মুরাদকে বিদেশে যেতে সাহায্য করেছে বর্তমান সরকার । তাই সরকারের সমালোচকের শেষ নেই ।
কিন্তু জামায়াত-শিবির ক্ষমতা পেলে কি করবে ভেবে দেখেছেন ?
১ লক্ষ হাদিসের হাফেজ আব্দুল্লাহ দরখাস্তী (র) বলেছেন কোনো দেশ যদি কমিউনিস্টরাও দখল করে নেয় সেই দেশেও একদিন ইসলামী শাসন কায়েম হতে পারে । কিন্তু জামায়াত ইসলাম যদি কোনো দেশের একক নিয়ন্ত্রণ নেয় তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত ওই দেশে আর কোনোদিন ইসলাম আসবে না ।
রাষ্ট্রীয় সমস্ত যন্ত্রকে ব্যবহার করে ইমাম আলীকে (রা) মদখোর বলে প্রতিষ্ঠিত করবে ইসলামের নামে । রাসূল (সা) বলেছেন “আমি যার মাওলা আমার আলিও তার মাওলা”, “যে আলীকে গালি দিলো সে আমাকে গালি দিলো”, “আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানে আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ” ।
সমস্ত পয়গম্বরদেরকে গুনাহ্গার বলে মেনে নিতে হবে জামায়াত-শিবির ক্ষমতায় গেলে । এবং এর বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের মেরে ফেলবে, আহত করবে, ধর্মদ্রোহী বলবে ।
জামায়াতের বাপ মওদুদীর আদর্শ ছিল হিটলার এবং ফ্যাসিবাদ । ভারতের বিজেপিরও একই অবস্থা । মহামারীর পরে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটে । ১০০ বছর আগে হিটলারের নাজী পার্টির উত্থান হয়েছিল । এবার গোলাম আজমের দলের উত্থান হবে ।
ইসলামকে ফ্যাসিবাদের কাছাকাছি একটি মতাদর্শ বলেছে মওদুদী ।
আপনার মাথা ব্যথা হলে আমি যদি বলি মাথা কেটে ফেলতে সেটাকে ফ্যাসিবাদ বলা হবে । জেলে কয়েদি বেশি হলে কেউ যদি বলে জেলের দরজা খুলে দিতে তাকেও ফ্যাসিবাদী বলা হবে ।
ইসলাম আল্লাহর পছন্দের ধর্ম । কিন্তু আল্লাহ কুরআন – হাদিসের কোথাও বলেন নাই তিনি মুসলিমদের পক্ষে । আজকে মধ্য প্রাচ্যের অধিকাংশ দেশের শাসকদের যে অবস্থা তাতে আল্লাহ তাদের পক্ষে থাকলে কি হতো ?
মুসলমান এবং অমুসলমান যদি আল্লাহর অবাধ্যতায় সমান হয় তাহলে আল্লাহ অমুসলিমদের বিজয় দান করেন কারণ এই মুসলমানদেরকে আল্লাহ বিজয় দান করলে এরা ইসলামের মর্যাদা নষ্ট করবে ।
তুমি যদি বিজয়ের জন্য প্রস্তুত না থাকো তাহলে আল্লাহ তোমাকে বিজয় দান না করাটা তোমার জন্য আশীর্বাদ । সক্রেটিস বলেছেন তিনি জালেম না হয়ে মাজলুম হবেন কারণ মাজলুমের শুধু দেহটা শেষ হচ্ছে আর জালেমের আত্মাটাই শেষ হয়ে যাচ্ছে । জালেম হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার থেকে মাজলুম হয়ে ক্ষমতার বাইরে থাকা উত্তম ।
যারা বলে “ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম কায়েম করব, অনেক পরিবর্তন আনবো” তারা মিথ্যাবাদী । এরা ক্ষমতায় গিয়ে আরো বড় জালেম হবে । আমাদের জন্য এই ধরণের বক্তব্য বড় একটি লাল পতাকার মতো কাজ করার কথা ছিল । তাফসীরে কুরতুবির লেখক ইমাম কুরতুবী (র) বলেছেন এরা যে মিথ্যাবাদী তার প্রথম প্রমাণ হচ্ছে এরা নিজেদের “মুসলিহুন” দাবি করে ।
আল্লাহর ওলিরা কখনোই নিজেদের “মুসলিহুন” দাবি করেন না কারণ তাঁরা এত বড় দাবি করতে ভয় পান । ইউসুফ (আ) নবীর কথা বলতে পারে অনেকেই কারণ তিনি ক্ষমতা চেয়েছিলেন । তাদেরকে বলবেন “তুমি যদি ইউসুফ নবী হতে পারো তাহলে আমি তোমাকে বিশ্বাস করবো” । এবং ইউসুফ (আ) নবীর এই কথাটিও ছিল দ্বীনের দাওয়াত দেবার কৌশল কারণ তিনি নাস্তিকদের দেখাতে চাচ্ছিলেন, প্রমান করতে চাচ্ছিলেন ইসলামিক রাষ্ট্রের নেতা হবার চেষ্টা তিনি করছেন না বরং ন্যায়পরায়ণতা কি সেটা শিখাতে চাচ্ছেন ।
আমরা আমাদের ক্ষমতা তাদেরকে দেই না যারা ক্ষমতা চায় । হাদিসে এসেছে “তুমি যদি নেতৃত্ব চাও এবং তারপরে পাও, তাহলে নেতৃত্বই তোমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে । যদি তুমি না চাও এবং তোমাকে দেওয়া হয় নেতৃত্ব, আল্লাহ তোমাকে সাহায্য করবেন” ।
মরহুম শাহ আহমদ শফীর (র) ওস্তাদ আওলাদে রাসুল হোসাইন আহমদ মাদানী (র) সারাজীবন সাবধান করেছিলেন জামায়াত ইসলামের ফিৎনাহর ব্যাপারে । এই ফ্যাসিবাদী দলটিকে বিষবৃক্ষ বলেছিলেন তিনি ।
হোসাইন আহমদ মাদানীর (র) মুরিদ বাংলার সব মানুষের অবিসংবাদিত আধ্যাত্মিক নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী (র) বলেছিলেন “নীল নদের পানি নীল নয়, জামায়াত ইসলাম ইসলাম নয়” ।
আজকে আমরা আমির হামজা, মিজানুর রহমান জামায়াতিদের দেখতে পাচ্ছি যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে । ধর্মান্ধতা আর ধর্মানুভুতি এক জিনিস নয় ।
আমির হামজা ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রের এক নায়িকাকে ইসলামীক ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজির মেয়ে বলেছিল । তথ্যটি ভুল হলেও বহু মানুষ আমির হামজা নামের এই ভন্ডের কথা বিশ্বাস করে সেই কথাকে সত্য ভেবেছিল । যারা কথা যাচাই না করে প্রচার করে তাদেরকে কি বলেছেন রাসূল (সা) ?
হজরত মঈনুদ্দিন চিস্তিকে (র) শরীয়তের দলীল মানতে নারাজ আমির হামজা কারণ তিনি নবী বা সাহাবী না । আহলে বাইত শব্দটিই উঠিয়ে ফেলতে চায় “মাজহাব না মানলেও চলে” মনে করা আলেম নামধারীরা ।
কুরআনের ৪২ নম্বর সূরার ২৩ নম্বর আয়াতে রাসূল (সা) পরিষ্কার বলেছেন তিনি আমাদের কাছে তাঁর আহলে বাইতদের (নিকটবর্তীদের) ভালোবাসা ছাড়া কিছুই চান না ।
রাসূল (সা) বলেছেন ইমাম হাসান (আ) এবং ইমাম হোসাইন (আ) এর মাধ্যমে তিনি কেয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর ওলী রূপে আসতেই থাকবেন (অর্থাৎ আওলাদে রাসূল রূপে) । হজরত মঈনুদ্দিন চিস্তি (র) আওলাদে রাসূল । তিনি আব্দুল কাদের জিলানী (রা) বা ইমাম খোমেইনীর (রা) মতো অত বড় কিছু নন । কিন্তু তিনি রাসূলে পাকের (সা) আওলাদ এবং সেই কারণে তাঁর শরীরে তো দূরের কথা, কাপড়েও আগুন ধরতো না ।
আওলাদে রাসুলরা রাসূলের (সা) অংশ । তাঁদের সাথে বেয়াদবি মানে রাসূলের (সা) সাথে বেয়াদবি । রাসূলের (সা) অংশকে শরীয়তের দলীল হিসেবে না মানা মানে রাসূলকেই (সা) না মানা । “সৈয়দ” দেরকে সন্দেহ করাও গুনাহ অর্থাৎ তাঁরা সৈয়দ কিনা এটাও মনে করা গুনাহ । “সৈয়দ” শুনলেই সম্মান করতে হবে (তবে আব্বাসী মার্কা সৈয়দ নামধারীদের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেখা যেতে পারে কারণ এদের আচার, আচরণ, কথা – বার্তা সবই নির্বোধদের মতো) ।
কারবালার যুদ্ধের ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম হোসাইনের (রা) মাথাকে “কল্লা” পর্যন্ত বলেছে এই মুনাফেক ।
শিয়া – সুন্নি দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার জন্যেও দায়ী এই আমির হামজা (সে শিয়াদের কাফের বলে । অথচ বাংলার নবাবরা শিয়া ছিলেন, শায়েস্তা খাঁ শিয়া ছিলেন, হাজ্বী মোহাম্মদ মহসিনও শিয়া ছিলেন, টিপু সুলতান, তিতুমীরও শিয়া ছিলেন) ।
সুন্নি বিশ্বের অভিভাবক মিশরের আল আজহার এর ফতওয়া হচ্ছে শিয়ারা শুধু মুসলমানই নয়, সুন্নি থেকে শিয়া হওয়ায় কোনো সমস্যা নেই ।
যারা আজকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের কথা বলে শিয়াদের ইসলাম থেকে বের করে দিতে চায় এরা কেউ সুন্নি নয় (অর্থাৎ নিজেরাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতে নেই) । এরা সালাফি (যাদের আমাদের দেশে আহলে হাদীস বলা হয়) ।
আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা বলে কেউ নাই । সাইফ বিন ওমরের কাল্পনিক চরিত্র এটা । সাইফ বিন ওমর এই পর্যন্ত বলছে যে হজরত আলী (রা) একটা কুর্তা পরিধান করে (প্যান্ট ছাড়া) বের হয়ে গিয়ে হযরত আয়েশার (রা) বাবাকে বায়াত দিয়েছিলেন রাসূলের (সা) ওফাতের পরে । অথচ ইতিহাসের কোনো আলেমই কোনোদিন বলেননি রাসূলের (সা) ওফাতের ৬ মাস পার হবার আগে হজরত আবু বকরের (রা) সাথে হজরত আলীর (রা) কোনো কথা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়ে ।
মুগীরা বিন শাবা জিনা করেছিল (সমস্ত সুন্নি কিতাবে তাই এসেছে) । কিন্তু সাইফ বিন ওমর বলেছিল মুগীরাকে লোকজন পছন্দ করত না তাই তাকে নিয়ে এই ঘটনা বানিয়েছে ।
ইমরান খান বলেছেন (১) তিনি শিয়া – বিরোধী নন এবং (২) পাকিস্তান তাঁর নেতৃত্বে কখনই ইরান – বিরোধী হবে না । তিনি এই পর্যন্ত বলেছেন সুন্নিদের থেকে শিয়াদের শাহাদাৎ – বোধ অনেক উন্নত । পাকিস্তানের আনুমানিক ১ / ৩ মুসলমান শিয়া মাজহাবের । করাচি শহরে কমপক্ষে ৭০ লক্ষ শিয়া আছে ।
ভারতে ৪.৫ কোটির বেশি শিয়া আছে যার ভেতরে আনুমানিক ৪৫ লক্ষ আওলাদে রাসূল । কাশ্মীরে ১৪ লক্ষ শিয়া আছে । মধ্য প্রাচ্যে শিয়া – সুন্নি আছে ৪৫ – ৫৫ আনুপাতিক হারে ।
সৌদি আরবে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ শিয়া আছে । ইয়েমেনের প্রায় অর্ধেক মুসলমানই শিয়া । ইরাকের অর্ধেক মুসলমান শিয়া (এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি ছিল । ইসরাইলের তৈরী জঙ্গি সংগঠন আইএস এসে বহু শিয়া মেরে ফেলেছে কারণ শিয়ারা ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি) ।
দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী শিয়াদের মুসলমান বলতো এবং আমির হামজা সাঈদীর ভক্ত । তারেক মনোয়ারও শিয়াদের মুসলমান বলে (এই ব্যাটাও জামায়াত – শিবির করে) । মিজানুর রহমান জামায়াতি শবে বরাতকে স্বীকার করে এবং সাঈদীর ভক্তও দাবি করে নিজেকে । অথচ সাঈদী সারাজীবন বলছে শবে বরাত বিদা’ত । অর্থাৎ জামায়াত ইসলাম হচ্ছে মারাত্মক বিভ্রান্ত মানুষদের ঐক্যবদ্ধ একটি শক্তি ।
জামাত – শিবিরের ব্যাঙ্ক, বিমা, কোচিং সেন্টার, হাসপাতাল, স্কুল – কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়, উকিল, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, সচিব, শ্রমিক — সব আছে । প্রতিটা গ্রামে এদের ছাত্র সংগঠনেরও কমিটি আছে । এদের অস্ত্র আছে । মিশরের মুর্সি, তুরস্কের এরদোগানরা এদের ধারার রাজনীতিই করে এবং এদের সব ধরণের সাহায্য করে থাকে ।
এরদোগান নাকি ইসলাম কায়েম করবে !
১৮ বছর বয়স হলেই মদ খাওয়া যায় তুরস্কে, মসজিদের ৫০০ গজের বাইরেই মদের দোকান খোলা যায় । মদ বা নেশা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ তাই সেটাকে “মুখে” অনুৎসাহিত করছে এরদোগান (ধর্মীয় দৃষ্টিকোণকে পাশ কাটিয়ে) ।
“বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য নারীদের নগ্নভাবে প্রদর্শন করার কি দরকার ?”— এই কথা বলে এরদোগান কি ইসলামকে লুকাতে চাইছে না ?
এরদোগানের বাসস্থানে ১০০০ কক্ষ আছে । ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউজের থেকে ৩০ গুন বড় এই বাসস্থানটি ।
এরদোগানের স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগের দাম ৫০ হাজার ডলারের কম না ।
এরদোগান কুর্দিদের নাম রাখার ব্যপারেও হস্তক্ষেপ করেছে, খৃষ্টানদের হাগিয়া – সোফিয়াকে মুসলমানদের মসজিদে পরিণত করেছে (যা সম্পূর্ণ হারাম) । তুরস্কের ৪ ভাগের এক ভাগই কুর্দি নাগরিক । বহু কুর্দি শহরকে ধ্বংস করেছে ন্যাটো রাষ্ট্রের জালেম এই শাসক ।
রাসূলের (সা) ইন্তেকালের পরে ৩০ বছর ইসলাম AS A POLITY থাকবে এটা রাসূল (সা) বলে গেছেন । তারপরে যা কিছু হয়েছে সেটাকে ইসলামিক বলার কোনো সুযোগ নেই । ইসলাম ব্যবহৃত হয়েছে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার বাহন হিসেবে ইমাম আলীর (রা) শাহাদাতের পর থেকে । তাই উমাইয়া, আব্বাসীয় বা অটমান খেলাফতকে ইসলামী শাসন বলার মতো ভুল আর করবেন না ।
একই সাথে ন্যাটো এবং ইসলামের পক্ষে কথা বলা এই জালেম আমাদের মামুনুল হকের মতো অনেককেই বিভ্রান্ত করে নিজের ভক্তে পরিণত করেছে । মামুনুল হক ১০০০ মাদ্রাসা চালায় । আমরা কত ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বসবাস করছি ?
তুরস্কের সংবিধানে সেকুলারিজমের (ইহজাগতিকতা) সূত্রপাত করে কামাল আতাতুর্ক । এরদোগান তার পশ্চিমা প্রভুদের খুশি করতে গিয়ে সমকামীদের অধিকারের পক্ষেও আইন রেখেছে । এরপরও এই শয়তানকে মুসলমানের প্রতিনিধি বলবেন ?
তুরস্কে আজও আইন আছে তাদের রাজধানীকে (ইস্তানবুল) কেউ পুরোনো নামে (কনস্টান্টিনোপল) ডাকলে জেলে যেতে হবে । অথচ এই পুরোনো নামটিই উচ্চারণ করা সুন্নত কারণ এই শহরটিকে ঘিরে রাসূলের (সা) বেশ কিছু হাদীস রয়েছে ।
হাগিয়া সোফিয়া একটি ক্যাথিড্রালই ছিল । তারপর অটোমান সুলতান মোহাম্মদ ফাতেহ বেহায়ার মতো সেটিকে একটি মসজিদে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে একটি মারাত্মক গুনাহ করে । মসজিদটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে কামাল আতাতুর্ক । এরদোগান সেটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেছে । ইসরাইল ঠিক এটাই চায় — ইসলামকে অসহিষ্ণু ধর্ম হিসেবে দুনিয়ার মানুষের কাছে তুলে ধরতে ।
এরদোগান সারা দুনিয়াতে মুসলমান মারার জন্য তুরস্কের মুসলমান – অমুসলমান — সবার ট্যাক্সের টাকা নিয়ে ন্যাটোকে দিচ্ছে । ন্যাটোর ইউরোপ এবং এশিয়ার সংযোগ হচ্ছে তুরস্ক । ন্যাটো হচ্ছে ইসরাইলের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সৈন্যে তৈরী একটি বাহিনী । ইরানে হামলা করার জন্য ইরানের পাশের দেশ আজারবাইজানে এয়ারফিল্ড কিনেছে ইসরাইল । আজারবাইজান ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র ।
সিরিয়ার মানুষদের নিয়ে বাজে কথা বলতেই রাসূল (সা) নিষেধ করেছেন (আল মুস্তাদরাক আলা আল সহীহাইন, সুন্নি আলেম হাকিম নিশাপুরির কিতাব) । এরদোগান সবকিছু করতেছে বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য । এমনকি ন্যাটোকেও আমন্ত্রণ জানাইছিল সিরিয়াতে বোমা মারার জন্য । রাশিয়ার ভয়ে ন্যাটো ঢোকে নাই সিরিয়াতে ।
রাশিয়া হচ্ছে সূরা রুমের রুম (বাইজান্টাইন খৃষ্টান) । ভুলে গেলে চলবে না মদিনার আনসারদের আগেই মুসলমানরা সাহায্য পেয়েছিল বাইজান্টাইন খৃষ্টানদের যখন রাসূল (সা) কালো এক বাইজান্টাইন রাজার কাছে সাহাবীদের পাঠিয়েছিলেন আবীসিনিয়াতে (লোহিত সাগর অতিক্রম করে) ।
তুরস্কের বিমান বাহিনী মুসলিম বিশ্বে অদ্বিতীয় । কিন্তু এটা মুসলমান এবং তাদের মিত্রদের জন্য মহা দুঃসংবাদ কারণ এরদোগানের হুকুম আর মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুকুম দুই রকম হলে তুরস্কের যুদ্ধবিমান চালকরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা শুনতেই বাধ্য থাকবে । তুরস্ক ন্যাটো থেকে বের হবার আগে মুসলমানদের ঘৃনা করতে হবে এই দেশের সরকারকে ।
