকের জন্ম হয়নি এই দুনিয়াতে আমার প্রশ্ন দুইটির সঠিক উত্তর দিতে পারবে। আর আমার প্রশ্ন আপনার কাছে শিশুসুলভ হতে পারে। আর শিশুরা এই ধরনের প্রশ্ন করতে পারে এটা চিন্তা করাও নিম্নশ্রেণীর মূর্খতা।
.
শিষ্য:
এ দু পাত্রের এনালজি কি করে স্রষ্টার প্রয়োজনীয়তাকে প্রমাণ করে? এ জন্যই বলি আপনে একটা একটা লেভেলে পইড়া আছেন। মস্তিষ্কের আরো বিকাশ দরকার আপনের। সারাদিন স্রষ্টার ধারণা মাথায় গিজগিজ করে। উঠতে বসতে আলহামদুলিল্লাহ সুবহানাল্লাহ বলে বেহেস্তে যাওয়ার ধান্ধা থাকলে আসল কথা মাথায় ঠুকবে কেমনে?
.
আপনে জিজ্ঞেস করেছেন, প্রকৃতিক সূত্র পৃথিবীতে এতো বেশী কেন? আমি তারই উত্তর দিলাম। ইউনিভার্সের সব স্থানেই প্রাকৃতিক সূত্র একই রকম। কিন্তু এর জন্য কার্যকারণ থাকতে হবে অবজার্ভ করার জন্য। প্রথপাত্রে অবজার্ভ করার জন্য কার্যকারণ ছিলো আর দ্বিতীয় পাত্রেও তার প্রকৃতিক সূত্র আছে কিন্তু অবজার্ভ করার মত কার্যকারণ নেই।
.
প্রশ্ন হলো এখানে আমরা পরীক্ষা করার জন্য এ পরীক্ষা সিস্টেমটা তৈরী করলাম। এর মানে এ নয় কখনো যে প্রকৃতির ঘটনাবলির জন্য একজনের থাক থাকতে হবে যিনি ইনটেনশনালি পৃথিবীতে একরকম জিনিস রাখছেন আর মঙ্গলগ্রহে আরেক রকম জিনিস রাখছেন। পৃথিবীতে একরকম নিয়ম রাখছেন আর মঙ্গলগ্রহে সে নিয়ম নাই।
.
মৌলিক বলসমূহের নামগুলো তাদের সম্পর্কে ডিটেইলস জানেন? সেই মৌলিক বলগুলোর নাম আপনের জন্য রেখে দিলাম। জেনে নিবেন। মৌলিক বল কয়টা তাও জেনে নিবেন। সেগুলো পৃথক পৃথক না একটারই বিভিন্ন রূপ তাও জেনে নিবেন। আমি ভাবছিলাম আপনাকে গুরু বানাবো এখন দেখি আমি আপনের গুরু হয়ে যাইতেছি।
.
এ মৌলিক বলগুলো ইউনিভার্সের বস্তুগুলোকে কন্ট্রোল করছে। এ বলগুলো ইউনিভার্সের বিন্যাস ঘটিয়েছে। গ্রহ-নক্ষত্রসহ ছোট থেকে বড় প্রতিটি বস্তুকণা কোথায় কে স্থিত হবে তা নির্ধারিত হয়েছে এ বলগুলোর দ্বারা। বলের কাজ হলো ভারসাম্য তৈরী করা বা গতির পরিবর্তন করা। কাউকে নিজ হস্তে নির্দেশ দিয়ে দিয়ে ইউনিভার্সের বস্তুগুলোকে সেট করতে হয় নি। ইউনিভার্সের কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম ইনফ্লাটেশনের এক পর্যায়ে একের পর এক বলগুলোর উদ্ভব হয়। তার বহু পরে মৌলিক ১৭টি কণা ও তাদের প্রতিকণা তৈরী হয় পর্যায়ক্রমে। এ কণাগুলো বস্তু তৈরী করে আর বলগুলো এ কণাগুলোর বিন্যাস ঘটায়, জড়ো করে।
.
যদি একজন স্রষ্টা থাকে তবে তার কাজ হলো কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম ইনফ্লাটেশনকে ট্রিগার করা। তারপর থেকে আর স্রষ্টার কোনো কাজ ইউনিভার্সে নাই। সে শুধু ফেল ফেল করে বোকার মত বিস্ময়ে চোখ বড় বড়  করে ইউনিভার্সের ঘটনাগুলো দেখতেছে।
.
সুতরাং আপনের ইসলামের একটিভ স্রষ্টা (যার হুকুম ছাড়া একটা পাতাও নড়ে না) একটা ফেইক ও মুহম্মদের ইমাজিনারি স্রষ্টা।
.
পৃথিবীর ধ্বংশলীলা দুরকমভাবে হতে পারে। ১। কোনো মহাজাগতিক যথেষ্ঠ বড় বস্তুর সাথে ধাক্কা লেগে। যেমন পৃথিবীর আদি অবস্থায় একবার হয়েছিলো এতে চাঁদ সৃষ্টি হয়েছিল। তেমনি যদি যথেষ্ঠ বড় কোনো বস্তুপিন্ডের সাথে ধাক্কা লাগে, পৃথিবী খন্ড বিখন্ড হয়ে যেতে পারে এবং খন্ডগুলোর কিছু আবার একত্রিত হয়ে এর চেয়ে ছোট আরেকটা গ্রহ হতে পারে, একাধিক চাঁদ তৈরী হতে পারে। এ ইম্পেক্টের শক্তির ফলে এ খন্ডগুলো আবার তরলও হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষুদ্র জীব ছাড়া বাঁকিরা ধ্বংশ হয়ে যাবে। পৃথিবী আর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
.
২। সূর্যের শক্তি শেষ হয়ে গেলে এমনিতেই পৃথীবীর সব জীব শক্তির অভাবে মরে যাবে। গ্রহ আকারে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ থেকে যাবে কিন্তু সৌরজগতের গ্রহগুলোর অর্বিটালে কিছু পরিবর্তন হবে। সূর্য এখনকার মত শক্তি বিকিরণ করবে না, তার ভরও অনেক কমে যাবে।
.
কয়দিন আগে নাসার একটি নিউজ পড়লাম। সেখানে জানতে পারলাম, আমাদের পৃথিবীর অনুরূপ একটি গ্রহ (যাতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের সন্দেহের তালিকায় ছিল) অন্য গ্রহাণুর সাথে ধাক্বা লেগে সম্পূর্ণ ধ্বংশ হয়ে গেছে।
.
উল্যেখ্যঃ এ ধ্বংশলীলা কিন্তু আপনের কেয়ামতের সাথে মেলে না। বস্তু ইসলামের কেয়ামত কখনোই হবে না। এটা কল্পকাহিনী। এর বহু আগেই অন্য গ্রহে মানুষ তার রেইস শুরু করবে।
.

গুরু:
যারা ধর্ম মানে তারা বস্তু গঠনের রহস্য জানে না এটা খুবই হাস্যকর। আপনার জ্ঞানের ভিতর যে মূর্খতা বেশি কাজ করে এটা আপনার প্রত্যেক কমেন্টেই প্রমাণিত। আপনার জ্ঞান এবং মূর্খতার ক্ষেত্রে 80% মূর্খতা কাজ করে। আবার সম্পর্কচ্ছেদ এর কথা যখন বললেন তখন আপনার মূর্খতা বেরে দাঁড়িয়েছে 90%+। আপনি বললেন আমি বস্তু গঠনের রহস্য জানি না, আপনি যে বস্তু গঠনের রহস্য স্বীকার করেন না? আপনি যেটা বুঝেন সেটা হচ্ছে নিজে নিজে সংগঠিত হওয়া। এটা শুধুমাত্র নাস্তিকদেরই চিন্তা ভাবনা। আর আমরা ধর্ম থেকে যেটা জানতে পারি সেটা হচ্ছে দুনিয়ার সমস্ত কিছু তথা পুরো দুনিয়াকে একমাত্র আল্লাহই নিয়ন্ত্রণ করছে। দৌহিক গঠন সম্পর্কে যেটা বললেন, বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেগুলো কুরআনের সাথে সাদৃশ্য আছে সবগুলোই মানতে আমার কোনো আপত্তি নেই। দৌহিক গঠন বলেন আর যেটাই বলেন না কেন মুসলিমরা কিয়ামত পর্যন্ত বলতে থাকবে যে প্রাকৃতিক নিয়ম বা সিস্টেম টা আল্লাহই করে দিয়েছেন। এটা আমাদের নবীর(স:) কাছে ওহীর মাধ্যমেই প্রমাণিত। তারপর আপনি লিখেছেন পানির স্পেশাল ক্ষমতার কারণ হলো অক্সিজেনের ইলক্ট্রণ বিন্যাস, অক্সিজেনের এই ইলেক্ট্রন বিন্যাস কি? এটা কোথা থেকে আসল? এটার উৎপত্তি কিভাবে হল? আমি জানি এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে নেই, শুধু আপনি না, আপনারা সকল নাস্তিক একত্র হলেও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। আর দুনিয়ার সকল প্রশ্নের উত্তর কিন্তু মুসলিমরা এক কথায় দিয়ে দেবে। ইলেক্ট্রন আর নিউক্লিয়াস এর জন্ম কোত্থেকে? আপনি আমাকে আর চান্স দিয়েন না। আমি কি আপনার অধীনে চাকরি করি নাকি? কথাটা একদম মূর্খের মত বলেছেন। আপনার চান্স আপনার পকেটে রেখে দেন। আপনি মূর্খের মত কথা বলে যাচ্ছেন। আপনি আমাকে অন্যের পোষ্টে Observe করেই friend request দিয়েছেন। আপনার নিম্নমানের মানসিকতা যদি আগে জানতাম আপনাকে Accept করতাম না। আমি এখনই আপনাকে block মেরে দিচ্ছি।
.
শিষ্য:
যেহেতু আপনে মাইন্ড খাইতেছেন তাই আমি আর মজা করবো না কথা দিলাম। তবে ব্লক করা বা না করা আপনের অভিরুচি। তাতে আমার কী আসে গেলো? সম্পর্ক ছিন্ন করলে আমরা একে অপরের কাছ থেকে কিছুই শিখতে পারবো না।
.
ভালো করে পড়লে আপনে ধরতে পারতেন আমি কী বলেছিলাম,
” ধর্ম লেভেলে আটাকায়া থাকার একটা বড় কারণ হইলো বস্তু গঠনের রহস্য না জানা। এ না জনার কারণে এরা অনেক কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসে আটকায়া থাকে। আবার যারা বস্তু বা প্রকৃতির রহস্য জানেও তারা তারা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত করতে পারে না। ফলে একটা জটিলতরো স্তরে গিয়ে হতবাক হয়ে একজন পরিকল্পনা ও একটিভ সৃষ্টিকারী খোঁজে।”
.
