হিন্দু সম্পত্তি উত্তরাধিকার সংশোধন করার জন্য আইন করার চেষ্টা চলছে যাতে মেয়েদের পুরুষদের মত সম-অধিকার এর ব্যবস্থা থাকবে। পবিত্র বেদ অনুযায়ী সনাতন ধর্মের কন্যা এবং পুত্রের উভয়ের অধিকার সমান এবং সেজন্যই কন্যাদানকে শ্রেষ্ঠ দান হিসেবে অভিমত দিয়েছেন প্রাচীন ঋষিগণ। তাই কন্যাদের সম-অধিকার দেয়াকে আমি সমর্থন করি।
প্রশ্ন ভিন্ন জায়গায়।
১/ ধর্মান্তরিত আরমা দত্ত বা আরমা মাহবুব কিভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন? তার ধর্মান্তর তার ব্যক্তিগত বিষয়, সেটিকে আমি সম্মান করি। কিন্তু ধর্মান্তরিত হয়ে পরে আবার হিন্দুদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা তো সম্পুর্ণ অনৈতিক।
২/ প্রস্তাবিত আইনের জন্য জরিপ করা হয়েছে। জরিপের ফলও দেখা যাচ্ছে। কতজন নিয়ে জরিপ করা হয়েছে, তাদের কি তথ্য দিয়ে মতামত নেয়া হয়েছে সেটা প্রকাশ করা হয়নি। এটি একটি সম্প্রদায়ের নিজস্ব আইন হবে, তাদেরকে ইনভলভ না করে কয়েকজন আরমা মাহবুব/দত্ত বা দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কে নিয়ে আইন করলে তো সেটা উপর থেকে চাপিয়ে দেয়াই হল। এই বিষয়ে আইন পরিবর্তনের খসড়া করার আগে বড় আকারে জরিপ বা ভোটাভুটির প্রয়োজন ছিল। সেটি করা হয়নি। পরোক্ষ গনতন্ত্র হলেও আরমা বা দেবপ্রিয় জনপ্রতিনিধি নন। দ্বিতীয়ত জনপ্রতিনিধি আর হিন্দুপ্রতিনিধি দুটি ভিন্ন বিষয়।
৩/ কেউ ধর্মান্তরিত হলে সে কি সম্পত্তির উত্তরাধিকারী থাকবে কিনা সে বিষয়ে পরিস্কার কোন বক্তব্য নেই। সে বিষয়ে এই আইনে ক্লজ থাকা বাঞ্ছনীয়। যদি তারপরেও মেয়েরা সম্পত্তির উত্তরাধিকারী থাকে তাহলে হিন্দু মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি আশঙ্কিত হই। তখন সম্পত্তির লোভে ঘর থেকে মেয়েদের তুলে নিয়ে গেলেও কিছু করার থাকবে না, বলেও লাভ হবেনা।
৪/ ইতিপূর্বে দেবোত্তর সম্পত্তি অধিগ্রহণ আইন বা অর্পিত তথা শত্রু সম্পত্তি সংশোধন আইনের নামে ‘ক’ আর ‘খ’ তফসিল বানিয়ে ভোগান্তি দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে এই ভূখন্ডে এখন পর্যন্ত হিন্দুদের নিয়ে যত আইন হয়েছে সবগুলোই হিন্দুদের ক্ষতি করেছে। তাই এই আইনটিও ক্ষতি করবে না সেটা বলা যাচ্ছে না।
ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় লাগে। 😕
কৃতজ্ঞতা: সান্তনু ভট্টাচার্য্য