১. আইয়ানকে স্কুলে ভর্তি করাতে যেয়ে জানলাম, ক্লাস ওয়ানের আগে আরো ৩ টা ক্লাস আছে প্লে, নার্সারি, কেজি, তারপর ওয়ান।
২. আইয়ানের বয়স ৫ বছর, ক্লাস ওয়ানে উঠতে ৩ বছর লাগবে এটা ভেবে প্লে বাদ দিয়ে নার্সারিতে ভর্তি করলাম।
৩. প্রথমদিন বাংলা হোমওয়ার্ক দিয়েছে ক-ন পর্যন্ত, ইংরেজি A তে Apple মানে আপেল, Ant মানে পিঁপড়া এটা পৃষ্ঠা ভর্তি করে লেখতে হবে, আরবি প্রথম ১২ অক্ষর।
৪. পরদিনও একইভাবে নতুন হোমওয়ার্ক। এরপর স্কুলে যেয়ে জানলাম একজন বাচ্চা প্লেতে সব শিখে আসে, এখন সে শব্দ গঠন করতে পারে ধরে নিয়েই আমরা আগাবো। আপনার ছেলেকে প্লেতে ভর্তি করান
৫. আইয়ানের বয়স ৫ বছর, ক্লাস ওয়ানে উঠতে ৩ বছর লাগলে সে মেট্টিক পাশ করবে ১৮/১৯ বছরে, যে বয়সে আমরা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছি।
৬. আবার কেউ যদি আমাকে যুক্তি দেখান যে, স্কুলে দিতে দেরি করে ফেলেছি সেটাও মানতে নারাজ আমি। কারণ একজন বাচ্চাকে জন্মের পর তার শৈশব আপনি নষ্ট করতে পারেন না, জন্মের পরপর ৩-৪ বছর বয়সে বইয়ের বোঝা চাপায়ে দিতে পারেন না, এটা অমানবিক।
৭. প্রধান শিক্ষকের কাছে যেয়ে বললাম, আইয়ান নার্সারিতেই থাকবে, নিচে নামায়ে দিলে ওর মন খারাপ হতে পারে। ও ক্লাসে আসবে যাবে, স্কুলের সাথে পরিচিত হবে অন্যকিছু উদ্দেশ্য এখানে নাই, যেটুকু শিখবে আনন্দের সাথে শিখবে, না পারলে না শিখবে। আমার ছেলেকে ফাস্ট করাতে হবে এটা আপনাদের কাছে আমার চাওয়া না, ওর যা পড়াতে হয় সেটা আমি বাসায় দেখবো, এ বয়সে চাপ দেওয়ার দরকার নাই।
৮. আমার জন্ম, বেড়ে উঠা সবই প্রত্যন্ত গ্রামে। জেলাশহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে, থানাশহর থেকে প্রায় ১২-১৪ কিলোমিটার দূরে। আমাদের প্লে নার্সারি ছিলনা, আমরা ৬ বছরে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছিলাম। ক্লাস ওয়ানে অ-আ, ক-খ শিখেছিলাম, এটাতো আমাদের লাইফে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখনকার বাচ্চাদের এমন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেনো? নাকি সিস্টেমই চেইঞ্জ হয়ে গেছে।