দেখেন এটা শুধু আমিই বলি নাই, এমন মানুষদের নিয়ে নজরুল ইসলামের আছে বিখ্যাত উক্তি: “হাজার  বছর ঝরণায় থেকেও রস পায়নাকো নুড়ি”।
এরা কম্পিউটার হার্ডডিস্কের মত। শুধু ইনফর্মেশন ধারণ করে। ইনফর্মেশনকে ধারণ করলেও হার্ডডিস্ক সেগুলা দিয়ে কোনো লজিক্যাল ওয়ার্ক করতে পারে না। এরা ঝরনার নুড়ির মত, শত শত বইয়ের জ্ঞান মাথায় নিয়েও বলে স্রষ্টার হুকুম ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। আবার কিছু ডাক্তার মস্তিষ্ক সম্পর্কে সকল জ্ঞান রেখেও বলে “আত্মা আছে।” কেউ মনো বিজ্ঞানি ধার্মিক নিউরোলজি পড়েও বলে “স্বপ্ন অহী স্বরূপ।” এদের জন্য নজরুলের বিখ্যাত উক্তি। শুধু জানলেই হয় না, জানা ইনফর্মেশনগুলো দিয়ে জ্ঞানকে রান্নাবান্না করতে হয়। লজিক ক্রিয়েট করতে হয়।
.
আমি আমার লেখায় কখনো বলি না যে “ইশ্বর নাই”। আমি বলি “ইশ্বর যদি থাকে তবে সে কেমন হবে”।
.
আমি উপরে রিপ্লাইতে বলেছি, যদি কোনো স্রষ্টা থাকে তবে সে ইসলাম কেনো, কোনো ধর্মেরই হতে পারে না। কারণ সকল ধর্মের স্রষ্টা একটিভ ইশ্বর। কিন্তু বাস্তবত আমরা কোনো একটিভ ইশ্বরের অস্তিত্ব দেখি না। যারা একটিভ ইশ্বরের অস্তিত্ব খুঁজে পায় না তাদের কেউ ধরে নেয় “একজন ইশ্বর আছে”, কেউ বলে, “একজন ইশ্বর নেই”, আর কেউ বলে “আমি জানি না স্রষ্টা আছে কিনা, থাকলেও থাকতে পারে” ইশ্বর নাই বা আছে কোনোটারই কোনো প্রমাণ নাই।
.
আপনে একটা অন্তত প্রমাণ দেন যেটার বিরুদ্ধে আমি কোনো লজিক দিতে পারবো না। তা দিতে পারলে আমি জীবনে আর কখনো ধর্মের সমালোচনা করবো না।
.
আপনে যদি দুইটা চুম্বকের উত্তর মেরু আর দক্ষিন মেরু কাছে আনেন তবে কি তারা তাদেরকে আকর্ষণ করার জন্য একজন স্রষ্টার হুকুমের জন্য বসে থাকবে। স্রষ্টা কি কখনো তাদের আকর্ষণ না করার হুকুম দিবে? এমন কি কখনো ঘটেছে যে চুম্বকের বিপরীত মেরু স্রষ্টার হুকুম পেয়ে আকর্ষণ না করে বিকর্ষণ করেছে? যদি এমনটা হয় তবে বিজ্ঞানের নীতি অনুসারে “চুম্বকের বিপরীত মেরু আকর্ষণ করে” রুলটিই বাতি হয়ে যাবে চিরোতরে। তার মানে এমনটি কখনো হবে না। এর মানে হলো চুম্বকের বিপরীত মেরু তার প্রভুর হুকুমের তোয়াক্কা করে না। এটা  তার ধর্ম। এ ধর্ম কোত্থেকে এসেছে। এর কারণ কী? এর ধর্মের কারণ হলো প্রোটনের কম্পন ও ইলেকট্রনের বিন্যাস। যখন থেকে প্রোটন, ইলেকট্রন তৈরী হয়েছে তখন থেকেই এ নিয়ম চলে এসেছে।
.
ইলেক্ট্রণ প্রোটন কোত্থেকে এসেছে? কে তাদের বিন্যস্ত করেছে? বিজ্ঞানের থিওরী মতে একটা স্ট্রিং (স্পেসে একটি কোয়ান্টাম শক্তি উদ্ভব হয় যাকে স্ট্রিং বলে) বিশেষ মিউজিক্যার টোনে কম্পিত হয় যার কারণে চার্জ, ভর জাতীয় ধর্মের উদ্ভব হলো। আবার একই ভাবে স্পেসে কোয়ার্ক ও গ্লুয়ন ও ফোটন নামে ভিন্ন ভিন্ন ডাইমেনশনের, কম্পনের মিউজিকেল টোনের স্ট্রিং তৈরী হয়। গ্লুয়ন, ফোটন, ডব্লিউ বোসন ও গ্রাভিটোন চারটি মৌলিক কণার কর্মকান্ডকে আমরা বল বলি। এ বলগুলি অন্য ভর ও চার্জ বিশিষ্ট কণাগুলোকে বিন্যস্ত করে। তাইলে সমস্ত বস্তু জগতের কারন হিসাবে আমরা ১৩ টি মৌলিক কণা ও ৪ টি বলবাহী কণা থেকে পাই। এদের রুলই বস্তু জগত সৃষ্টি করে। এ কনাগুলি ল্যাবে তৈরী করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে।
.
এ কণাগুলো তৈরী হওয়ার পর তাদেরকে আর কারো নির্দেশের অপেক্ষা করতে হয় না। এগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট বলে আমাদের দেহের মত জটিল বিন্যাসও তৈরী হয়েছে। প্রতিটি কণার জন্য একটা গাণিতিক সমীকরণ আছে । যে কোনো মুহূর্তে সমস্ত গাণিতিক সমীকরণের সমাধান দিয়া পরমুহূর্তের পরিবর্তন সাধিত হয়। এটা নিজস্ব গতিতে গতিশীল। এর জন্য কারো প্রতিমুহূর্তে হুকুমের দরকার হয় না। এর জন্য কোনো একটিভ পরিচালকের দরকার হয় না। যদি হতো তবে আমরা এসব নিয়মের ব্যাতিক্রম দেখতে পেতাম। এটা ঠিক একটা অটোমেটিক মেশিনের মত যা চালিয়ে দিয়ে তার অপারেটর নাক ডেকে ঘুমোতে থাকে। কারণ তার মেশিনটি খুব ভালো। ডিস্টার্ব খুব কম করে। আমাদের ইউনিভার্সে এ মৌলিক কণার মডেল নামক মেশিনটি ১০০% এক্যুরেইট। এটা কখনো ডিস্টার্ব করে না। চলতেই থাকে। এর অপারেটর ইশ্বর (যদি থাকে) সে মেশিটা চালু করে দিয়ে ঘুমাচ্ছে। তাকে কিছুই করতে হয় না। সুতরাং ইউভার্সের একজন ট্রিগারম্যান থাকলেও এটি পরিচালনায় তার কোনো কাজ নেই। ১৩.৮ বিলিয়ন বছর ধরে এর অপারেটর ঘুমাচ্ছেন।
.
বুঝতেই ইউনিভার্সের স্রষ্টা (যদি থাকে) সে আপনের একটিভ, প্রতি মুহূর্তে নির্দেশ দাতা, মনের খেয়ালে শাস্তি দেয়ার জন্য মানুষ সৃষ্টিকারী, নিষ্পাপদের  শাস্তি দানকারী আল্লাহ নয়। এজন্য আমি আপনের আল্লাতে বিশ্বাস করি না।
.
আমার কথা শুনতে থাকলে আমি আপনের ইমানের কোনো গ্যারান্টি দিতে পারবো না। আপনের চিন্তা যদি ডায়নামিক হয় তবে আপনে পরিবর্তন হয়ে যাবেন। আর যদি আপনের চিন্তা “ঝরনায় থাকা নুড়ি” হয় তবে আপনে সত্যকে মেনে নিতে পারবেন না। ফলে আপনে আপনে আপনের জায়গায় স্থির থাকবেন। এখন সিদ্ধান্ত আপনের আপনে আমারে ব্লক করবেন কি না।
.
[আলাপচারিতা চলমান আছে। গুরু একখন শিষ্যের চেহারা চিরোতরে না দেখার অভিপ্রায়ে ব্লক মারেন নি]

মাহমুদ আহমেদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *