[[ পোস্টটি যদিও বেশ বড়। তাও সকল সনাতনীদের নিকট অনুরোধ রইল আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে হলেও পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন এবং শেয়ার করে অন্য সনাতনীদের জানার সুযোগ করে দিন।। ]]
♥♥ মহাভারত এবং গীতার আলোকে শ্রীকৃষ্ণের যোগাযুক্ততাঃ পর্ব- (১) ♥♥
——————————————————————
♠ আজকাল অনেক নব্য পন্ডিতেরা বলে থাকেন যে— শ্রীকৃষ্ণ নাকি যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছিলেন। তিনি নাকি ঈশ্বর নন বরং একজন যোগী। তিনি নাকি পরমব্রহ্মে লীন হয়ে গীতা বলেছিলেন!!!
আর তারা এর প্রমাণ হিসেবে মহাভারতের অশ্বমেধিকপর্বের ১৭ তম অধ্যায়ের ১৩ নং শ্লোকটিকে প্রমাণ হিসেবে দেখায়।।
আসলেই কি তাই??? চলুন মহাভারত ও গীতার আলোকে এর সমাধান খোঁজা যাক—
♥♥ মহাভারত অনুসারে এর প্রমাণ হলো—-
(১) বিদিতং মে মহাবাহো! সংগ্রামে সমুপস্থিতে।
মাহাত্ম্যং দেবকীপুত্র! তচ্চ তে রূপমৈশ্বরম।।
(মহাভারত- ১৪/১৭/৫)
অনুবাদঃ হে মহাবাহো! হে দেবকীপুত্র! যুদ্ধ উপস্থিত হইলে আপনার মাহাত্ম্য আমি জানিয়াছি এবং আপনার সেই “ঐশ্বরীয় রূপ” তাও জানিয়াছি।।
[[ তাৎপর্যঃ ]] এই শ্লোকে অর্জুন স্পষ্ট বলেছেন যে— যুদ্ধ উপস্থিত হলে যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের মাহাত্ম্য সম্পূর্ণরূপে জেনেছেন এবং শ্রীকৃষ্ণের “ঐশ্বরীয় রূপ” অর্থাৎ বিশ্বরূপের দর্শন করেছেন।।
আর গীতায়ও শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তার নিজের প্রকৃত পরিচয় ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে বলেছেন।।
সুতরাং, এই শ্লোক দ্বারা আংশিকভাবে প্রমাণিত হয় যে— শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেননি।।
(২) সারথ্যমর্জুনস্যাজৌ কুর্ব্বন গিয়ে গীতামৃতং
দদৌ।
লোকত্রয়োপকারায় তস্মৈ ব্রহ্মাত্মনে নমঃ।।
(মহাভারত- ১২/৪৬/১০৬)
(অনুবাদকঃ হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ)
অনুবাদঃ যিনি যুদ্ধে অর্জুনের সারথ্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়া, ত্রিভুবনের উপকার করিবার জন্য অর্জুনকে গীতামৃত দান করিয়াছেন সেই পরমব্রহ্মকে (শ্রীকৃষ্ণকে) নমষ্কার করি।।
[[ তাৎপর্যঃ ]] এই শ্লোকে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে— যিনি যুদ্ধে অর্জুনের সারথি হয়েছিলেন, তিনিই অর্জুনকে ত্রিভুবনের উপকার করিবার জন্য “গীতা” দান করেছিলেন, আর তিনি হচ্ছেন “পরমব্রহ্ম”।।
★★ এখন নিরাকারবাদীদের কাছে আমার প্রশ্ন—
১) আপনারা যে বলেন, শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে পরমব্রহ্মের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে নাকি গীতা বলেছে।
তা এখানে তো স্পষ্ট বলা হয়েছে, যিনি অর্জুনের সারথি হয়েছিলেন তিনিই অর্জুনকে গীতা দান করেছিলেন।
তা “নিরাকার ব্রহ্ম” কি যুদ্ধে অর্জুনের সারথি হয়েছিলেন???
২) আর এই শ্লোক অনুসারে স্পষ্ট যে, অর্জুনের সারথি হয়ে গীতা যিনি দান করেছেন তিনিই হলেন “পরমব্রহ্ম”। আর আমরা সবাই জানি, অর্জুনের সারথি “নিরাকার ব্রহ্ম” নয়, বরং শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন।।
সুতরাং, এই শ্লোক দ্বারা যে শ্রীকৃষ্ণকেই “পরমব্রহ্ম” বলা হয়েছে এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।
৩) এখন আপনাদের কথা অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে পরমব্রহ্মের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে গীতা বলেছেন।।
তাহলে এই শ্লোক দ্বারা যেখানে শ্রীকৃষ্ণকে “পরমব্রহ্ম” বলে স্বীকার করা হচ্ছে, সেখানে আমার প্রশ্ন এই যে— পরমব্রহ্ম কী করে অন্য এক পরমব্রহ্মের সাথে যোগযুক্ত হবেন। এই বিশ্বে কি দ্বিতীয় কোনো ঈশ্বর আছেন???
★ তাই এই বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশই নেই যে— শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং “পরমব্রহ্ম”। তিনি কখনোই যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেননি।
তিনি সম্পূর্ণ সৎজ্ঞানে এবং যোগমুক্ত অবস্থায় গীতা বলেছিলেন।। ★
{{ নিরাকারবাদীরা অশ্বমেধিকপর্বের একটি শ্লোক ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করে প্রমাণ করতে চায় যে, শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছে।
আজ মহাভারতের শান্তিপর্বের এই একটি শ্লোক দ্বারাই শ্রীকৃষ্ণের যোগযুক্ততার বিষয় সম্পূর্ণ খন্ডন করা হলো।। }}
(৩) বিশ্বকর্ম্মন্! নমস্তেহস্তু বিশ্বাত্মন্! বিশ্বসত্তম!।
তথা ত্বামভিজানামি যথা চাহং ভবান্ মতঃ।।
ত্বত্তেজঃসম্ভবো নিত্যং হুতাশো মধুসূদন।
রতিঃ ক্রীড়াময়ী তুভ্যং মায়া তে রোদসী
বিভো!।।
(মহাভারত- ১৪/৬৭/৮-৯)
(অনুবাদকঃ হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ)
অনুবাদঃ হে বিশ্বকর্ম্মন! হে বিশ্বাত্মন! হে বিশ্বশ্রেষ্ঠ! তোমাকে নমষ্কার। আমি মনে মনে তোমাকে যেরূপ ধারণা করি, কার্যদ্বারাও তোমাকে সেইরূপই জানিতেছি।
প্রভু মধুসূদন (শ্রীকৃষ্ণ)! অগ্নি সর্বদাই তোমার তেজ হইতে উৎপন্ন হন এবং রতি তোমারই ক্রীড়াস্বরূপা, আর স্বর্গ ও মর্ত্ত্য তোমারই মায়া।।
[[ তাৎপর্যঃ ]] এই শ্লোকটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ— অনেকেই অশ্বমেধিকপর্বের একটি শ্লোক দেখিয়ে বলে যে— এই যে দেখ শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছে। শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর নয়।।
কিন্তু সেই মূর্খেরা উক্ত অশ্বমেধিকপর্বের শ্লোকটি চোখেই দেখেনি। যদি উক্ত শ্লোকটি তারা দেখত তাহলে তারা বলতে পারত না যে— শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছে।
★★ অশ্বমেধিকপর্বের ১৭ তম অধ্যায়ের ১৩ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যখন বলেই দিয়েছেন যে— তিনি যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছেন।
তাহলে অশ্বমেধিকপর্বের ৬৭ তম অধ্যায়ের ৮-৯ নং শ্লোকে গিয়ে অর্জুন কেন শ্রীকৃষ্ণকে “হে বিশ্বকর্ম্মন, হে বিশ্বাত্মন, হে বিশ্বশ্রেষ্ঠ!” এগুলো বলে সম্বোধন করল???
আপনারা স্বয়ং বিচার করুন।।
★ শুধু এটুকুই নয়। অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে আরও বলেছেন— “অগ্নি সর্বদাই তোমার তেজ হইতে উৎপন্ন হন এবং রতি তোমারই ক্রীড়াস্বরূপা, আর স্বর্গ ও মর্ত্ত্য তোমারই মায়া”।।
আচ্ছা, কোন যোগীর পক্ষে কি তার তেজ থেকে অগ্নি এবং স্বর্গ ও মর্ত্য সৃষ্টি করা সম্ভব??
নিশ্চয়ই সম্ভব নয়।।
★ প্রকৃতপক্ষে অশ্বমেধিকপর্বের ১৭ তম অধ্যায়ের ১৩ নং সেই শ্লোকটিতে “শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছে”— এই বিষয়টি বোঝানো হয়নি।।
{{ যদি সেই শ্লোকে “যোগযুক্ত” বলতে— পরমাত্মার সহিত যোগের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপনকে বোঝানো হতো তাহলে অশ্বমেধিকপর্বের ৬৭ তম অধ্যায়ের ৮-৯ নং শ্লোকে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে “বিশ্বকর্ম্মন, বিশ্বাত্মন” এগুলো বলে সম্বোধন করত না।।
“যোগ” শব্দের অনেক অর্থ আছে। এখানে “যোগ” শব্দটি কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে তা স্পষ্ট বলা আছে। আসলে সেই শ্লোকে “যোগযুক্ত” বলতে বোঝানো হয়েছে— “একাগ্রতার সহিত”।
যোগযুক্তেন ঐক্যাগ্রসমন্বিতেন (ভারতকৌমুদী টীকা)।। }}
{{ ★ “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ” যুদ্ধের প্রাক্কালে অর্জুনকে গীতা বলেছিলেন— একাগ্রতার সহিত, তা এখন আবার অর্জুনকে বলবেন কীসের নিমিত্তে? তাছাড়া অর্জুন গীতা ভুলে গেছেন তার দুর্বল মেধাবশত, তাকে পুনরায় গীতা বললে সে যে আবার তা ভুলে যাবে না তারই বা গ্যারান্টি কী??
তাই “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ” বললেন, আমি সেই বিষয়ে তোমাকে প্রাচীন বৃত্তান্ত বলিতেছি।।
অর্থাৎ, সেই গীতাজ্ঞানই তিনি ইতিহাস গল্পের মাধ্যমে বলিবেন। কেননা গল্পের মাধ্যমে যদি খুব কঠিন বিষয়ও আলোচনা করা হয়, তবে সেটা খুব সহজেই মনে রাখা যায়।। ★ }}
♥♥ গীতা অনুসারে এর প্রমাণ হলো—-
(১) যোগী যুঞ্জীত সততমাত্মানং রহসি স্থিতঃ।
একাকী যতচিত্তাত্মা নিরাশীরপরিগ্রহঃ।।
(গীতা- ৬/১০)
অনুবাদঃ যোগী ব্যক্তি সর্বদা নিজেকে সমাধিযুক্ত করবেন। তিনি একাকী নির্জন স্থানে বসবাস করবেন এবং তিনি সংযতচিত্ত, উদাসীন, দায়িত্বগ্রহণ থেকে রহিত হবেন।।
[[ তাৎপর্যঃ ]] গীতার এই শ্লোকে যোগীদের স্বভাব সম্পর্কে স্পষ্ট বলা হয়েছে।
যোগীদের জীবনযাপন ও স্বভাব সম্পর্কে “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ” এই শ্লোকে স্পষ্ট বলেছেন।।
যারা বলে যে শ্রীকৃষ্ণ একজন উত্তম যোগী। শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে গীতা বলেছেন তাদের জন্য এই শ্লোকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।।
★ শ্রীকৃষ্ণ একজন ক্ষত্রিয় ছিলেন, তিনি মহাদেবের পরম ভক্তও ছিলেন। কিন্তু তিনি “যোগী ছিলেন না”।।
★ কারণ— যোগীরা একাকী নির্জন স্থানে বসবাস করবেন।।
কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকার প্রাসাদে বসবাস করতেন, কোন নির্জন স্থানে নয়।
★ তিনি প্রাসাদে তার ভ্রাতা বলরাম, তার স্ত্রী, পুত্র এবং পৌত্রদের সাথে বসবাস করতেন। তিনি একাকী বসবাস করতেন না।।
[[ যোগীরা লোকসমাজে অন্যান্য লোকেদের সাথে বসবাস করলেও কখনোই রাজ্যসুখ, সাংসারিক সুখ এবং ধন-দৌলতের মোহ-মায়ায় আবদ্ধ হতে চান না।
কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ রাজধর্মের পাশাপাশি সংসার ধর্মও পালন করেছেন, যা একজন যোগী কখনোই করেন না।
যেমনঃ মহাযোগী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী এবং শ্রীরামকৃষ্ণ।
শ্রীরামকৃষ্ণ যদিও মা কালীর আদেশে সারদা দেবীকে বিবাহ করেছিলেন, কিন্তু তিনি কখনোই সাংসারিক লোকেদের মত জীবনযাপন করেননি। আর টাকা-পয়সা তো তিনি কখনো ছুঁয়েই দেখতেন না।। ]]
★ যোগীরা উদাসীন এবং দায়িত্বগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ উদাসীন ছিলেন না। তিনি একটি বড় রাজ্যের রাজা ছিলেন। এমন কিছুই ছিলনা যা শ্রীকৃষ্ণের কাছে ছিলনা।
★ আর শ্রীকৃষ্ণ দায়িত্বগ্রহণ থেকে বিরত ছিলেন না। তিনি তার পত্নী এবং পুত্রদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
কিন্তু যোগী ব্যক্তি কেবল ঈশ্বর চিন্তায় মগ্ন থাকেন, তিনি কোনো সাংসারিক মোহ মায়ায় আবদ্ধ হতে চান না। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ এমন যোগীদের মতন জীবনযাপন করতেন না।।
★★ তাহলে এখন প্রশ্ন হতে পারে, শ্রীকৃষ্ণ যদি যোগী না হন তাহলে গীতায় তাকে কেন “যোগেশ্বর” বলা হয়েছে???
উঃ- দেখুন, “যোগেশ্বর” শব্দটি একটি সমাস। এই সমাসটিকে ভাঙলে হয় “যোগ + ঈশ্বর”।
“লঙ্কেশ্বর” মানে যেমন লঙ্কার অধীশ্বর, ঠিক তেমনি “যোগেশ্বর” মানে হলো যোগ-সাধনার অধীশ্বর।।
{{ যদি গীতায় শ্রীকৃষ্ণকে একজন মহান যোগী বলেই বোঝানো হতো তবে সেখানে বলা থাকত “যোগীশ্বর”, যোগেশ্বর নয়।। }}
(২) সঞ্জয় উবাচঃ
এবমুক্তা ততো রাজন মহাযোগেশ্বরো হরিঃ।
দর্শয়ামাস পার্থায় পরমং রুপমৈশ্বরম।।
(গীতা- ১১/৯)
অনুবাদঃ সঞ্জয় বললেন— হে রাজন! এভাবেই বলে মহান যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তার নিজের “ঐশ্বরীয় রূপ” অর্থাৎ বিশ্বরূপ দেখালেন।।
[[ তাৎপর্যঃ ]] এই শ্লোকে সঞ্জয়ের বাক্য দ্বারা এটা স্পষ্ট যে— শ্রীকৃষ্ণ বিশ্বরূপ দেখানোর সময় যোগযুক্ত হননি। তিনি যোগমুক্ত অবস্থায় অর্জুনকে তার নিজের সেই দুর্লভ ঐশ্বরীয় বিশ্বরূপের দর্শন করিয়েছিলেন।।
★★ এখন অনেকে বলতে পারেন যে, পুরাণের বিভিন্ন মুনি-ঋষিরাও তো বিশ্বরূপ দেখিয়েছেন। তাই বলে কি তারাও ঈশ্বর???
উঃ- না, তারা ঈশ্বর নন।।
কারণ— বর্তমানে প্রচলিত অষ্টাদশ পুরাণ “প্রকৃত পুরাণ নয়”। এগুলো বিভিন্ন সময়ে কিছু লোক স্বার্থসিদ্ধির জন্য রচনা করে বেদব্যাসের নামে চালিয়ে দিয়েছিল। তাই ওইসব পুরাণের কাহিনীগুলো যে সম্পূর্ণ সত্য তার কোন প্রমাণিকতাই নেই।।
*** “তৈত্তিরীয় আরণ্যক” ২/৯ মতে, প্রকৃত পুরাণ হলো “ব্রাহ্মণগ্রন্থসমূহ”।।
♦ দ্বিতীয় কথাঃ ♦
অর্জুনকে বিশ্বরূপ দেখানোর পর অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে নানাভাবে প্রশংসা করেছিলেন, শ্লোক ৯-১৮ পর্যন্ত অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে নানাভাবে প্রশংসা করেছেন এবং ১৮ নং শ্লোকে গিয়ে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে “পরম ব্রহ্ম পরমেশ্বর” বলে স্বীকার করেছেন—
“ত্বমক্ষরং পরমং বেদিতব্যং ত্বমস্য
বিশ্বস্য পরং নিধানং”।
অনুবাদঃ তুমিই অক্ষর তত্ত্ব “পরম ব্রহ্ম” এবং একমাত্র জ্ঞাতব্য, তুমিই এই বিশ্বের “পরম আশ্রয়”।।
*** এখন কিছু নব্য নামধারী পন্ডিতেরা বলতে পারেন যে— না, না এখানে অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে পরম ব্রহ্ম বলেননি, শ্রীকৃষ্ণ তখন যোগযুক্ত ছিলেন। তাই অর্জুন এই কথাগুলো পরমাত্মাকে বলেছেন।।
♦ তাদেরকে বলছি— মহাশয়! বিশ্বরূপটি যে শ্রীকৃষ্ণেরই ছিল, অন্য কারো নয় সেটা ৯ নং শ্লোকে সঞ্জয় স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, অর্থাৎ সেসময় শ্রীকৃষ্ণ যোগমুক্ত অবস্থায় ছিলেন।।
তাছাড়া আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে, তখন সেখানে সঞ্জয় নয় বরং আপনি উপস্থিত ছিলেন।। 🤣🤣🤣
আর ৯-১৮ নং শ্লোক পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে তখন হঠাৎ করেই শ্রীকৃষ্ণকে যোগযুক্ত হয়ে যেতে হবে।।
তাই অর্জুন “পরম ব্রহ্ম” বলতে যে শ্রীকৃষ্ণকেই বুঝিয়েছেন সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।