মরু সংস্কৃতির বিস্তার: পর্ব -০৩ (ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে)

Uncategorized

মরু সংস্কৃতির বিস্তার: পর্ব -০৩ (ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে)

“আমার এ লেখা যিনি পড়ছেন, হ্যাঁ আপনাকে বলছি,
লিখে রাখুন, আজকে যারা ভাষ্কর্য হারাম হারাম করে চিল্লাচ্ছে তারা যদি ক্ষমতা পাই তাহলে কোথাও জাতীয় সঙ্গীত, লালন সঙ্গীত, রবীন্দ্র সংগীত, পালা গান প্রচারিত হবে না৷ কোথাও তার পোষ্টারও থাকবে না। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস এসব উদযাপনও বন্ধ হয়ে যাবে। পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাগুনের সকল উৎসব নিষিদ্ধ হবে। রমনা থাকবে না, ছায়ানট থাকবে না, উদীচী থাকবে না, রবীদ্রসঙ্গীত থাকবে না, গ্রন্থাগার থাকবে না, থিয়েটার থাকবে না, মঞ্চ থাকবে না, চলচ্চিত্র থাকবে না, মোশারফ করিমের হাসির নাটক দেখতেও পারবেন না, টিএসসি থাকবে না, বেইলী রোড থাকবে না, জাতীয় জাদুঘর থাকবে না।  ক্রিকেট থাকবে না, ফুটবল খেলা দেখতেও পারবেনা। নারী খেলোয়াড় তো চিন্তার বাইরে
সব হারাম হয়ে যাবে।

আপনি/ আপনারা বুঝতে পারছেন বা পারছেন না, বিপদ আমাদের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। ওরা যদি আবার আসে এখানে লালন থাকবে না, হাসন রাজা থাকবে না, বাউল থাকবে না, জীবনানন্দ থাকবে না, রুদ্র থাকবে না, জয় গোস্বামী আবৃতি হবে না, জহির রায়হান থাকবে না, মুনীর চৌধুরী থাকবে না, হুমায়ূন আহমেদ  থাকবে না, মরমী সাধক থাকবে না, সাহিত্য থাকবে না, সংস্কৃতি থাকবে না।

শহীদ মিনার থাকবে না, স্মৃতিসৌধ থাকবে না, ফুল থাকবে না, প্রভাতফেরী থাকবে না, খালি পা থাকবে না, মোটা ফ্রেমের আড়ালে তরুনের লম্বা চুল বা বাঁকানো মোচ থাকবে না, তরুনীর পায়ে আলতা থাকবে না, কপালে বড় টিপ থাকবে না, তাঁতের শাড়ী থাকবে না। অনেক কিছুই থাকবে না। তবে বোরখার বিস্তার অবশ্যই হবে।

এমন অসময় আগেও এসেছিল। সেই অসময়ের চেয়ে সামনের অসময় আরো ভয়ানক হবে। লম্বা লম্বা জোব্বা ঢেকে দিবে মানচিত্র। এক থমথমে বাংলাদেশ হবে। টেলিভিশনে গানের অনুষ্ঠান হবে না। মেয়েরা ভয়ে নাচবে না বা নাচতে দেওয়া হবে না, কেউ ছবি আঁকবে না, দোয়েল শালিক ডাকবে না, শাহবাগে কেউ ফুল বিক্রী করবে না, তরুনীর হাতে রজনীগন্ধার মালা পেঁচানো দেখা যাবে না, রমনায় বা টিএসসিতে তরুন তরুনীরা আর আড্ডা দিবেনা।”

#ভবঘুরে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *