প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন,
“বাংলা ভাষা আহত হয়েছে সিলেটে, নিহত
হয়েছে চট্টগ্রামে”….
চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে ব্যপারটা আসলেই
চিন্তা করার মত। সত্য বলতে কি বাংলা ভাষার
সাথে চট্টগ্রামের ভাষার ৭০ ভাগই নূন্যতম মিল নেই।।
যেমন টা ধরেন:
মুরগী কে চট্টগ্রামের ভাষায় বলে “কুরো”…
মোরগ কে বলে ” লাতা কুরো”..
শালিক পাকি কে বলে “দেচ্ছো”..
তেলাপোকা কে বলে “তেইল্লেচুরা”
কাক কে “হাউওও”
খারাপ মানুষ কে “জারগো”
মাউলানা কে “মুলিছাফ”
পেয়ারা কে “গুয়াছি”
শিমের বিচি কে “হাইস্যে”
সমুদ্র কে “দইজ্জে”
ইত্যাদি ইত্যাদি…।
আর চট্টগ্রামের ভাষায় এমন কিছু এপিক
এক্সপ্রেশন আছে যা শুধু বাংলা কেন! পৃথিবীর
কোন ভাষায় অনুবাদ করা যাবে না।
যেমন ধরেন :
অবাইজ্জেকুদা!!
আত্তামারেবাপ!!!
মাইল্লেফিরে!!!
অবাজিরে!!
উম্মারেম্মা।
এরকম আরো শত শত এক্সপ্রেশন।।
তাছাড়া চটগ্রামের প্রবাদ গুলোও পুরোপুরি
ভিন্ন ।
যেমন ধরেন ” পুন্দত নাই তেনা, মিডে দি ভাত
হানা” (” পাছায় কাপড় নেই, তাও মিঠা দিয়ে
ভাত খেতে চায়)..
ফুয়াদেল্লাই ছাড়িত ন পারির,
কেড়ারলাই গিলিত ন পারির।
বাংলা অনুবাদ ঃ স্বাদের জন্য
ছাড়তে পারছি না, কাঁটার জন্য
গিলতে পারছি না।।
হাত পাঁচ চইদ্দ, দুই টিয়া নইদ্দো।
বাংলা অনুবাদ ঃ সাত পাঁচ চৌদ্দ, দুই টাকা
দিয়ো না।।
ঘরের গরু ঘাড়ার খের ন হায়।
বাংলা অনুবাদ ঃ ঘরের গরু সামনের মাঠের ঘাস
খায় না।।
এরকম হাজারো প্রবাদ আছে। যা বাংলা ভাষায়
বুঝে নেয়া অনেক কঠিন।।
মানুষ এই ভাষা কে কঠিন,কুৎসিত, যে যাই বলুক,
এটিই আমাদের মায়ের ভাষা। এ ভাষা শেখা
যায় না। যুগের পর যুগ মানুষ চট্টগ্রাম থেকেও এ
ভাষা আয়ত্ত করতে
পারেনা।। এ ভাষা জন্ম থেকে আয়ত্ত করতে
হয়।।।
বেচে থাকুক চাটগাঁইয়া ভাষা অনন্ত কাল।