##*সম্মান দিতে শেখা*##
আজকাল আত্মীয় স্বজনের বাড়ি গেলে ভাইপো ভাইঝিরা প্রণাম করে না। নমস্কার তো দূরের কথা।
করে না, কারণ তাদের শেখানো হয়নি । তাদের বড়রা তাদের শেখাননি ।
কারুর বাড়ি গেলাম । তাঁর মেয়ে দরজা খুলে বললে “ বোসো” । আপনি আজ্ঞে উঠে গেছে,
বয়স্কদের সম্মান করা বাবা মা শেখাননি। তার ফল সারা সমাজ ভুগছে । শিক্ষক মার খান। বৃদ্ধ বাবা মা বিতাড়িত হন । ডাক্তার মার খান।
এ বিষয়ে একটা সুন্দর গল্প আছে মহাভারতে।
যুদ্ধ হবে হবে । অর্জুনের গাণ্ডীবের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কৌরব পক্ষ তৈরী। কুরুক্ষেত্রে ভয়াবহ স্তব্ধতা । শ্রীকৃষ্ণ গীতার প্রবচন সবে শেষ করেছেন । সহসা যুধিষ্ঠির চীৎকার করে যুদ্ধ বন্ধ করলেন । সবাই হতবাক।
তাকিয়ে দেখল যুধিষ্ঠির তাঁর ধনুর্বাণ মাটিতে রেখে, জুতো খুলে শত্রুপক্ষ কৌরবদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ।
কৌরবরাজা দুর্যোধন হাসলেন । ভাবলেন ‘এরা তো শুরুর আগেই ভয় পেয়েছে ‘।
কিন্তু দেখা গেল, যুধিষ্ঠির সোজা গিয়ে শত্রুপক্ষের প্রধান সেনাপতি পিতামহ ভীষ্ম কে মাটিতে শুয়ে প্রণাম করলেন। তিনি তো আসলে এঁদের পিতামহ, শ্রদ্ধার পাত্র, শ্রদ্ধেয়।
সব্বাই স্তম্ভিত। চারিদিকে নিস্তব্ধতা, অস্থির ঘোড়া আর হাতির ছটফটানি।
ভীষ্ম ডান হাত তুলে বললেন “ বিজয়ী ভব “ অর্থাৎ “Be Victorious”.
কৌরব রাজ দুর্যোধন আতঙ্কে শিউরে উঠে, চীৎকার করে ভীষ্মকে বলে উঠলেন “একি
বিশ্বাসঘাতকতা !!! আপনি তো আমার সেনাপতি ! আপনি শত্রুপক্ষকে আশীর্বাদ করলেন ?”
ভীষ্ম বলেছিলেন “ কেউ যদি আমাকে তার শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্মান করে, তাহলে আমি তো আশীর্বাদ দেবই ।তুমি করনি, আমি তোমাকে আশীর্বাদ দিতে পারি নি।”
সব ধর্মেই আশীর্বাদের একটা বড় ভূমিকা দেখানো আছে। শ্রদ্ধা, ভক্তি, প্রেম ছোটোদের শেখাতে হয়। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। জীবনের কুরুক্ষেত্রে আমাদের জয় হবে কি ?
কপিঃ Parthana Mukerjee