দুই বাংলার ভেতর থেকে তারকাঁটা উঠিয়ে দেওয়া হোক।

Uncategorized

দুই বাংলার ভেতর থেকে তারকাঁটা উঠিয়ে দেওয়া হোক। দিল্লি, বম্বে যেতে ভিসা নেন আপত্তি নেই। কাঁটাতারে জমে থাকা বাঙালির আহাজারি গল্প।

বগুড়ার শেরপুর থেকে এসেছেন সাগুফতা রায়। ছোটো ভাই সরেন রায় থাকেন ওপার বাংলায়। সাগুফতা ভাইয়ের জন্য নিজের হাতে শীতের পিঠা পায়েস বানিয়ে এনেছেন। আর ছোট ভাই  নগেন রায় দিদির জন্য নিয়ে এসেছেন কাশ্মিরী শাল।

অমৃতা ঘোষ ভারতীয় সীমান্তে আর মা শর্মিলা ঘোষ বাংলাদেশ সীমান্তে। নাতি-নাতনি সবাই সবার সঙ্গে কথা বলছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে। শর্মিলা ঘোষ বলেন, ৮ বছর পর জামাই ও মেয়ের দেখা পেলাম। একে অপরকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা থাকলেও পারছি না। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া। ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছুঁয়ে দেখার, কিন্তু ছুঁতে পারিনি। জড়িয়ে একটু চিৎকার করে কান্না করি, তবে হয়তো দীর্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো থেকে একটু রেহাই পেতাম।

ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া থেকে মেয়েকে দেখতে এসেছেন অতনু বর্মণ।তিনি জানান, আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় পাসপোর্ট-ভিসা করে ভারতে যাওয়া হয় না। তাই প্রতিবছর এই দিনটার অপেক্ষায় থাকেন।

ঠাকুরগাঁয়ের রসুলপুরের মুর্তজা মিয়া জানান, মালদার কালিয়াচোখ থানায় তার ভাগ্নে আশরাফ আলী থাকেন। দেশ স্বাধীনের আগে তার বোনের ভারতে বিয়ে হয়। বোনের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া হয়নি। তাই এখানে এসেছেন সবার সঙ্গে দেখা করতে।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থেকে আসা রওশন এলাহী জানান, আমার চাচা ভারতে থাকেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তার সঙ্গে কোন দেখা হয় না । আজ সপরিবারে তার সাথে দেখা করতে এসেছি।

ব্যতিক্রমী এই আয়োজন প্রসঙ্গে মেলা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বলেন, দেশভাগের পর এখানে বসবাসরত অনেক বাসিন্দাদের আত্নীয় স্বজন ভারতে চলে যায়।এর ফলে দেখা যায় একই পরিবারের সদস্যরা দুই দেশের বাসিন্দায় পরিণত হয়েছেন। আলাদা দেশ হয়ে যাওয়ায় তাদের দেখা করার সুযোগ প্রায় মেলে না বললেই চলে। তাই তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও কমাতে প্রতিবছর ডিসেম্বরে  এই মেলা আয়োজন করা হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *