পার্থক্যটা স্বপ্নে ও সাহসে –
ভারতের সবচেয়ে মেধাবী, উচ্চ বেতনধারী তরুণদের ৩৫% চাকুরি ছেড়ে দিচ্ছে! কেন?
কর্পোরেটরা এই মেধাবী তরুণদের বেতন দ্বিগুণ, তিনগুণ বাড়িয়েও রাখতে পারছে না। কারণ,
ওই তরুণরা বুঝে গেছে তার যা বেতন পায়, নিজের বিনিয়োগে মেধা খাটালে তারা এর চেয়ে অনেক বেশি আয় করতে পারবে এবং অন্যের স্বপ্ন নয়, নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে।
তো বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা কী করছে?
সারা দেশে সরকারি চাকুরির ভুতে পেয়েছে। সবাইকে। এটি খুব বিপদের কথা।
সবাই চাইলেও সরকারি চাকুরি পাবে ২%-৩%। বাকি ৯৭% হয় বেসরকারি চাকুরি করতে হবে অথবা ব্যবসা করতে হবে। ৪/৫ বছর সরকারি চাকুরির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে লাখ লাখ ছেলেমেয়ে দুকূলই হারায়। বেসরকারি চাকুরির জন্য এদের বড় অংশটাই টোটালি আনফিট হয়ে পড়ে।
সরকারি বা বেসরকারি চাকুরিজীবীদের বেতনের উৎস কিন্তু এক – টাকার উৎস কিন্তু ব্যবসায়ীদের দেয়া ট্যাক্স এবং তাদের ব্যবসার কর্পোরেট ট্যাক্স, পণ্য আনা নেয়ার শুল্ক থেকেই আসে।
তো তরুণ বয়স থেকে ব্যবসার দিকে কেন যাচ্ছি না আশানুরূপ হারে? ভারতে যাচ্ছে এবং আগামী ২০/৩০ বছরে যে বড় অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য হবে ভারত, তার মূল চালিকা শক্তি হবে এই উঁচু বেতনের চাকুরি ছেড়ে দেয়া তরুণ উদ্যোক্তরা।
তো আমরা কি পারি না?
অনেকেই যে টাকা বেতন পান, একটু সাহস করে সেই শ্রমটা নিজের প্রতিষ্ঠানে দিলে তার চেয়ে বহুগুণ আয় করতে পারেন।
আমরা যখন বুয়েট থেকে পাশ করি , তার ৯০% বিদেশে যাওয়ার পরেও আমরা যারা থেকে যাই তাদের বেশিরভাগই চাকুরি করে মধ্য বয়সে পৌছে গেছি।
এর মধ্যে যারা ব্যবসা শুরু করেছিলো শুরু থেকেই সাহস করে, আজ তাদের ১ মাসের আয় আমাদের ১৫/১৬ বছরের বেতনের চেয়েও বেশি!
আমাদের সাথে ওদের পার্থক্য কোথায় ছিলো?
প্রথম পার্থক্যটা স্বপ্নে আর দ্বিতীয় পার্থক্যটা হলো স্বপ্নের পেছনে দৌড়ানোর সাহস ছিলো।
স্বপ্ন দেখা আর সেই স্বপ্নের পেছনে দৌড়ানোর সাহস আছে এমন তরুণ মানুষগুলো অনেক বেশি দরকার।
৮০% মানুষ চাকুরি করবে , তাদের বেতন দেয়ার জন্য, দেশ এগিয়ে নেয়ার জন্য ব্যবসা হচ্ছে মূল চালিকা শক্তি।
২০% তরুণ মেধাবী উদ্যোক্তা কই? হাই পেইড আমাদের ছেলেমেয়েরা একটা দামি অ্যাপার্টমেন্ট আর গাড়ি আর ছেলেমেয়েদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে পারলেই বিশাল সাফল্য।
এরা অনেক বেশি কিছু করার সামর্থ্য রাখে। দরকার শুধু ভারতের ওই তরুণদের মতো উঁচু বেতনের চাকুরিটা ছাড়ার সাহসটা। সবার নয়, ৩৫% এর সেই সাহসটা থাকলেই দেশ বদলে যাবে।
দেশ বদলাবে চাকুরি দিয়ে নয়, ব্যবসায়ীদের দিয়ে। তাদের সাপোর্ট দেয়াই হচ্ছে সরকারি বেসরকারি চাকুরিজীবী, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
এক একটা দেশের উন্নয়নের এক এক পর্যায়ে একটা বিশাল সুযোগ আসে। ৪৫ বছর পরে বাংলাদেশ এখন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে –
সময়টা ছোট,মাঝারি, বড় উদ্যোগের।
লিখেছেন:(নিজাম উদ্দিন ভাই)