কোন জাতিকে ধ্বংস করতে হলে তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস কর-এই বহুযুগ প্রচলিত ঘৃণ্য পথটিই পাকিস্তানিরা যশোর ইন্সটিটিউট পাবলিক লাইব্রেরির জন্য প্রযোজ্য হয়েছিল। দেশ ভাগের পরের বছর ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে পুলিশ আকস্মিকভাবে হানা দেয় যমোর পাবলিক লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরির গ্রন্থগারিক নিরাপদ রাহা এবং সহকারি গ্রন্থগারিক আলফ্রেড বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেফতার করে। লাইব্রেরি তালাবদ্ধ করে দেয়। সেখানে পুলিশ অভিযান ছিল এতটাই আকস্মিক এবং অভাবিত যে এই ঘটনায় সকলেই বিমূঢ় হয়ে পড়ে। পুলিশের কাছে নাকি খবর ছিল এই লাইব্রেরিতে ভারতীয় চিরায়ত সাহিত্য, হিন্দুদের লেখা ইতিহাস বই, সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ক গ্রন্থ এবং কমিউনিজম সম্পর্কিত রাজনৈতিক-সামাজিক গ্রন্থাবলী ও সাহিত্য বই রয়েছে। পরে এই বই গুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। সে সময় যশোর ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক কুমার রণক্রম মজুমদার(তপু মজুমদার), আর লাইব্রেরি সম্পাদক ছিলেন সুনীলকুমার বসু। উদারপন্থী তপু মজুমদার, আর কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক সুনীল বসু আটচল্লিশের সাম্প্রদায়িক ডামাডোল আর আর ভাষা আন্দোলনের পর পুলিশী অভিযানের মুখে ভারতে চলে যান। যশোর কলেজের(এখন এমএম কলেজ) উপাধ্যক্ষ সুনীল বসু ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। পরের ইতিহাস আর লিখতে চাইনে।
সাজেদ রহমান