তসলিমা নাসরিন, কানিজ ফাতেমা, লোপা রহমান, আসাদ নুর, মেহরান সানজানা সহ যাদের একাউন্টকে রিমেম্বারিং করা হয়েছে এবং হচ্ছে, যারা এসব করছে, দয়া করে এদের হ্যাকার বলবেন না।

Blog আসিফ মহিউদ্দিন
তসলিমা নাসরিন, কানিজ ফাতেমা, লোপা রহমান, আসাদ নুর, মেহরান সানজানা সহ যাদের একাউন্টকে রিমেম্বারিং করা হয়েছে এবং হচ্ছে, যারা এসব করছে, দয়া করে এদের হ্যাকার বলবেন না। হ্যাকিং এর সাথে এদের দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোন সম্পর্ক নেই। এদের বড় অংশ দেশের মাদ্রাসার ছেলেপেলে, অল্পশিক্ষিত এবং দরিদ্র পরিবারের সদস্য। বর্তমানে এরা দেশের বিভিন্ন জায়গাতে সাইবার সিকিউরিটির ওপর কোর্স করছে, কোর্সগুলোতে দেখা যায় অধিকাংশই মাদ্রাসার ছেলে। এবং সেইসব কোর্সের বড়ভাইরা তাদের যা করতে বলে এরা দলবেধে সেসবই করে। ম্যাস রিপোর্টই এদের কাজ। হ্যাকিং এরা বোঝে না। এরা বোঝে দলবেধে আক্রমণ। ঠিক যেমনটি হুজুর বললেই এরা আল্ল্য্যাহোয়াকবর বলে চাপাতি নিয়ে ইসলামের শত্রু খতমে বের হতো, এখন এরা কীবোর্ড পেয়েছে লুকিয়ে কোপাকুপির জন্য।
আমার ইনবক্সের আদার বক্সে কমপক্ষে পঞ্চাশটি মেসেজ জমা হয়েছে, যাদের সাথে বন্ধুত্ব নেই বলে মেসেজগুলো আদার বক্সে রয়ে গেছে।  সেগুলোতে বিভিন্ন আইডি দিয়ে লেখা হয়েছে, আমি নাকি প্যালেস্টাইনে ইসরাইলি আক্রমণে মারা গেছি। তারা দুঃখপ্রকাশ করে আমার আইডিকে মৃত বলে ঘোষণা করতে ফেইসবুককে অনুরোধ করেছে। আমার একাউন্টটির কিছু তারা করতে পারেনি, তবে অনেকের একাউন্ট পেরেছে। প্রসিডিউওর সেইম। নিম্নমানের দলবদ্ধ আক্রমণ। এদের মেধা এবং যোগ্যতা অতি অল্প। এদের নিয়ে ঠাট্টা করা যায়, তবে দয়া করে এদের হ্যাকার বলে এদের জাতে তুলবেন না। 
সমস্যা হচ্ছে, ফেইসবুক সহ প্রায় সকল সোশ্যাল মিডিয়াই বিপুল জনসংখ্যার এসব মগজহীনদের ব্রশি গুরুত্ব দেয়। সংখ্যা এখানে জরুরি, মান নয়। ব্যবসার কৌশলই এটি। ফেইসবুক এখানে জনসেবা করতে আসেনি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় আসেনি, টাকা কামাতে এসেছে। 

সংশয় ডট কমের বিরুদ্ধে গত তিন বছরে এরা কয়েকলাখ আক্রমণ করেছে। আমার হোস্টিং কোম্পানিতে নালিশ দিয়েছে, ক্লাউডফ্লেয়ারের কাছে নালিশ দিয়েছে। এমন কোন জায়গা তারা বাদ রাখেনি, যে নালিশ করেনি। কিছুই লাভ হয়নি। এরপরে DMCA রিপোর্ট করেছে, তাতেও ফলাফল শুন্য। চ্যালেঞ্জ দিয়ে রেখেছি, পারলে সংশয় ডট কমকে বন্ধ করে দেখাও। মেনে নিবো তোমাদের ঈশ্বর সক্ষম। তোমাদের ঈশ্বর দেবদেবী ফেরেশতা বাহিনী সবাই মিলে মিশে চেষ্টা কর।  চেষ্টা চালিয়ে যাও।   
এই হতদরিদ্র পরিবারের মাদ্রাসার ছাত্ররা সারাজীবন কোরান হাদিস মুখস্ত করেছে। মাদ্রাসায় পড়াই এদের ভবিতব্য, কারণ এদের পরিবার অনেক সন্তান উৎপাদন  করে৷ এদের করারই বা কী আছে! এদের ভবিষ্যত হচ্ছে রমজান মাসে কোরান খতম আর জানাজা পড়িয়ে কিছু অর্থ উপার্জন। তাই এদের তেমন কোন ভবিষ্যত নেই। এই ছেলেদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে, মুক্তচিন্তার দরজা খুলে দিলে এরা দেশের চেহারা বদলে দিতে পারতো। যুক্তি তথ্য প্রমাণ, গণিত আর বিজ্ঞানের ছোঁয়া পেলে এরা দারুন জনশক্তিতে পরিণত হতে পারতো। কিন্তু এদের মেধা কাজে লাগছে ভার্চুয়াল জঙ্গিবাদে। এই দায় বাঙলাদেশ রাষ্ট্রেরই নিতে হবে। 
অন্ধবিশ্বাসকে তুচ্ছ বিষয় ভাবলে বা হালকাভাবে নিলে ভুল করবেন। যেকোন অন্ধবিশ্বাসই ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর, যখন তা বিপুল মানুষের বদ্ধমূল বিশ্বাসে পরিণত হয়।
আসিফ মহিউদ্দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *