মেয়ের স্কুল থেকে ইমেইল দিয়েছে যে, আগামী শুক্রবারে তাদের ক্লাসে শরীর, যৌনতা বিষয়ে পাঠদান করা হবে। তাদেরকে পরে sexual assault এর ওপরে কিছু ভিডিও-ও দেখানো হবে।
যৌনতা বিষয়ক পাঠদান হবে পুরো ক্লাসের সবার জন্য। আর মেয়েদেরকে আলাদা করে আজ ঋতুচক্র বিষয়ে পাঠদান করা হয়েছে। আমি এবং প্রতিভা অবশ্য মেয়েকে এ ব্যাপারে আগেই কিছুটা বলেছি।
আমার মেয়ের বয়স ১১। ওদের ক্লাসের সবার বয়স এরকমই। কারো এগার পূর্ণ হয়েছে, কারো পূর্ণ হবার পথে। মাসিক ঋতুচক্র আসতে হয় তো আরো দু’বছর লাগবে। এরই মধ্যেই ওদেরকে যৌনতা, যৌন অপরাধ, ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশে যৌনতা শব্দটাই যেন ট্যাবু; ওটা উচ্চারণ করাই পাপ। আমাদের সময়ে তো পাঠ্য বইয়ে এ বিষয়ে কিছুই ছিলো না। আমরা যৌনতা শিখতাম বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে, যার অনেকটা জুড়েই থাকতো কল্পনা-জড়ানো মিথ। আমি নিজে কতকটা শিখেছিলাম এক রাখালের কাছ থেকে, কতকটা বন্ধুদের কাছ থেকে। আরেকটু বড় হয়ে শিখেছিলাম চটি পড়ে। আজ বুঝতে পারি সেই শিক্ষা কতটা ভুল ছিল।
বাংলাদেশের ক্লাস সিক্সের বিজ্ঞান বইয়ে শরীরবিজ্ঞান বিষয়ক একটা চ্যাপ্টারে ঋতুচক্র নিয়ে লেখা থাকায় হেফাজতরা সেটা তুলে নেবার দাবি জানিয়েছিলো। জানি না হেফাজতের দাবি মেনে নেয়া হয়েছিলো কিনা। পাঠ্যবই থেকে না তুললেও শিক্ষকরা যে যৌনতা বিষয়ে পড়াতে অস্বস্তি বোধ করেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যৌনতা বিষয়টাতে এমনিতেই ফ্যান্টাসি জড়িয়ে থাকে। তার ওপর যদি তা শিখতে হয় নিজে নিজে কিংবা রসময় গুপ্তের চটি পড়ে, তা যে উদ্ভট ও বিকৃত হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশে যৌন বিষয়ক অপরাধ কমাতে চাইলে যৌনশিক্ষার বিকল্প নেই। হেফাজতদের কথা শুনে সিলেবাস পাল্টালে তাতে দেশে ধর্ষণ বাড়বে বই কমবে না।