মস্তিষ্কের কারিশমা
——————
ইন্স্টিংক্টিভ একশনগুলো মানুষের সাবকনসাস লেভেলের প্রকাশ। মানুসের সচেতন মাইন্ডের অগোচরে (সে সব আপনে জানেনই না) আপনের মাইন্ড ইন্দ্রিয়কে ব্যবহার করে ৮০% এর বেশী তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। একই সাথে ৯০% মস্তিষ্কের নেয়া সিদ্ধান্ত প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সে যাওয়ার আগেই গৃহীত হয়ে যায়। এগুলা সম্পর্কেও আপনে জানেন না। এগুলাই হইল ইন্স্টিংক্ট। ইন্স্টিংক্ট হইলো মস্তিষ্কের সেই সিদ্ধান্ত যা আমাদের সচেতন চিন্তার মাধ্যমে হয় না।
এখন এ ইন্স্টিংক্টটা কোত্থেকে তৈরী হয়? এটি হয় আমাদের মেমোরিতে সেইভ করা তথ্য থেকে। আমাদের মাথায় যা নিয়ে কোনো তথ্য থাকে না, সে সম্পর্কে মাথা কোনো প্রকার চিন্তা বা ইমাজিনেশন করতে পারে না। এখন যদি আপনের মাথায় জমাকৃত তথ্যগুলার কিছু মিথ্যা হয় তবে আপনের ইমাজিনেশনেও কিছু মিথ্যা অযৌক্তিক ভাবনা তৈরী হবে। আপনি ধ্যান করে বা গভীর চিন্তা করে যা কিছু উপলব্ধি করেন তা আপনের মেমরি থেকে বানানো রান্নাবান্না ছাড়া আর কিছুই নয়। আপনের মাথাটি মেমোরিগত তথ্যের যোগসুত্র তৈরীতে অত্যান্ত ওস্তাদ। আপনের মেমরি থেকে সর্বদা বৈদ্যুতিক ও মেগনেটিক পালস স্রোতের মত কর্টেক্সে আসতে থাকে। মস্তিষ্কের তৈরী এ যোগসূত্র যৌক্তিক হতেই হবে এমন নয়। বরং বেশীরভাগ সময়ই যৌক্তিক হয় না। যখন যৌক্তিক হয় তখন আপনে অবাক হয়ে ভাবেন, “হ্যা, এইতো আমার আধ্যাত্মিকতা উন্নত হচ্ছে”। আসলে এটা কোনো আধ্যাত্মিকতা নয়। এটা মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক ও মেগনেটিক পালসের কারিশমা। আপনের সচেতন অবস্থায় অযৌক্তিক যোগসুত্রগুলাকে আপনে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স পাত্তাই দেয় না। ফলে সেগুলো সিদ্ধান্ত আকারে বিকোশিত হওয়ার আগেই ধ্বংশ হয়ে যায়। কিন্তু স্বপ্নে আপনের ইন্দ্রিয় সচেতন থাকে না। ফলে সেগুলো বিকোশিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে আপনের মনে হয় সপ্নগুলো কেমন উল্টাপাল্টা। স্বপ্নের সাথেও ঐশ্বরিকতার কোনো যোগসূত্র নেই।
যতক্ষণ আপনে আপনের মস্তিস্কের ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি না বুঝবেন ততক্ষণ পর্যন্তই আপনে এ সুফিবাদ বা ধর্মের ভিতরে গোলপাক ক্ষেতে থাকবেন।
মাহমুদ আহমেদ