আমেরিকায় ডাক্তারী।
যুগের পরিবর্তন হয়েছে ডাক্তারী পেশায়ও পরিবর্তন এসেছে। নিত্য নতুন চিকিতসা পদ্ধতি বের হচ্ছে, নিত্য নতুন ঔষধ বেরুচ্ছে। তবে যে পরিবর্তনটা সবচেয়ে বেশী হয়েছে তা হয়েছে রোগী দেখার সিস্টেম। অ্যামেরিকায় ডাক্তাররা আমাদের দেশের মত চেম্বারে বসেন না। তাদের প্রত্যেকেই সাধারনত গ্রুপে প্রেক্টিশ করেন বা নিজস্ব অফিসে বসেন।আগেই এপোয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। ঠিক সময়ে উপস্থিত না হলে ” No Show” বলে বিল পাঠিয়ে দেবে।
ডাক্তারদের অফিস বলতে প্রথমেই ইন্সুরেন্স ইত্যাদি যাচাই করার জন্য রিপোর্টিং অফিসে যেতে হবে। তারপর সেখানে সব ক্লিয়ার পাওয়া গেলে কিছু ফর্ম দেয়া হবে যা নিয়ে গিয়ে বসে থাকতে হবে লবিতে বসে থাকতে হবে। এই অপেক্ষার সময় অল্প হতে পারে আবার ঘন্টা দুয়েকও হতে পারে। এরপর একজন এসে ডাক দিবে ‘মিঃ অমুক আসুন”। ভাববেন না ডাক্তারের দেখা তখনই পেয়ে যাবেন। আপনার ব্লাড প্রেসার আর ওজন নেবে ঐ ব্যক্তি। তবে এবার একটা রুমে ঢুকিয়ে সুসংবাদ দেবে “ডাক্তার কিছুক্ষনের মধ্যেই আসছেন।” আর একটা নোট দরজায় রেখে গেল।
আবার অপেক্ষা। এরপর ডাক্তার এলেন। গাল ভরা হাসি। “হাই হাও আর ইউ?”
আপনার সাথে আর আলাপ হবার সূযোগ আর খুব বেশী নেই। ডাক্তার নোটোটা পড়লেন। এরপর বললেন “সো ইউ আর ফর …”। এরপর মিনিট খানেক এই পাতা কয়টা পড়লেন। আপনার গায়ে হাত দেবেন না।
“অকে সি ফ্রন্ট ডেস্ক”। ডাক্তার বেড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তখন খেয়াল হল যে রুগীর গায়ে স্পর্শ না করলে ভালো দেখায়না। মুখ দিয়ে বলেই ফেললেন “সরি আই মাস্ট…” স্টেথোটা এমনি সুয়েটারের উপর ছুইয়ে হেসে চলে গেলেন।
কয়েকটা পরীক্ষা করার নির্দেশ পেলাম। কিন্তু আমার যে অনেক কিছু বলার ছিল! আমার যে অন্য কয়েকটি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরী ছিল। কিছুই তো হলোনা! আমি জানি অ্যামেরিকায় চিকিতসার নামে কী হচ্ছে। বড় দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, চিকিৎসা খাতটা অ্যামেরিকায় ধ্বংসের পথে চলেছে। এদেশের কোন ছেলে মেয়ে ডাক্তার হতে চায়না।অনুন্নত দেশ সমূহ থেকে যে দেশে আসছে ডাক্তার, সে দেশের চিকিতসার মান কী করে ভালো হবে!!!