কখন যেন নিজের ভাললাগা,পচ্ছন্দ, রুচি, ভালবাসা সব পিছনে ফেলে শুধুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে টিকে আছে কতশত সংসার!! স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি না আছে কোন ভালোবাসা, না আছে কোন আবেগ-অনুভূতি, না আছে কোন পিছুটান!! নেই কারো সাথে কারো ভালো বোঝাপড়া। আছে শুধু নামমাত্র একটি পরিচয়। নামমাত্র একটি সম্পর্ক। নামমাত্র একটি সংসার!!
.
যখন দুজনের কোন একজন সেক্রিফাইস করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে, যখন কোন কিছুতেই পাশের মানুষটিকে বোঝানো যায় না, যখন পাশের মানুষটির অনাদর-অবহেলা পেতে পেতে অসহ্য লেগে ওঠে, যখন মনে হয় পাশের মানুষটির কাছে আমি একেবারেই মূল্যহীন, একেবারেই জড়পদার্থ; অথবা একের পর এক চেষ্টা করেও কারো সাথেই কারো বনিবনা হচ্ছে না, মতের মিল হচ্ছে না; তখন স্বামী বা স্ত্রীর কাছে সংসারটিকে মনে হয় নরক
সমতুল্য! পাশের মানুষটিকে মনে হয় একটি বিষাক্ত কীট!!
.
ভুক্তভোগী স্বামী বা স্ত্রী কিংবা উভয়ই এমন পরিস্থিতিতে একান্তে ভাবতে শুরু করে। একবার, দুইবার করে বারবার ভাবে। নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ খোঁজে। ভাবে, পাশের মানুষটি আর এই সংসারটিকে ছেড়ে দিতে পারলেই বুঝি নরকযন্ত্রণা থেকে বাঁচা যাবে! একটু স্বস্তি পাওয়া যাবে! একটু ভালো থাকা যাবে!! কিন্তু হায়! এক বা একাধিক সন্তানের চেহারাটা তখন চোখের মধ্যে
ভাসতে থাকে। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। শেষমেশ সন্তানের মুখ, সন্তানের সুখের দিকে চেয়েই সবটুকু দুঃখ-কষ্ট জলাঞ্জলি দিতে হয়। দিনশেষে কেউ আর কাউকে ছেড়ে দিতে পারে না!!
.
একজন স্বামীর কাছে তার স্ত্রী আর একজন স্ত্রীর কাছে তার স্বামীর চাওয়া কিন্তু শুধুই জৈবিক চাহিদাপূরণ নয়। একে অন্যের কাছে একটু আশ্রয় খোঁজে, ভালোবাসা খোঁজে, নির্ভরশীলতা খোঁজে। চায়, দুঃখ-কষ্টে মানুষটি পাশে থাকুক, আমাকে একটু বোঝুক।
কোনভাবেই আমার চোখের পানির কারণ না হোক। অথচ অসংখ্য স্বামী-স্ত্রীর বেলায়ই সেই চাওয়াটি অপূর্ণ থেকে যায়!! কেন এমন হয়? কেন একজন আরেকজনকে বোঝতে চায় না? কেন একজন আরেকজনকে সহ্য করতে পারে না? হয়তো এই কেন—এর কোন উত্তরই হয় না!!
.
না সহ্য করা যায়, না তাকে ছেড়ে চলে যাওয়া যায়!! আবার ছেড়ে যেতে চাইলেও সন্তানের মুখ, সন্তানের ভবিষ্যত বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়!! আর এভাবেই কতশত দম্পতির পুতুলের বেশে সারাটি জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে 😥😥