প্রথম ছবিটা সাজেকে নির্মাণাধীন মসজিদের। মুসলমান শূন্য পাহাড়ের এই ভ্যালিতে হাজার বছর ধরে বসবাস করেন ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা সহ অন্যান্য আদিবাসীরা। সাজেককে পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য রুইলুই পাড়ায় ৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে ৬০টি আদিবাসী পরিবারকে উচ্ছেদ করেছিলো সরকার কর্তৃক জলপাই বাহিনী।
শুধু সাজেকই না; কাপ্তাই লেক থেকে ১ লক্ষ আদিবাসী উচ্ছেদ করা হয়েছিল। নীলগিরি, নীলাচল থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ২০০ ম্রো, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা এবং মারমা পরিবারকে। থানচির সেপ্রু পাড়া থেকে ১২৯ ম্রো পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, ক্রাউডং (ডিম পাহাড়) থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ২০২টি আদিবাসী পরিবার।
পর্যটনের নামে পাহাড়ে আগ্রাসন, ভূমিপুত্রদের উচ্ছেদ করা হলেও পাহাড়িদের জীবনমানের দিকে নজর দেয়নি কেউ। পাহাড়ে নেই পর্যাপ্ত স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, এমনকি নিরাপদ পানি দুষ্প্রাপ্য। উন্নয়নের নামে পাহাড় বন প্রকৃতি ধ্বংস করে বানানো হচ্ছে কংক্রিট আর প্লাস্টিকের জঞ্জাল। হোটেল তৈরির জন্য ঝর্ণা, ঝিরি, ছড়া থেকে অবৈধ পাথর উত্তেলন করার কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট।
পাহাড়ে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ করে জলপাই বাহিনী। আর তাদের ছত্রছায়ায় ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বসে থাকা কিছু টাকার কুমির। রিসোর্ট, হোটেল বানিয়ে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে এরা। অথচ পাহাড়ে পর্যটন হতে পারতো কাশ্মীরের মতো স্থানীয় আদিবাসীদের পুনর্বাসনের হাতিয়ার, উপার্জনের ক্ষেত্র। কিন্তু আমরা তা করিনি। আমাদের আদিবাসীরা সাজেকের রাস্তার পাশে বাদাম, চা বেচে। আর সেটাকে আমরা পাহাড়ের উন্নতি বলি। ৭০% আদিবাসী দরিদ্র। কিন্তু একসময় তারা ছিলো স্বনির্ভর।
দ্বিতীয় ছবিটাও সাজেকের। Cho Hla Marma দা’র মাসিকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে পাহাড়ি ছড়া ,বনভূমির মধ্য দিয়ে; কারণ সাজেকে ভালো কোনো হাসপাতাল নেই। আপনার বিবেকের কাছে প্রশ্ন সাজেকে কোনটা বেশি প্রয়োজন ছিলো, মসজিদ না হাসপাতাল?
সাজেকে মসজিদ বানানো হয়েছে। এরপর মাদ্রাসা বানানো হবে। তারপর আদিবাসীদের ধর্মান্তরিত করে মুসলমান বানানো হবে। দেশভাগের আগে এদেশে ৩০% সংখ্যালঘু বাস করতো। ৭১ এর পরে সেটা নেমে আসে ১৫% এ। বর্তমানে ১০% এর কম। এভাবে একদিন বাংলাদেশ ৯০% থেকে ১০০% মুসলমানদের দেশ হবে ইনশাআল্লাহ!