কুরআন ব্যাখ্যা করতে হলে কুরআন নাজিল হওয়ার আগের যুগের আরবি কবিতার জগত পরিপূর্ণ আয়ত্তে আনতে হয় । আপনি যদি কোনো ভাষায় কবিতা বুঝতে পারেন তাহলে আপনি সেই ভাষায় যে কোনো কিছুই বুঝতে পারবেন ।
কুরআনের সেরা তাফসীর, হাদীসের সেরা কিতাবগুলো পরিপূর্ণরূপে বুঝতে হলে আপনাকে ৭ম শতাব্দীর আরবি ভাষা জানতে হবে । অন্যভাবে বললে, আল্লাহ ধরেই নিয়েছেন আপনি আরবী ভাষাকে ওই স্তরে বোঝার ক্ষমতা অর্জন করেই কুরআন তেলাওয়াত শুরু করেছেন ।
রাসূলাল্লাহর (সা) কাছে আরবি ভাষার সেরা কিতাব কুরআন এসেছিল তখনই যখন আরবি ভাষার উৎকর্ষতা চূড়ায় পৌঁছেছিল । হযরত আয়েশার (রা) হাজার হাজার হাজার হাজার লাইন আরবি কবিতা মুখস্ত ছিল । রাসূল (সা) কবিদের আমন্ত্রণ জানাতেন কবিতা শোনার জন্য ।
“তাফহীমুল কুরআন” ভুলে পরিপুর্ন বললেও ভুল বলা হবে । এটা একটা শয়তানির কিতাব । এই কিতাবটি প্রাচীন যুগে লেখা হলে গর্দান এবং কব্জি পর্যন্ত ফেলে দেওয়া হতো । আধুনিক যুগে আমরা মওদুদীকে আলেম বলছি ।
উর্দু ভাষায় কুরআনের তাফসীরের নামে শয়তানি লিখছে মওদুদী । আরবি ভাষা যেমন সমৃদ্ধ তেমন জটিল । আরবি ভাষার চূড়ান্ত দখল (ইলম), জ্ঞান (হিলম) এবং ইলহাম ছাড়া কুরআনের তাফসীর লিখতে গেলে অল্প কিছু সওয়াব তো দূরের কথা গুনাহ হবে অগণিত ।
এসব ফুটপাথের বই আবার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ানোর জন্য জিহাদ করতেছে মওদূদীবাদীরা । এসব মনগড়া তাফসীর নামধারী শয়তানির কোনো মূল্য নেই । সৌদি আরবের মতো জারজ রাষ্ট্র এবং তার দোসর রাষ্ট্র ছাড়া কেউই এসব শয়তানিকে “তাফসীর” বলবে না ।
রাসূল (সা) বলেছেন তাঁর জামানায় অনেক জ্ঞানী মানুষ (ফোকাহা) আছে (ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যারা ভালোভাবে জানে) । বক্তা কম, আলেম বেশি তাঁর (সা) জামানায় । যারা দিচ্ছে তাদের সংখ্যা বেশি যারা চাইছে তাদের চেয়ে । তাই তাঁর (সা) জামানায় কর্মশক্তির প্রয়োগ (Action) জ্ঞানের থেকে উত্তম ।
কিন্তু শেষ জামানায় সমাজে আলেম (ফোকাহা) থাকবে কম, বক্তা থাকবে বেশি । অনেক মানুষ চাইবে এবং খুব কম মানুষই দিবে । সেই সময় জ্ঞান কর্মশক্তির প্রয়োগের থেকে উত্তম হবে ।
রাসূল (সা) এও বলেছেন উম্মতে মোহাম্মদীর প্রথম যুগে দরকার হবে শরীয়তের প্রচার । কিন্তু শেষ জামানায় শরীয়ত বজায় রাখার জন্য মুসলমানদের হাকিকতের শিক্ষার দরকার হবে (বোখারী শরীফ) ।
রাসূল (সা) এও বলেছেন দ্বীন ইসলামের প্রথম যুগে আছে নবুওয়াত এবং ক্ষমা । তারপরে থাকবে আধিপত্য এবং ক্ষমা । তারপরে থাকবে আধিপত্য এবং জবরদস্তি । এবং সবার শেষে থাকবে নির্মম আধিপত্য ।
রাসূল (সা) বলেছেন শেষ জামানায় প্রকৃত আলেমদের মৃত্যুর মাধ্যমে ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে । ওই পরিস্থিতিতে যারা আলেম নামধারী থাকবে তাদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে । তারা নিজেদের মনগড়া পন্থায়, ব্যক্তিগত মতামতের মাধ্যমে ইসলামকে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ব্যাখ্যা করে নিজেদের এবং অন্যদের বিপথে নিয়ে যাবে । অর্থাৎ ইসলাম তাদের হাতেই শেষ হবে ।
আমরা এমন একটি যুগে বাস করছি যখন ইসলামের দুশমনরা বোকো হারামের সাথে ইসলামকে সম্পর্ক করাতে চাইছে । এবং তাই অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের ধর্মে জ্ঞানের কেন্দ্রিকতার বিষয়টি এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।
আর্নল্ড টয়েনবি ১৯৪৭ সালে তার “সিভিলাইজেশন অন ট্রায়াল” বইতে ইসলামকে “ঘুমন্ত দানব” বলে অভিহিত করেন যা জেগে উঠলেই পশ্চিমা সভ্যতা শেষ ।
আল্লাহর পয়গম্বর নবী ইউসুফ (আ) কে মুসোলিনির সাথে তুলনা করছে মওদুদী । মোহাম্মদ (সা) এর আগে যত পয়গম্বর এসেছেন তাঁদের সবাইকে এক করলে মোহাম্মদ (সা) কেই পাওয়া যায় । তাই যেকোন একজন পয়গম্বরকে মুসোলিনির সাথে তুলনা করা মানে মোহাম্মদ (সা) কেই মুসোলিনির সাথে তুলনা করা ।
আল্লাহ কুরআনে বলেছেন পয়গম্বরদের মাঝে আনুগত্যের ব্যাপারে পার্থক্য করলে আমাদের ঈমান চলে যাবে । রাসূল (সা) বলেছেন সব পয়গম্বরদের বাবা এক এবং মা আলাদা । অর্থাৎ ধর্ম এক এবং শরীয়ত আলাদা ।
পয়গম্বরদের শান সম্পর্কে যার ধারণা নেই সে আবার নিজেকে মোজাদ্দেদ বলে দাবি করে ! হিন্দুদের দেব – দেবীদের ফেরেশতার সাথে তুলনা করছে মওদুদী ।
কুরআন বলে পয়গম্বররা সবাই মাসুম (নিষ্পাপ) অর্থাৎ গুনাহ করার ক্ষমতা রাখেন না । মওদুদী তার লেখায় বারবার এই অমোঘ সত্যটিকেও অস্বীকার করেছে ।
জামাত – শিবির করা অধিকাংশ মানুষই জানে না মওদুদী কত রকম শয়তানি করছে । তাই জামাত – শিবিরকে ঘৃণা করে দূরে ঠেলে দেবেন না । যে জানে আর যে জানে না তারা এক না (আল কুরআন) । যে জানে তাঁর দায়িত্ব বেশি ।
জামাত – শিবির থেকে বেরিয়ে আসার অধিকার সবারই আছে । মানুষের জন্মগত অধিকার নিজেকে এবং স্রষ্টাকে চিনতে শেখা । মওদুদী লিখে রেখে গেছে যারা জামাত – শিবিরে যোগদান করবে তাদেরকে ওরা বের হতে দেবে না ।
সূত্র : শায়খ আবদাল হাকিম মুরাদ, আওলাদে রাসূল পীর সাহেব চরমোনাই সৈয়দ ফয়জুল করিম, শায়খ হামজা ইউসুফ, প্রেসিডেন্ট, জয়তুনা কলেজ, ক্যালিফর্নিয়া