‘জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েদের কেউ সহজে বিয়ে করতে চায় না। কারণ সারা রাত এরা ঘোরাফিরা করে’
কথাটি কোন ওয়াজি মোল্লার নয়, খোদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় বলেছেন। এদিকে একদা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদ্দীন হলে শিক্ষার্থীরা এখন টুপি মাথায় দিয়ে লাইন ধরে বসে কিতাব পড়ছে। দোয়েল চত্বর দিয়ে হেটে যাওয়া বোরকাবৃত ছাত্রীর ঢল দেখে মনে হয় এ যেন সুদানের খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্য। এভাবেই আমাদের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে এক একটি কওমী মাদ্রাসার রূপ ধারণ করছে।
একদা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল আমাদের যাবতীয় জাতীয় অর্জনের সূতিকাগার আজ সেসব এক একটি ধর্মান্ধতার ভাগারে পরিনত হচ্ছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কথা বলার রুচিহীনতা এখন নিকৃষ্টতম মুর্খ নির্বোধের পর্যায়ে। অথচ দীর্ঘ চার পাঁচ দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলতে আমরা যাঁদের দেখেছি তাদের অধিকাংশই ছিলেন জ্ঞান তাপস বিদগ্ধ মানুষ। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হত হুমায়ুন আজাদ, ড.আহমেদ শরীফ, মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশার মত জ্ঞানী শত সহস্র বিদগ্ধ জন।
এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষকরা সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, রাদারফোর্ড জগদীশ চন্দ্র বসু চার্লস ডারউইনের কথা বলেন না তারা আয়াতুল কুরসি, বুখারী শরীফ হাদীস কিতাবের আলোকে বিজ্ঞান পড়ান। সেখানে এক একজন শিক্ষকের মোচহীন মুখে প্রলম্বিত কুদরতি দাঁড়ি দেখে তাদের পা*ঠা বলে যে কারো ভ্রম হতে পারে, তবে এরা যখন কথা বলতে শুরু করেন তখন সবাইকেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোল্লা ভিসির মতোই মফিজ বা মদন- মদন মনে হয়।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে কত দ্রুত একটি এগিয়ে যাওয়া জাতি পুনঃ শত বছর পিছিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কওমী মাদ্রাসায় পরিনত হবার ঘটনাই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
ভাবতে অবাক লাগে একাত্তরে এই জাতিই একটি স্বাধীন সার্বভৌম ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জন্য অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল!! পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মান্ধতার দেশের নাম এখন বাংলাদেশ যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থেকে শুরু করে ছা*গল পা*ঠা সবাইকেই এক দরে বাজারে বিক্রি করা যায়।