নতুন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট :
বয়স উনার মাত্র ৪১ বছর। পড়ালেখায় ছিলেন গড়পড়তা। কিন্তু সৃষ্টিশীল কাজে ছিলেন অসাধারণ।স্কুলে পড়াকালীন-একবার এক মন্ত্রী এসেছিলেন তাঁর স্কুলের অনুষ্ঠানে। স্কুলের রেজাল্ট বিশেষ ভালো না। মন্ত্রী পরামর্শ দিলেন- সবাইকে আরো মেধাবী হতে হবে। অজানাকে জানতে হবে, জ্ঞানকে বিকশিত করতে হবে।
কিশোর ছেলেটি তখন হাসতে হাসতে বলেছিলো- মাননীয় মন্ত্রী আমাদের জ্ঞান যত বাড়বে, আপনাদের কাজ তত কমবে।
আমরা কম মেধাবী বলেইতো আপনারা আজ বড় বড় মন্ত্রী ।
ছেলেটি যা বলার বললো। মানুষও যা বুঝার বুঝলো। এই ছেলেটি হয়তো একদিন নতুন পথ দেখাবে।
জীবন শুরু হলো তার স্ক্রিনরাইটার হিসাবে। তারপর অভিনেতা- কৌতুক অভিনেতা। তবে কোনো স্থুল, ভাঁড়ামি কৌতুক না। বিদগ্ধ , রসাত্মক, উইটি এবং সেপির অসাধারণ সমাহার। ছবির পরিচালনাও করলেন। পরিচালনা করতে করতে ভাবলেন- বিভিন্ন পদে অযোগ্য মানুষে দেশটা ভরে আছে। এই চিন্তা থেকে রাজনীতিতে আসলেন এবং বাজিমাত করলেন- ইউক্রেনের ৬ষ্ট প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়ে। Vladymyr Zelensky এই মাসের ২০ তারিখ প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন।
শপথ নেয়ার অনুষ্ঠানে তিনি শিশুর মতো সত্য কিন্তু দারুণ এক বিচক্ষণ কথা বললেন।
” নিজের যোগ্যতার কিন্তু প্রেসিডেন্ট হইনি। বরং প্রেসিডেন্ট হয়েছি- পূর্ববর্তী শাসকের অযোগ্যতায়।”
এরপর তিনি সবাইকে বলেন- একজন স্কুল প্রধান শিক্ষকের কাজ যেমন স্কুল পরিচালনা করা। আমারও তেমন কাজ- রাষ্ট্র পরিচালনা করা। কাজেই- আমি মূর্তিও না, প্রতিমাও না, আইকনও না। সুতরাং আমার ছবি অফিসের দেয়ালে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার কোনো দরকার নেই। আপনজনের ছবি লাগান। মন ভালো থাকলে কাজেও আনন্দ পাবেন। আমি আমার অফিসে আমার শিশুর ছবি লাগাবো। আপনারাও আপনাদের অফিসে শিশুর ছবি লাগান। মাতা-পিতার ছবি লাগান।
আর যেকোনো কাজ করার আগে তাদের দিকে একবার তাকান। এসব মানুষের ছবি সামনে রেখে কেউ কোনো বাজে কাজ করতে পারেনা।
আপনার বাবা-মা যেমন আপনাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। আপনারও শপথ হবে- আপনার শিশুকে আপনি আরো সুন্দর জায়গায় পৌঁছে দিবেন। আমি একসময় ছবির পরিচালনা করেছিলাম। কিন্তু দেশতো আর ছবি নয়, তবে সবাই মিলে চাইলে আমরা দেশকে ছবির মতোই করতে পারি।
সংঘমিত্রা প্রধান রায়ের ওয়াল থেকে।