A.
মামুনুল হকরা ড. জাফর ইকবাল স্যারকে নাস্তিক ষাড় ভুতের বাচ্চা জাফর ইকবাল বলে, মুক্তিযোদ্ধা লেখক শাহরিয়ার কবিরকে মুরগী চোর নাস্তিক বলে, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননদের নাস্তিক ফতোয়া দিয়ে দেশের যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই জোতা পেটা করতে নির্দেশ দেয়।
দেলোয়ার হোসেন সাঈদীরা নিয়মিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে জাহান্নামের ইমাম বলে থাকে।
দেখি এসব বিষয়ে ইসলাম কী বলেঃ
০১। আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কোনো দল যেন অপর কোনো দলকে উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অপর নারীদের উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারীর অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরকে দোষারোপ করো না এবং মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহের কাজ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম। (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)
০২। হযরত আবু যার (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে ফাসেক বা কাফের বলে অভিহিত করো না। যাকে অভিহিত করা হয়, সে যদি তা না হয়ে থাকে, তাহলে তা অভিহিত কারীর প্রতি ফেরত আসবে। (বুখারী ৩৫১২)
০৩। ইমাম আবু হানিফার মতে, কোনো কথার যদি ৯৯ শতাংশই অবিশ্বাসের বোঝায় এবং মাত্র ১ শতাংশ বিশ্বাস (ঈমান) অবশিষ্ট থাকে তাহলেও তাকে কাফের বলা যাবে না।
০৪। যখন কারো কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরী না হওয়ার তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}
০৫। রাসুল (সা.) ইরশাদ বলেন, ‘তোমরা কারো প্রতি (খারাপ) ধারণা থেকে বিরত থাকো। কেননা কারো প্রতি (খারাপ) ধারণা করা, সবচেয়ে বড় মিথ্যা। তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ো না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৬০৬৪)
০৬। মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না।
—আল হাদীস, তিরমিজি-২০৪৩।
অন্য হাদিসে রাসুল (স.)বলেন, কোনো মুমিন ব্যক্তি কোনো মুসলমানের ডাক নাম বিকৃত করতে পারে না।
B.
মামুনুল হকরা বলে, মানুষের মুখে শুনেছে, শাহরিয়ার কবির ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীদের মুরগী সাপ্লাই দিত। তাই যাচাই না করেই মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক, লেখক, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রধান শাহরিয়ার কবিরকে মুরগী চোর বলে কথায় কথায়। নির্দেশ দেয় তাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই জোতা পেটা করতে। অথচ নিজে তার সাথে টক শোতে উপস্থিত হয়, জোতা পেটার ঈমানি সাহস খুঁজে পায় না।
মামুনুল হকরা বলে, বিবর্তনবাদ যে বিশ্বাস করে সেই নাস্তিক। কভিড-১৯ ভাইরাস স্থানকাল ভেদে চরিত্র বদলাচ্ছে, ব্যাকটেরিয়াগুলো এন্টিবায়েটিকের বিরুদ্ধে অভিযোজিত হয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করছে, প্রমাণিত এই বৈজ্ঞানিক সত্যকে তারা অস্বীকার করে। তারা মনে করে বিবর্তনবাদ মানে হচ্ছে শুধু মানুষ বানর থেকে উৎপত্তি, এ ছাড়া এতে আর কোন কথা নেই। তারা বলে ইসলামে জীবানু বলতে কিছু নেই। বলে মুসলমানদের করোনা হলে কুরআন মিথ্যে হয়ে যাবে।
ইসলাম কী বলেঃ
০১। যাচাই না করে কোনো খবর প্রকাশ করা ও বিশ্বাস করা মিথ্যাবাদী হওয়ার নামান্তর। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যা শুনেছে, তা-ই (যাচাই করা ছাড়া) বর্ণনা করা মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (মুসলিম শরিফের ভূমিকা : ১/১০৭; আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯২)
বস্তুত ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবিদের শারীরিকভাবে হত্যা করেছে রাজাকারেরা। এখনও কবি শামসুর রাহমান, ড. আহমেদ শরীফ, ড. হুমায়ুন আজাদ, ড. আনিসুজ্জামান, ড. জাফর ইকবাল সহ দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবিদের শারিরীকভাবে না পারলেও নিয়মিত কুৎসা রটানোর মাধ্যমে মর্যাদাগত হত্যা করে চলে তারা।
C.
মামুনুল হকরা মানুষের জন্য ব্যবহার্য কোন পণ্য ও সেবা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জড়িত না থেকে শুধু ধর্মকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ৫ বেলা নামাজ ব্যক্তিগত ইবাদত না হয়ে তাদের ইমামতির চাকরি। লাখ টাকার চুক্তিতে এডভান্স নিয়ে তারা ওয়াজ করে বেড়ান।
দেখি ইসলাম কী বলেঃ
০১। অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় মূল্য /পারিশ্রমিক কামনা করে না, অত:পর তারাই সুপথ প্রাপ্ত।
—–সুরা ইয়াসীন, ৩৬:২১
০২। বস্তুত, যারা আল্লাহ কেতাবে যা অবতীর্ণ করেছেন তা গোপন করে, এর বিনিময়ে পার্থিব তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ঢুকায় না। এবং আল্লাহ হাশরের দিন তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। এরাই হচ্ছে সেই সমস্ত মানুষ যারা সঠিক পথের (হেদায়াহ) পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা (দালালাহ) এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে। আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।
—-সুরা বাকারা, ২:১৭৪
০৩। আপনি কি তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চান? আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা। আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন।
——–সুরা মু’মিনুন ২৩:৭২
০৪। বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না বরং তা তোমরাই রাখ। আমার পুরস্কার তো আল্লাহর কাছে রয়েছে। প্রত্যেক বস্তুই তাঁর সামনে।
——–সুরা সাবা- ৩৪:৪৭
D.
মামুনুল হকরা নিজেদের ছবি তোলে, ছবি পত্র পত্রিকা, পোস্টার, বিজ্ঞাপনে প্রকাশ ও প্রচার করে। নিয়মিতভাবে রাসুল (স.) এর ঠোঁট নাড়ানোর ভঙ্গী অভিনয় বা নকল করে দেখায় বিকৃতভাবে।
প্রাণীর ছবি সম্পর্কে কয়েকটি হাদীসঃ
০১। হুমায়দী (র)…মুসলিম (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরুকের সাথে ইয়াসার ইবনে নুমায়রের ঘরে ছিলাম। মাসরুক ইয়াসারের ঘরের আঙ্গিনায় কতগুলো মূর্তি দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে শুনেছি এবং তিনি নবী (স.) কে বলতে শুনেছেন যে,
“(কিয়ামতের দিন) মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি বানায়।” [সহীহ বুখারী, নবম খণ্ড, হাদিস নং ৫৫২৬ – ইফা, বর্ণপ্রকাশ প্রকাশনী-৪৫৪৯।], সহীহ মুসলিম।
০২। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, যারা প্রাণীর ছবি তৈরি করে, কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং বলা হবে, তোমরা যা বানিয়েছিলে তাতে জীবন দান কর। সহীহ বুখারী-৪৫৫০ (বর্ণপ্রকাশ)।
০৩। হজরত আবু জুর’আ (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রা.) এর সাথে মদীনার এক ঘরে প্রবেশ করি। ঘরের ওপর এক ছবি নির্মাতাকে ছবি তৈরি করতে দেখে তিনি বললেন, আমি রাসুল (স.) কে বলতে শুনেছি,
“আল্লাহ বলেন, ওই ব্যক্তির চেয়ে অধিক জালেম আর কে আছে যে আমার (আল্লাহর) সৃষ্টির অনুরুপ কোন কিছু সৃষ্টি করতে চায়?”
সহীহ বুখারী-৪৫৫১ (বর্ণপ্রকাশ)।
০৪। আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (স.) (তাবূক যুদ্ধের) সফর থেকে প্রত্যাগমন করলেন। আমি আমার ঘরে পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙ্গিয়েছিলাম। তাতে ছিল (প্রানীর) অনেকগুলো ছবি। রাসুল (স.) তা দেখে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ
“কিয়ামতের সে সব মানুষের সবচেয়ে কঠিন আজাব হবে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির (প্রাণীর) অনুরূপ তৈরি করবে।”
আয়েশা (রা) বলেন, এরপর আমরা তা দিয়ে একটি বা দু’টি বসার আসন তৈরি করি। [সহীহ বুখারী, নবম খণ্ড, হাদিস নং ৫৫৩০ – ইফা,
বর্ণপ্রকাশ-৪৫৫২।]
০৫। আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুল (স.) এর জন্য প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি গদি খরিদ করেছিলাম। এরপর তিনি আমার ঘরে এসে ভেতরে প্রবেশ না করে দু’দরজার মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ আমার কি অপরাধ হয়েছে? তিনি বললেন, এ গদিটি কিসের জন্য? আমি বললাম, এ বালিশটি আপনার জন্য যাতে এর উপর ঠেস দিয়ে বসতে পারেন। নবী বললেন,
“এসব ছবির নির্মাতাদের কেয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তাদের আল্লাহ বলবেন, যা তোমরা বানিয়েছিলে সেগুলো জীবিত কর। যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।” [সহীহ বুখারী, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস নং ২৯৯৭ – ইফা, বর্ণপ্রকাশ-৪৫৫৩।]
০৬। ইয়াহইয়া ইবনে সুলাইমান (র)…সালিম (রা) এর পিতা আব্দুল্লাহ ইবনে উমর হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জিবরাঈল (আ) নবী (স.)এর নিকট (সাক্ষাতের) ওয়াদা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সময় মত আসেননি। তখন রাসুল মনে খুব কষ্ট পেয়ে বের হয়ে পড়লে জীবরাইল (আ.) এর সাক্ষাত পান। নবী (স.) এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেন আমরা ঐ ঘরে কখনো প্রবেশ করি না, যে ঘরে ছবি ও কুকুর থাকে। [সহীহ বুখারী, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস নং ৩০০০ – ইফা, বর্ণপ্রকাশ-৪৫৫৪]
০৭। আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব (র)…সাঈদ ইবনে আবুল হাসান (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আব্বাস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরি করি। ইবনে আব্বাস (রা) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি,
‘‘যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরি করে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর তাতে সে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না।”
(এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনে আব্বাস (রা) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ না-ই ছাড়তে পার, তবে এ গাছপালা এবং যে সকল জিনিসে প্রাণ নেই, তা তৈরি করতে পার।
আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (র) বলেন, সাঈদ (রা) বলেছেন, আমি নযর ইবনে আনাস (রা) থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইবনে আব্বাস (রা) হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী (র) আরও বলেন, সাঈদ ইবনে আবু আরুবাহ (র) একমাত্র এ হাদিসটি নযর ইবনে আনাস (র) থেকে শুনেছেন। [সহীহ বুখারী, চতুর্থ খণ্ড, হাদিস নং ২০৮৪ – ইফা]
০৮। ইবনে মুকাতিল (র)…আবূ তালহা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
“যে ঘরে কুকুর থাকে আর প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে (রহমতের) ফিরিশতা প্রবেশ করেন না।” [সহীহ বুখারী, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস নং ২৯৯৮ – ইফা]
০৯। আলী ইবনে আবদুল্লাহ (র)…আবু তালহা (রা) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“যে ঘরে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে ফিরিশতাগণ প্রবেশ করেন না।” [সহীহ বুখারী, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস নং ৩০৮৮ – ইফা]
১০। হজরত আয়েশা [রা] বর্ণনা করেন যে, রাসুল [স] ঘরে থাকা প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস ধ্বংস করে ফেলতেন । (মিশকাত)
১১। আবুল হাইয়াজ আসাদী বলেন, আলী ইবনে আবী তালেব রা. আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে ওই কাজের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করব না, যে কাজের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? তা এই যে, তুমি সকল প্রাণীর মূর্তি বিলুপ্ত করবে এবং সকল সমাধি-সৌধ ভূমিসাৎ করে দিবে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে,… এবং সকল চিত্র মুছে ফেলবে।’ -সহীহ মুসলিম হা. ৯৬৯
১২। আলী ইবনে আবী তালেব রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে মদীনায় যাবে এবং যেখানেই কোনো প্রাণীর মূর্তি পাবে তা ভেঙ্গে ফেলবে, যেখানেই কোনো সমাধি-সৌধ পাবে তা ভূমিসাৎ করে দিবে এবং যেখানেই কোনো চিত্র পাবে তা মুছে দিবে?’ আলী রা. এই দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্ত্তত হলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে কেউ পুনরায় উপরোক্ত কোনো কিছু তৈরী করতে প্রবৃত্ত হবে সে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি নাযিলকৃত দ্বীনকে অস্বীকারকারী।’ -মুসনাদে আহমাদ হা. ৬৫৭
১৩। আবু হুরায়রা রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন-
ওই লোকের চেয়ে বড় জালেম আর কে যে আমার সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করার ইচ্ছা করে। তাদের যদি সামর্থ্য থাকে তবে তারা সৃজন করুক একটি কণা এবং একটি শষ্য কিংবা একটি যব! -সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫৩
বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে, কেয়ামতের দিন ছবিতে প্রাণ দিতে বলা হবে । নির্ভরযোগ্য সকল কিতাবেই এই কারণটির উল্লেখ রয়েছে । আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি [রহ] লিখেছেন, ‘প্রাণীর ছবি তৈরি করা হারাম ও কবিরা গুনাহ । সম্মানের জন্য তৈরি করুক অথবা অন্য কারণে। কেননা, ছবি তৈরির মধ্যে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা রয়েছে ।’ (উমদাতুল কারি) আল্লামা ইমাম নববি [রহ] তার মুসলিম শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থে লিখেছেন, ‘প্রাণীর ছবি তৈরি করা হারাম । কেননা এতে স্রষ্টার সাদৃশ্যতা প্রকাশ পায় ।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘ছবির মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে।’ (শরহে নববি)
E.
মামুনুল হকরা নিজেদের সুবিধামত ইসলাম ব্যবহার করে থাকে।
দেখি এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলেঃ
সূরা বাকারার ৮৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন,
“তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ইমান রাখো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো ?? তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কি প্রতিদান হতে পারে ?? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন।”