ব্যাপারটা ভাস্কর্য রক্ষার নয়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য রক্ষার। ইসলামিক দলগুলো রাজু ভাস্কর্য কিংবা অপরাজেয় বাংলা ভেঙে ফেলার দাবি করার পরের দিন তা নির্ঘাত সরিয়ে নেয়া হতো। যেহেতু ইসলামিক দলগুলো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে সেহেতু সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এমনকি ঘোষনা দিয়েছে উচ্চস্বরে ওয়াজ করলে তা বন্ধ করে দিবে! এই একটি কথাই বলেছিলাম আজ থেকে পাঁচ বছর আগে। তবে আরো বিনয়ের সঙ্গে। কিন্তু সে সময় আমার বিরুদ্ধে গ্রামে নানা কথাবার্তা সহ ভয়ানক কর্মকান্ড সংগঠিত করা হয়েছিলো।
যা হোক সে বিষয়। আলাপের বিষয়টা হলো ভাস্কর্য বনাম মূর্তি। অনেকে ভাস্কর্যকে বৈধতা দিচ্ছেন ‘ভাস্কর্য আর মূর্তি এক জিনিস নয়’ বলে! ব্যাপারটা মারাত্মক আশ্চর্যের! ভাস্কর্যের বিরোধীতা করা যাবে না কারণ এটার পূজো করা হয় না, আরাধনা করা হয় না বলে। কিন্তু যেগুলোর পূজো করা হয়, আরাধনা করা হয় সেগুলো ভেঙে ফেলা যাবে?
আদতে ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে এদেশীয় সুশীলরা যে পার্থক্য উপস্থাপন করছেন তা একেবারেই অযৌক্তিক।
ভাস্কর্য আর মূর্তির মাঝে পার্থক্য কিছুই নাই।
আপনার মন চাইলে আপনি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রদীপ জ্বেলে, উলুধ্বনি দিয়ে, শাঁখ বাজিয়ে আরাধনা করতে পারেন – সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আবার শহরের মোড়ে মোড়ে দেবী দুর্গার ভাস্কর্য গড়ে তাকে পূজো না করেও থাকতে পারেন। সুতরাং ভাস্কর্য আর মূর্তির তফাৎ বের করে যারা ভাস্কর্যকে বৈধ করতে চান তারা মূলত সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিচ্ছেন। অতএব এসব ভণ্ডামি বন্ধ করুন। এইদেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যেমন হবে তেমন থেমিসের ভাস্কর্যও হবে।
©