মুড়লির জোড়া শিব মন্দির, যশোর, বাংলাদেশ।

Uncategorized
মুড়লির জোড়া শিব মন্দির, যশোর, বাংলাদেশ। 
যশোরের মুড়লিতে রাজা লক্ষ্মণ সেনের আমলে (১১৮৯ খ্রিস্টাব্দে) প্রতিষ্ঠিত জোড়া শিবমন্দির। প্রায় ৩শ’ বছর ধরে পরিত্যক্ত থাকার পর সংস্কার করে ভক্তদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ২০১২ সালে। 
মুড়লির জোড়া শিব মন্দির স্থাপন প্রসঙ্গে রমেশ চন্দ্র মজুমদার রচিত ভারতবর্ষের ইতিহাস বই থেকে জানা যায়, সেন বংশের সর্বশেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন ছিলেন শিবভক্ত। সে সময় তিনি বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বহু মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এরমধ্যে অন্যতম যশোরের মুড়লি গ্রামের জোড়া শিবমন্দির। রাজা লক্ষ্মণ সেন ১১৮৯ খ্রিস্টাব্দে ভৈরব নদের পশ্চিম তীরে শ্রমজীবী শিবভক্ত প্রজাদের জন্য পাশাপাশি দুটি মন্দির স্থাপন করেন। মন্দির দুটির স্থাপত্য শৈলীতে রয়েছে অপূর্ব নিদর্শন। সুউচ্চ চূড়া ও নকশা খচিত মন্দিরে রয়েছে পূর্বমুখী দু’টি দরজা। এই মন্দির দু’টি কোর্নাকের সূর্য মন্দিরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। রাজা লক্ষ্মণ সেন মন্দির দু’টিতে যোগাসনে অধিষ্ঠিত পাথরের তৈরি শিবমূর্তি স্থাপন করেন। এ মূর্তির পাশে রয়েছে বলদ বা বৃষভ। একই সাথে মন্দিরের কাছেই পূজারির বসবাসের জন্য বাসস্থান তৈরি করা হয়। মন্দিরের সামনে ভক্তদের বসার জন্য খোলা জায়গা রাখা হয়।
প্রায় ৩শ’ বছর ধরে জোড়া শিব মন্দিরটি সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত ছিল। এ কারণে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শিব পুজো করতে পারছিলেন না। ২০১২ সালে মন্দিরটি সংস্কার করে পুজো অর্চনার উপযোগী করতে উদ্যোগ নেয় সনাতন ধর্ম সংঘ। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী ঠিক রেখে মন্দিরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। সংস্কারে চুন-সুড়কি ও রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সহজে আর মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সংস্কারের ফলে মন্দিরটির উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সনাতন ধর্ম সংঘ।
২০১৪ সালে ১লা ফেব্রুয়ারি এই মন্দিরে দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত এসময় দেড় লক্ষ টাকার মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।
গভীর রাতে পুরাতন জোড়া শিব মন্দিরের তালা ভেঙ্গে চোরেরা স্বর্ণালংকার সহ পূজা অর্চনার যাবতীয় কাঁসা ও পিতলের জিনিস নিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *