ট্যুরিস্ট পেলে ছিড়ে খাওয়া কক্সবাজারের মানুষের চিরকালীন বদ খাসলত। সেখানে দুবছর প্যাণ্ডামিকের কারণে লস দেয়ার পরে একসাথে ৬ লাখ মুরগী থুক্কু ট্যুরিস্ট হাতের কাছে পেলে উনারা যে জবাই দেয়ার জন্য রেডি হয়ে থাকবেন , সেতো বলাই বাহুল্য।
গত দুদিন ধরে অসংখ্য পোস্ট দেখলাম এই বিড়ম্বনা নিয়ে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে নিজেরাও ঘুরে এসেছিলাম। খরচও হয়েছে যথেষ্ঠই। সৌভাগ্যক্রমে Zabed ভাইয়ের স্পন্সরে ট্রিপ ছিলো। তারপরও যা গিয়েছে নিজের মানিব্যাগ থেকে , সেটাও নেহাত কম নয় দুদিনের হিসেবে। আর এই সপ্তাহে যখন এক সাথে ৬ লক্ষ মানুষের পদার্পন ঘটেছে , তখন ডালভাত ৪০০ আর আলুভর্তা ৩০০ হওয়াটা অপ্রত্যাশিত নয় মোটেই।
আর এর পেছনে অন্যতম মূল সমস্যা হচ্ছে এদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ ট্যুরিস্ট স্পট বলতে খালি কক্সবাজারই বোঝেন। আর ছুটি পেলেই ছুট লাগান সেখানেই। ভাইরে , আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলছি , আমরা চট্টগ্রামের লোকজন পারতপক্ষে ছুটি কাটাতে কক্সবাজার যাইনা। কারণ ভালোই করুণ অভিজ্ঞতা আছে আমাদের অধিকাংশের এই শহরটি নিয়ে। যেখানে টমটম চালককে যদি প্রমিত বাংলায় জিজ্ঞেস করেন ,
“এই টমটম লাবণী পয়েন্ট যাবেন?”
উত্তর আসবে “২০০ টাকা”
আর আমরা যখন বলি ,
“অডা ভাইনা যাবিনা লাবণী? “
বিনা উত্তরেই ভাড়া হবে “৫০ টাকা” !!
ডিএসএলআর এ ছবি তুলবেন?
কথা হলো এক ছবি “৩ টাকা”
আপনিও নাক মুখ বেকিয়ে ভাব নিয়ে নিজেকে হিরো আলম বানিয়ে ছবি তুললেন কয়েকটা। ভাবলেন “১০ টা নেবো। ৩০ টাকা হবে”
কিন্তু নেয়ার সময়ে দেখবেন ছবি তোলা হয়েছে শ খানেক। আর বিল এসেছে ৩০০ টাকা। নিতেই হবে। নাহলে ঘিরে ধরবে চারপাশ থেকে। চাটগাঁইয়া হলে আর সাথে ভাইবেরাদর থাকলে এক দেড়শো টাকায় পার পেয়ে যাবেন। ফ্যামিলি হলে তাও সমস্যা হবে। অন্য জেলার হলে নিস্তার নেই।
এরপর ঘোড়ায় চড়বেন? বীচ বাইকে? সী স্কুটি? আগে মানিব্যাগ চেক করে নিন পর্যাপ্ত টাকা আছে কিনা? নাহলে হয়রানি কনফার্ম!! অগ্নিজলের পার্টি দেবেন? বাংলার লিটার ৮০০ টাকা। প্যাকেটে ৫০ টাকা বেশী সিগারেটের দাম। শুটকির দাম চট্টগ্রামের শুটকি আড়তের তিন গুণ!!বিশ্বাস করুন , এটাই বাস্তবতা।
এজন্যই আমরা চট্টগ্রামের লোক ছুটে যাই হিল ট্র্যাক্টস , সিলেট ,সুন্দরবন বা কুয়াকাটাতে। ভুলেও ফুল সিজনে অন্তত কক্সবাজারের নাম নিইনা। কারণ যেটাকায় নেপাল ভূটান দার্জিলিং লাদাখ ঘুরে আসা যায় সম্মানের সাথে , সেটাকায় কক্সবাজারে গিয়ে হয়রানি হবো কোন দুঃখে??
কাজেই এরপর থেকে অন্তত ফুল সীজনে কক্সবাজার যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এদেশে অসংখ্য সুন্দর ট্যুরিস্ট স্পট ছড়িয়ে রয়েছে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত। সেখানেই ঘুরে আসুন। দেখবেন উনাদের তেজ এমনিতেই কমে যাবে। উনাদের জন্য রোহিঙ্গা ভাইরাই পারফেক্ট। দেশী ভাইদের কোনো প্রয়োজন উনাদের নেই।
People get what they deserve.