প্রসঙ্গ – শিকাগো ধর্মমহাসভায় ঐতিহাসিক বিজয় –
শুধুমাত্র ঈশ্বরপ্রাপ্তি বা ঈশ্বরজ্ঞানের মোক্ষপ্রাপ্তি হলেই যদি জগৎসংসার উদ্ধার হয় তাহলে চিন্তার কিছু থাকে না আর। কিন্তু তা নয়, কোন যুগেই তা হয় নি, হওয়ারও নয়। বস্তুতান্ত্রিক সমাজের নিজস্ব ধরণের পাশে নিজস্ব আকাঙ্খাও থাকে, যা অধ্যাত্মবাদের সমান্তরাল ধারায় প্রবাহিত হয়। যদি দুধারার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় থাকে ও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায় সামর্থ্যবান হয় সমাজ ও রাষ্ট্র, অসাম্য সৃষ্ট হলে বিঘ্নিত হয় গতি এবং প্রথমে শ্লথ ও পরে যা হয় সম্পূর্ণরূপে স্তিমিত। তাই struggle for identity চলে অনবরত।
সেপ্টেম্বর ১১, ১৮৯৩ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত পৃথিবীর সর্বপ্রথম ধর্ম মহাসভায় উপস্থিত ছিলেন এক বাঙ্গালী যুবক ভারতবর্ষ হতে, তাঁর মনোরম উজ্জ্বল রক্তিম পরিচ্ছদ-পরিহিত, তাম্রাভ মুখমণ্ডল, শীর্ষে হরিদ্রাবর্ণের বৃহৎ উষ্ণীষ পরিচয় দিয়েছিল তাঁর আপন ধর্মের। যুবক হিন্দু নিশ্চিতভাবেই: প্রতি মূহুর্তে তাঁর ওজস্বিতা প্রকাশ করছিল এক অন্তর্নিহিত, অব্যক্ত প্রত্যয়ের। মাতা সরস্বতী, পরম আরাধ্য ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণকে স্মরণ করে বজ্রদৃঢ় কন্ঠে বক্তৃতাকালের প্রারম্ভেই বলে উঠলেন “Sisters and Brothers of America” যা উপস্থিত প্রায় ১০, ০০০ সদস্যের মধ্যে শিহরণ জাগাতে যথেষ্ট। প্রত্যুত্তরে উচ্ছসিত দর্শকের standing ovation-এর অভিমুখ হলেন একমাত্র তিনি। দু’ মিনিটের সেই করতালির পরে তিনি বলে উঠলেন, “It fills my heart with joy unspeakable to rise in response to the warm and cordial welcome which you have given us. I thank you in the name of the most ancient order of monks in the world; I thank you in the name of the mother of religions, and I thank you in the name of millions and millions of Hindu people of all classes and sects…………………….” এক মূহুর্তে বিশ্ব সংসারে প্রতিষ্ঠিত হলো a definite identity craved for centuries or the Hindu identity… বক্তা স্বামী বিবেকানন্দ।…. one of the most outstanding, surgical dispositions of identity politics in the last two centuries and also for those yet to come..
পরিশেষে, এই identity/আগ্নেয় চিন্তাধারা ও তার পবিত্র কাঠিন্য বজায় রাখতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে পর্যদুস্ত ও লক্ষ্যভ্রষ্ট বাঙ্গালী হিন্দু সমাজ। গত দু সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণায় স্থিত দেগঙ্গাতে দুটি হিন্দু নাবালিকার ধর্ষণ হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাবৎ হিন্দু সমাজ নির্লিপ্ত: মৌনতাই তার দায় এড়ানোর মোক্ষম পথ। দু – তিন শতাব্দী পূর্বে বঙ্গের হিন্দু সমাজে অকাল বৈধব্য প্রাপ্ত নারীকে – তা শিশু হোক বা কুমারী, তরুণী বা যুবতী – সুদূর বারাণসীর আশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রথা ছিল। কিন্তু তারপর সে কোন নবাব বা মনসবদার বা দেবী সিংহের মতো জমিদারের লালসায় ধরা পড়তো কিনা তার খোঁজ কেউ রাখতো না। হারিয়ে যেত সে অন্ধকারে। পুনরায় সেই যুগ ফিরে আসছে। স্বামীজীর আগ্নেয় স্পর্শে একদা জাগ্রত হিন্দু সমাজের এই ত্রাহ্যস্পর্শ, পুনর্মূষিকো ভব অবস্থা একমাত্র চর্চার অভাবে।
কেন এই বিপর্যয়? সম্যক চর্চার অভাবে। আক্রান্ত বা পরাক্রান্ত – চর্চা বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যা হিন্দু করেনি, শান্তিপ্রিয় বলে নয় বরং ভেড়ুয়া বলেই করেনা কিন্তু করতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দের stringency – র পথেই ফিরতে হবে হিন্দুকে।
ওঁম তেজো অসি তেজোময়ী দেহি।।