মুসলিম প্রধান দেশগুলোর বিপদ আলাদা

Uncategorized

ইরানে আমরা কখনোই একজন নারীকে প্রধানমন্ত্রী বা নিদেন পক্ষে নারী বিচারপতি দেখতে পাবো না। কারণ দেশটিতে ইসলামী বিপ্লবী সরকার ক্ষমতায়। যদি কখনো সেরকম কেউ চেষ্টা সেখানে করে তাহলে প্রবল বাধার সম্মুখিন হতে হবে এক কথায় সেটা অসম্ভব। কিন্তু জায়নবাদী তথা ইহুদীবাদীদের দেশ ইজরাইলে গোল্ড মেয়ার নামে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যিনি ১৯৭১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন এবং গোপনে সেই যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীকে সহায়তা করেছিলেন। তাহলে একটা দেশে ইসলামী খিলাফত হলে কোন নারী দেশের কর্ণধার হতে পারে না কিন্তু ইহুদীবাদীরা একজন নারীকে প্রধানমন্ত্রী করে ফেলল। তর্কের খাতিরে যদি ধরি হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসল তখন কোন নারী প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার দূরে থাক একজন ডিসি হওয়াই কঠিন হয়ে যাবে। কোন ইসলামী দলের নারী সংগঠন নেই যারা নারী নেতৃত্ব দিতে পারে। কিন্তু ভারতের বিজেপি থেকে সুষমা স্বরাজ মন্ত্রী হয়েছিলেন। বাংলাদেশ পাকিস্তানে নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন কথিত মুসলিম দেশে হওয়ার পরও কারণ সেখানে ইসলামী শাসন ছিলো না বলেই। তাহলে ইসলামী রাজনীতি আর অন্যান্য মৌলবাদী দলগুলোর মধ্যে বড় রকমের একটি তফাত আছে। যদি ইউরোপে ডানপন্থি দল ক্ষমতায় থাকতে পারে তাহলে এদেশে কেন ইসলামী দল থাকতে পারবে না যারা বলে তারা বিপদের বিষয়টা ইচ্ছে করেই গোপন করতে চায়। মুসলিম লীগ ছিলো জাতীয়তাবাদী দল। আমি বলছি ইসলাম ধর্মীয় পার্টির কথা। ফাতেমা জিন্নার নির্বাচন করার উদাহরণ তাই গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা সব ধর্মীয় সমস্যাকে এক করে দেখতে চান তারা এসব গুলিয়ে ফেলেন বা সব জেনে বুঝেই আড়াল করতে চান। মাদ্রাসা মসজিদ যেমন চার্চ মন্দির প্যাগোডার সঙ্গে তুলনীয় নয় তেমনি ইসলামী রাষ্ট্রও জায়নবাদের সঙ্গে তুলনীয় নয়। ইসলামের প্রফেট রাজনীতি করেছেন এবং রাষ্ট্রের প্রধান হয়েছিলেন। অন্যদিকে হিন্দু ধর্মের কোন রাষ্ট্রচিন্তা বলতে কোন কিছুর অস্তিত্বই নেই। ‘রামরাজ্য’ কথাটা গান্ধির একটা কথার কথা ছিলো। ভারতে তাই বিজেপি ক্ষমতায় থাকায় মনুর শাসনের কোন সম্ভাবনা নেই। তারা যেটা করতে পারে ভারতকে ধর্মীয় পরিচয়ে বিভেদ। কিন্তু সেটাও কেবলমাত্র হিন্দু মুসলমানের মধ্যে। হিন্দু আসলে ভারতের অমুসলিম সবাইকে এক ছাতার নিচে এনে একটা জাতীয়তাবাদী চেতনা সৃষ্টি করে যা মুসলমান বিরোধী মনোভাব তৈরির বাসনা থেকে। কিন্তু সেটাকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করা যায়। হিন্দু ধর্মের কুসংস্কার জাতপাত কিন্তু কোন রাজনীতির ধার ধারে না।  কিন্তু ইসলামী শাসন একটি দেশকে ১৪০০ বছরের রাষ্ট্র চিন্তা, নারীর অবস্থান, ধর্মীয় আইনে কি পরিণত করতে পারে তার উদাহরণ ইরান আফগানিস্থান।

অভিযোগ করা যেতেই পারে এই লেখায় প্রচ্ছন্নভাবে ইহুদীবাদ হিন্দুবাদকে ভালো বলার চেষ্টা করা হয়েছে। আসলে সেরকম কিছু বলাই হয়নি। বলা হয়েছে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর বিপদ আলাদা সেগুলোকে অন্যান্য ডানপন্থী সমস্যার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার কোন বাস্তবতা নেই। পৃথিবীতে শরীয়া আইনের মত ধর্মীয় আইনের দেশ-  হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইহুদি আইনে চলে এমন একটি দেশও নেই। গান হারাম, মূর্তি ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হবে, হাত কাটা পা কাটা আইন চাই, নারীদের পর্দা বাধ্যতামূলক করতে হবে,  এরকম জঘন্য জিনিস অন্যান্য ধর্মের চৌকির তলায় খুঁজলে কম বেশি বের হবেই কিন্তু ইসলামী খিলাফতের মত ধর্মীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা সেই ধর্মগুলোর কনসেপ্টে নেই বলেই ইজরায়েল একশভাগ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতও হিন্দুত্ববাদীদের লাত্থি দিয়ে ফেলে দিতে সময় লাগবে না। কিন্তু বাবুনগরীরা আসতেই থাকবে। কারণ তারা আসে একদম ধর্মের ছায়াতল থেকে …।

তাহলে সমাধান?  ফ্রান্স অস্ট্রিয়া চীন ভ্যাক্সিন তো বের করেছেই। আপাতত তাদের দেখানো পথই শ্রেষ্ঠ। কথিত মুসলিম দেশগুলোকেও সে পথে আজ হোক কাল হোক আসতেই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *