বাজপাখি এমন একটি পাখি যাকে আমরা ঈগল বলেও চিনি।

Uncategorized

বাজপাখি এমন একটি পাখি যাকে আমরা ঈগল বলেও চিনি। যে বয়সে বাকি পাখির বাচ্চারা চিৎকার করতে শেখে,সে বয়সে মেয়ে ঈগল তার বাচ্চাকে তার পাঁন্জাতে ধরে নিয়ে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে যায়। পাখির দুনিয়ায় এত কঠিন থেকে কঠিন প্রশিক্ষণ আর নেই।
মহিলা বাজ তার বাচ্চাকে নিয়ে প্রায় ১২  কিমিটি উপরে উঠে যায়। আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ যে উচ্চতায় উড়ে সেই উচ্চতায় উঠতে বাজ সময় নেয় ৭ থেকে ৯ মিনিট।
এইবার শুরু হলো ছোট্ট বাচ্চাটির কঠিন প্রশিক্ষণ। তাকে এখন এখানে বলা হবে তুমি কি জন্যে জন্মগ্রহণ করেছো। তোমার দুনিয়া কি? তোমার উচ্চতা কতো? তোমার ধর্ম অনেক অনেক উপরে…এই বলে মেয়ে বাজ তার পাঁন্জা হতে বাচ্চাকে ছেড়ে দেয়।
উপর হতে নীচে আসার দূরত্ব প্রায় ১২ কিমিটি। বাচ্চাটি বুঝতেই পারে না তার সাথে কি হতে চলেছে। ৭  কিমিটি পড়ার পর তার ডানা দুটি খুলে যায়। জীবনের প্রথম রাউন্ড যখন বাচ্চা বাজ তার ডানা ঝাপটায়। এখন সে পৃথিবী থেকে ৩০০০ হাজার মিটার উপরে। এখনো সে উড়তে শেখে নাই। এরপর সে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে।এখান হতে সে তার নিজস্বতা বুঝতে পারে। এখন সে পৃথিবী হতে ৭০০/৮০০ মিটার উপরে। কিন্তু এখনো তার ডানা পালক শক্ত হয় নি। যখন সে পৃথিবী হতে ৪০০/৫০০ মিটার উপরে,তখন সে ভাবে এই বুঝি আমার জীবনের শেষ যাত্রা।
হঠাৎ একটি শক্ত পাঁন্জা তাকে হেফাজতে নিয়ে ডানার মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। এই পাঁন্জা তার মায়ের। তাকে নিয়ে আবার উপরে উঠে যায়। এইভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন,যতক্ষন সে উড়তে শিখছে। এই প্রশিক্ষণ ঠিক আমাদের কমান্ডোর মতো। তারপর পৃথিবী একটা বাজপাখি পায়। যে তার শরীরের ওজনের হতে দশগুন ভারি একটি প্রানি শিকার করে।
হিন্দিতে একটি কথা আছে,” ফ্যালকনের বাচ্চারা মাথায় উড়ে না”। সে করতে চলেছে জীবনের কঠিন হতে কঠিনতম সমস্যার মুখোমুখি। লড়াই করা শেখা,,প্রয়োজন ছাড়াই সংগ্রাম করতে শেখা।
বর্তমান সময়ের অনাবিল সুখের অভ্যাস আর বাবা মায়ের অফুরন্ত ভালোবাসা, আপনার বাচ্চাকে বানিয়েছে ব্রয়লার মুরগির মতো যার পা শক্ত হলেও হাঁটতে পারে না। তার ডানা ভারী কিন্তু উড়তে পারে না। কারন  টবের গাছ আর জঙ্গলের গাছে আকাশ-পাতাল তফাৎ।
©

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *