মাঝে মাঝে খুব আফসোস নিয়া ভাবি, এই বদ্বীপে কি মালগুলা পয়দা হইছে! বুঝলাম তোর পরদাদা বাগদাদ থিকা আইসা তোর পরদাদীরে দুইচা তোগো বোগদাদী বংশের জন্ম দিছে। কিংবা জাহাজ থামাইয়া। তোর শইলে আরবী রক্ত, তুর্কী রক্ত, ইংরেজ রক্ত, দিনেমার রক্ত, ওলন্দাজ রক্ত, পর্তুগীজ রক্ত, ফরাসী রক্ত, হাবসি রক্ত, মোগল রক্ত, পাঠান রক্ত। তো মুড়ি খা! আমরা যারা আদি দ্রাবিড় আমরা যারা মাটির টানরে, জন্মভূমিরে মার মতো মনে করি তাগো উপর তোগো এতো খার ক্যান? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তোগো কাছে একটা ব্যবসা! ক্যানরে মাদার**? ধর্ম ব্যবসা কিংবা স্বাধীনতাবিরোধী ব্যবসায় কামড় বসাই এই কারণে? ট্যাকা কম পরে ভাগে?
মেজাজটাই খিচ্চা গ্যাছে! আরে একাত্তরে সাড়ে সাত কোটি মানুষের কয়জন বন্দুক ধরছিলো? কয়জন ‘জয় বাংলা’ বইলা মৃত্যুরে হাসিমুখে ওয়েলকাম কইতে প্রস্তুত ছিলো? এই মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা কতো? আইডিয়া আছে? আজকে আরামে বাংলায় কথা কইতে পারোস, বাংলাদেশ বইলা ফাকাফাকি দোচাস কার হ্যাডমে? ওই ক্ষনিকের পো*রা কাগো হ্যাডমে? আজকে মুক্তিযোদ্ধার পোলামাইয়া কোটায় চাকরি পাইলে তোগো চোখ টাটায়! আজকে তাগো ভাতা বাড়লে তোগো চোখ টাটায়! পাঞ্জাবি রক্ত টগবগায়া ফোটে? তোর দাদীরে জিগাইলে জানবি লজ্জায় তোর বাপের জন্মপরিচয় গোপন রাখছিলো। যারা প্রতিবাদী হইছে তাগোই গলায় পাড়া দিয়া ধরোস?
কয়দিন আগের কথা? এই ২০০৬ সালে লালু বীরপ্রতীকরে নিয়া লেখছিলাম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীক। ১২ বছর বয়সে গ্রেনেড হামলা কইরা পাকি বাংকার উড়ায়া দিছিলো কয়েকটা। সেই লালু ঢাকা মেডিকেলের বারান্দায় কাতরায়া কাতরায়া মারা গেছে। কেউ দেখতে আসে নাই। মুক্তিযোদ্ধারা জমিদার হওয়ার জন্য যুদ্ধে যায় নাই। যে যার অবস্থান থিকা যুদ্ধে গেছে দেশের টানে, মায়ার টানে। আবার সেই অবস্থানেই ফেরত আসছে। ’৭৫ এর পর এই দেশে সবচেয়ে অবহেলিত প্রজাতির নাম মুক্তিযোদ্ধা। লালুর থিকা খারাপ অবস্থায় অনেকে দিনাতিপাত করছে। তখন ক্যানো তোরা গলা উচাস নাই। ক্যানো এখন রাস্তায় জুতা সেলাই করা মুক্তিযোদ্ধাগো দেখলে, রিকশাচালক মুক্তিযোদ্ধা দেখলে তোগো আবেগ উথলায়া উঠে? আমরা বুঝি না?
আজকে মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পায়। আজকে তারা মারা গেলে জাতীয় পতাকাসহ রাষ্ট্রীয় সম্মাণ পায়। তাগো চিকিৎসা ফ্রি। এতদিন এই সম্মাণ দেস নাই ক্যান? ওই ক্ষনিকের পো*রা দেস নাই ক্যান? তোগো বাপেরা জাতীয় পতাকা লাগায়া গাড়ি কইরা সাই সাই চলছে, আর সেই গাড়ি মুছতে বাধ্য হইছে মুক্তিযোদ্ধারা। যা করছে এই সরকার করছে মুক্তিযোদ্ধাগো জন্য। তোরা গরীবের লগে তুলনা দেস? বলোস দরিদ্র মানুষের ভাতা দরকার মুক্তিযোদ্ধার না? আরে বরাহ ছানা তোর বাপেরা তো মুক্তিযোদ্ধাদের দারিদ্রের নীচে নামায়া দিতে সফল হইছিলো। টাইনা তুলছে এই সরকার। জিয়ার কথা ভাব। এরশাদের কথা ভাব। রাস্তায় ফকির দেখলে ট্রাকে তুইলা হিলট্র্যাক্ট পাঠায়া দিছে। শেখ হাসিনা কি করছেন? লাখ লাখ মানুষরে ঘর দিছেন, জমিন দিছেন। যতদিন জীবিত আছেন তার লক্ষ্য কেউ যেন না খাইয়া মরে সেটা নিশ্চিত করা।
মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশের জন্য জীবন বাজি রাখছিলেন। হ, বড়লোক হওয়ার আশায় না। আবার তাচ্ছিল্যের শিকার হইবেন এইটাও ভাবেন নাই। শেষ বয়সে তাগো এই লজ্জা এই অপমান থিকা মুক্তি দিছেন শেখ হাসিনা। মনে রাখিস এই বাংলার ওই পতাকা উড়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার বন্দুকের নলে। তার ঘামে তার রক্তে এই দেশ বাংলাদেশ। তোর বাপের ভাষায় বলি- শ্লা বা*ন দোচ…