সবশেষে বাঙালি হিন্দুর আশ্রয়স্থল হিন্দু সংহতি।

Uncategorized
ওই সময় “অসিফিকেশন টেস্ট” এর ধারণা পপুলার থাকলে সুকুমার রায় “গোঁফ” নিয়ে কবিতা লিখতেন না। লিখতেন “দাঁত দিয়ে যায় চেনা “।
 অনেক সময় ধর্ষক বা ধর্ষিতার বয়স নিয়ে কোনরকম বিভ্রান্তি (কনফিউশন) হলে অসিফিকেশন টেস্টে পাঠানো হয়  বয়স নির্ধারণের জন্য । অসিফিকেশন টেস্ট অর্থাৎ দাঁত পরীক্ষা  করে  বয়স নির্ধারণ করা যায় । 
নোয়াখালীতে একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। নোয়াখালী উচ্চারণে আমাকে একটি হিন্দু ছেলে জিজ্ঞেস করল “স্যার দাঁতের কাম কি ?” যদিও আমার পূর্বপুরুষের দেশ, কিন্তু আমার জন্ম আর কর্ম কলকাতায়, ফলে উচ্চারণ বুঝতে পারছিলাম না । পরে একজন বুঝিয়ে দিলেন।  সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা! 
গ্রামে দাঁতের স্বাস্থ্য শিবির বসানো হয়েছে । সামনে টেবিল। টেবিলের উপর বেশ কয়টি দাঁতের মডেল । তার সাথে টেবিলের উপর আছে বেশ কয়েকটি বাটি। কোনটিতে ভেজানো ছোলা, কোনটিতে ভেজানো ডাল, কোনটিতে ভাত, কোনটিতে রুটি এবং বেশ কিছু তরকারি।  টেবিলের পেছনে  সাদা অ্যাপ্রন করে কয়জন দাঁতের “ডাক্তার” দাড়িয়ে। মাইকে স্বাস্থ্য শিবিরের কথা চিৎকার করে বলা হচ্ছে, যেন লোক জড়ো হয় । গ্রামের লোক জড়ো হবার পর ওই দাঁতের “ডাক্তার”রা বেশ কিছু গ্রামবাসীকে ডেকে ওই ভেজানো ছোলা, বিভিন্ন তরকারি, ভাত দাঁত দিয়ে না চিবিয়ে খেতে বলল ।  প্রত্যেকে ঐ খাবারগুলো না চিবিয়েই,  জিভ দিয়ে দাঁতে ঘসে ঘসে খেয়ে নিল। 
এবার  একটা নতুন বাটি রাখা হল ঐ টেবিলের উপরে – গোস্ত । দাঁতের ডাক্তাররা সবাইকে ঐ গোস্ত দিয়ে বলল, একইভাবে না চিবিয়ে খেতে।  কেউ পারল না । এবার  “ডাক্তার”দের সমারোপ ভাষণ – আল্লাহ্‌ আমাদের নিরামিষ খেতে দাঁত দেননি। দাঁত দিয়েছেন গোস্ত খাবার জন্য। 
দাঁতের এই গুরুত্বের গুষ্টি উদ্ধার করে দিল মুসলমান ব্যাক্তিগত আইন (Muslim Personal Law)। দাঁতের  গুরুত্ব কমে গেল, গুরুত্ব পেল “চুল”। “চুল” দিয়ে যায় চেনা।
এই সপ্তাহেই  এ দুটো নতুন শব্দ শিখেছি মুম্বাইয়ে গিয়ে   – ইগরে – তিগরে, মনে এদিক ওদিক।  কিন্তু ইগরে – তিগরে, মানে এদিক ওদিকের “চুল” দিযে চেনা যাবে না। হতে হবে পিউবিক হেয়ার। অর্থাৎ বিশেষ অঙ্গের চুল। 
মুসলমান ব্যাক্তিগত আইনে (Muslim Personal Law) এই বিশেষ অঙ্গের চুল দিয়ে নির্ধারণ করা যাবে মেয়েটি বিবাহযোযোগ্যা, মানে সেক্স করার উপযুক্ত হল কি না । 
এখানে এক মহামানবের জীবনের ইতিহাস বলি। আয়েশাকে যখন সালালাহ ওয়াসসালাম নবী হজরত মুহাম্মদ বিয়ে করেছিলেন তখন আয়েশার বযস মাত্র ছয়। নবী হজরত মুহাম্মদের বিভিন্ন  জীবনীকার জানিয়েছেন, আয়েশার নয় বছর বয়স হলে, তার পিউবিক হেযার উঠবার পরই নবী হজরত মুহাম্মদ আয়েশার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। বিভিন্ন হাদীসেও এ কথা বলা হয়েছে। 
আজকের এই সমাজ যখন  ধর্ষকদের জান্নাত রাজ্য হয়ে উঠছে, মুসলমান রাষ্ট্র পাকিস্তান বা 92% মুসলমান প্রধান বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে শিশুরা হুজুরদের বিকৃত যৌন লালসার শিকার হচ্ছে (সইকুল বাতেন টিটোর লেখা বিষফোঁড়া বইটি  পরতে অনুরোধ করব‌। বাংলাদেশে বইটি বে-আইনী ঘোষিত হয়েছে), তখন সালালাহ ওয়াসসালাম নবী হজরত মুহাম্মদের এই সংযম আজকের এই মূল্যবোধহীন সমাজের কাছে পাথেয় হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। 
সহেলীর পিউবিক হেয়ার উঠে গেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ঘটনা । মেয়েটির সাতদিন আগের নাম সহেলী (নাম পরিবর্তিত, )। এখন নাম সাজিদা । মোহাম্মদ আজগরের (নাম পরিবর্তিত) প্রেমে পরল  সহেলী, বা মোহাম্মদ আজগর প্রেমের জালে ফাসাল সহেলীকে। 
গত সপ্তাহে ডিসেম্বর,  2021থেকে সহেলীর কোন খোঁজ নেই । সহেলীর বাবা থানায় এফ.আই.আর. দায়ের করলেন। সহেলীর যে বার্থ সার্টিফিকেট আমাকে দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী সহেলীর বয়স 15 বছর কয়েক দিন ।‌ থানা অত্যন্ত তৎপরতার সাথে মোঃ আজগরের বাবাকে গ্রেফতার করল । সহেলীর বাবা মেয়ে চাইছেন । পুলিশ থেকে বলা হল, কান টানলে মাথা আসে। বাবাকে গ্রেফতার করলে ছেলেকে পাওয়া যাবে । আজগর কে ধরতে পারলে তো মেয়ে হাতে । সহেলীর বাবা আনন্দে নেচে উঠলেন। 
কিন্তু ভুল ভাঙলো অচিরেই । যে দুদিন থানা লকআপে মোহাম্মদ আজহারের বাবা ছিলেন, খাবার থেকে জল  মায় জলখাবার সব গেল বাড়ি থেকে । দুদিন পর জামিন পেয়ে গেলেন  তিনি ।
নেতাদের কাছে গেলেন সহেলীর পরিবার । প্রত্যেকেরই বক্তব্য এক । সামনে নির্বাচন । তারপর যা হবার দেখা যাবে। অর্থাৎ মোহাম্মদ আজহারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিলে বা ব্যবস্থা নিতে পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করলে মুসলমান ভোট পাওয়া যাবে না । আবার কিছু না করলে হিন্দু ভোটে আঘাত পরবে। ‌ সুতরাং সেই ব্যালেন্সের খেলা । আজগরের বাবাকেও গ্রেফতার করা হলো । হিন্দুরা ভোট দেবে । আবার আজগরের বাবাকে জামিনও দিয়ে দেওয়া হল। মুসলমানরা ভোট দেবে । কিন্তু এই লেখা পর্যন্ত সহেলী বা আজগরের কোনো খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । 
সবশেষে বাঙালি হিন্দুর আশ্রয়স্থল হিন্দু সংহতি। হিন্দু সংহতি থেকে কেসটা রেফার করা হয়েছে আমার কাছে । চেষ্টা করব সহেলীকে ফেরত নিয়ে আসার ‌। 3 দিনের মধ্যে পুলিশ যদি সহেলীকে ফিরিয়ে না আনে  তাহলে বাধ্য হব হেবিয়াস কর্পাস মুভ করতে। কারণ পিউবিক হেয়ার এর তত্ত্ব কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না । 
আর একটা কথা বলি। ওখানকার এক তৃণমূল নেতা জয়নুল (নাম পরিবর্তিত) সত্যি সত্যি চেষ্টা করছেন সহেলীকে ফিরিয়ে আনার। আশা করি এটা “আল তাকিয়া” হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *