স্কুলে ক্লাস সিক্সের ইতিহাস ক্লাস চলছে –
শিক্ষক পড়াচ্ছেন –
-বৈদিক যুগে লেখার অভ্যেস ছিল না,আর্যরা বেদ শুনে শুনে মনে রাখতো বলে বেদের অপর নাম শ্রুতি। মনে থাকবে সবার?
ক্লাসে একসাথে রোল উঠলো, হ্যাঁএএএএএ স্যার।
মাঝের বেঞ্চ থেকে একটা কচি হাত উঠে মাস্টারমশাই এবং সকলকে অবাক করে দিয়ে বললো –
-আপনি ভুল পড়াচ্ছেন মাস্টারমশাই।
-মানে? আমি ভুল পড়াচ্ছি? তোমার সাহস তো কম না হে ছোকড়া!
-ক্ষমা করবেন মাস্টারমশাই, তবে বেদ শুনে শুনে মুখস্ত রাখা হতো বলে বেদের অপর নাম শ্রুতি নয়।
-তাই? তাহলে সঠিকটা কি শুনি?
-আসলে মাস্টারমশাই এই তথ্যটা আমাদের জানিয়েছেন জার্মান অধ্যাপক ম্যাক্স মূলার, এবং সেটি নিতান্তই ভুল। অধিকাংশ পাঠ্যতেই অবশ্য এটি স্থান পেয়েছে। সত্যিটা হল, বেদের অধিকাংশ মন্ত্রই সুর সংযোগে গাওয়া হত। আর আমরা সকলেই জানি সংগীত গুরুমুখী বিদ্যা। শুধু স্বরলিপি পাঠ করে সংগীত শিক্ষা করা যায়না। তাই তা শ্রবণের মাধম্যেই সম্ভব। তাই বেদের অপর নাম শ্রুতি। আর হ্যাঁ বৈদিক ঋষিরা যে লিখতে জানতেন ‘ঋকবেদ’-ই তার চরম প্রমান।
-এসব তুমি কোথা থেকে জানলে?
-আমার বাবা আমাকে বলেছেন। আর এও বলেছেন এমন অনেক ভ্রান্ত তথ্য পাঠ্য পুস্তকে আছে সময় করে তিনি আমায় সত্যিটা বলবেন। আর হ্যাঁ, পরীক্ষায় ভুলটাই লিখবো মাস্টারমশাই, নাহলে আপনারা আমায় আবার নম্বর দেবেন না। সত্যিটা নাহয় শুনে শুনেই মনে রাখলাম।
তথ্য – ইতিহাসের আর্য্যসমস্যা ও ভারতবর্ষ – মুক্তি মিত্র