নিজের হত্যার চেষ্টাকারীকে ক্ষমা করে দেয়া, উল্টো গণপিটুনিতে আহত সেই হত্যাচেষ্টাকারীকে হাসপাতালে দেখতে স্বশরীরে যাওয়া একমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব স্যার।

Uncategorized
নিজের হত্যার চেষ্টাকারীকে ক্ষমা করে দেয়া, উল্টো গণপিটুনিতে আহত সেই হত্যাচেষ্টাকারীকে হাসপাতালে দেখতে স্বশরীরে যাওয়া একমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব স্যার। 
.
বিশ্বখ্যাত ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনলজি ও বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চে ১৮ বছর কাজ করার পর কে দেশে ফিরে আসার কথা একটাবার ভাবতে পারেন?
তাও আবার   বিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রের লোভনীয়  চাকরির উচ্চবিলাসী জীবন আর মোটা অংকের বেতন, তারচেয়ে বড় হয়তো জীবনের নিরাপত্তা!  ছেড়ে দিলেন এক মুহুর্তেই। কোন দ্বিধা করলেন না। একমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব স্যার। 
.

 এলেন দেশে; তাও আবার রাজধানীতে না, সিলেটের  অখ্যাত এক বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই অখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়কে দিনে দিনে  নিয়ে গেলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিতে। 
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ধূলিকণাও আপনার হাতের উপর তৈরী। একমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব স্যার! 
.
বাংলাদেশে এই একজন মানুষকে দেখে প্রতিবার বিস্মিত হই বিমোহিত হই। একজন মানুষ যখন একটি প্রজন্মকে বারবার স্বপ্ন দেখান। দেখিয়ে দেন এগিয়ে চলার পাথেয়। বারেবারে এই মানুষটিকে আমরা অনুভব করি আমাদের প্রতিটি মুহূর্তে।
.
এই মানুষটির সমস্যা হাজারো মানুষ, কথিত বুদ্ধিজীবীরা অকপটে ছলনা আর ফাঁপা বাঁশে আটকে  রাখতে পারলেও আপনি পারেন না।   সব মিশে যাবে, তবুও মিথ্যায় করিবনা বসত।
 হাজারো ব্যথা ভুলতে পারি আপনাকে দিয়ে। আপনিই তো বলেন,  আমার সবচেয়ে গর্ব হয় আমি বাংলাদেশী। “আমরা এই দেশকে রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি। তিরিশ লক্ষ শহীদের গায়ের উপর দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে কোন সন্ধি নয়।
.
এদেশে একটা দুটো নয় হাজার মতের মানুষ থাকবে কিন্তু সবাইকে একাত্তরের চেতনা ধারন করতে হবে। এর বাইরে গেলে ইউ আর আউট।”
.
আপনার  জন্ম না হলে তরুণ প্রজন্মের বোধহয় বড় একটি অংশ আজো আঁধারে থাকতো। একটি প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ, আর স্বপ্নের বীজ বিপন করে দিতে কজন মানুষ পারে। তাইতো আপনি অনন্য স্যার। 
 .
আপনি যদিও বলেন ‘আমি বাচ্চাদের জন্য লিখি। সুতরাং তাঁর সাহিত্য একটি নির্দিষ্ট বয়সের পাঠকদের জন্য।’ কিন্তু একটা সময় তো  বাংলাদেশে সাইন্স ফিকশন মানেই ছিলো জাফর ইকবালের বই। 
.
লিখেছিলেন আপনি একটা লেখায়। “এই দীর্ঘশ্বাস এবং হাহাকারের দেশ, এই ঘুণে ধরা, পচে যাওয়া সমাজ আমরা পাল্টে দিতে পারি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রথম শিশুটিকে উপহার দিতে পারি বিশুদ্ধ পৃথিবী।” ঠিক যেমন আপনি দীপ্তিমান রেখা। আপনি এক মশাল বাহক। 
.
আর কিচ্ছু না কেবল একটা কথা ভাবুন তো; আপনাকে খুন করার জন্য বদ্ধ পরিকর একটা গোষ্ঠী, বহুবার খুনের হুমকি দিয়েছে, উড়ো চিঠিও এসেছে বারবার।  তারপর একদিন কোনভাবে না কোনভাবে আপনাকে সুযোগ পেয়ে ছুরি ঢুকিয়ে দিলো। তারপর ঐ খুনের চেষ্টাকারী ধরাও পড়লো। 
.
আপনি হলে কি করতেন? কী করতেন নিজেকেই একবার জিজ্ঞেস করুন। আর উনি কি করেছেন? 
নিজের হত্যার চেষ্টাকারীকে ক্ষমা করে দেয়া, উল্টো গণপিটুনিতে আহত সেই হত্যাচেষ্টাকারীকে হাসপাতালে দেখতে স্বশরীরে গিয়ে আহত খুনের চেষ্টাকারীর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়া!!
.
 একমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব স্যার।  লেখক, রাজনৈতিক দর্শনের বাইরে এক মানুষ জাফর ইকবাল শতাব্দীতে একবার জন্মায় বোধহয়!! এই মানুষটার সামনে যে একবার গেছে আর কথা শুনেছে, তারপরের দিন তাঁকে ভালোবাসতে বাধ্য। 
.
জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা স্যার আপনার জন্য। আপনি শতায়ু হোন জাফর ইকবাল  স্যার।  🙏💞

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *