কেউ কেউ বলছে, আগামী সূর্যগ্রহণের পর থেকে পৃথিবী থেকে করোনা ভাইরাস বিদায় নিবে!
আবার এই গ্রহণ নিয়ে আমাদের মাঝে অনেক ধরনের কুসংস্কার আছে। গ্রহণের সময়ে খাবার খেতে নেই, গ্রহণের আগে তৈরি করা খাবার ফেলে দিতে হয় ইত্যাদি। গ্রহণের সময় নতুন জীবাণু জন্ম নেয় বা রশ্মির বেশি প্রভাব থাকে। আবার রাহু সূর্য বা চন্দ্রকে গিলে ফেলার কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় এমন কথা অনেকেই বিশ্বাস করেন। সূর্যকে গিলে ফেলা রাহুর ভয়ে বিভিন্ন বিশ্বাস অনুযায়ী অনেকে অনেক আচার-অনুষ্ঠান করে থাকে।
কিন্তু আজকের দিনে আমরা যখন পরিষ্কার বুঝতে পারি পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে চাঁদ এসে যাওয়ার ফলে গ্রহণ হচ্ছে, তাই নতুন জীবাণুর জন্ম, রশ্মির বেশি প্রভাব ইত্যাদি প্রশ্ন অবান্তর।
তবে গ্রহণকালে খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকালে চোখের রেটিনা স্থায়ীভাবে নষ্টের কারণ হতে পারে, দৃষ্টি ক্ষুণ্ণ হতে পারে এবং অন্ধত্ব পর্যন্ত বরণ করতে হতে পারে৷ তাই গ্রহণকালে বা অন্যান্য সময়ও খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানো উচিত নয়। এ বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
আমরা সবাই জানি কেন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয়। তবুও আরেকবার স্মরণ করানোর জন্য বলছি।
চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় । এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়। অমাবস্যার পরে নতুন চাঁদ উঠার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আবার পৃথিবী যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করে। পৃথিবীপৃষ্ঠের কোন দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এই ঘটনাকে চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। এক্ষেত্রে যখন চাদ, সূর্যও পৃথিবী সরলরেখায় আসে তখন সূর্যের আলো পৃথিবীর কারণে চাঁদে পড়তে পারে না। অর্থাৎ চাঁদে ছায়া পড়ে। ফলে চাঁদের থেকে আলোর প্রতিফলন হয় না এবং আমরা চাঁদ দেখতে পারি না।
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ একটি চমৎকার প্রাকৃতিক ঘটনা। মহাকাশের বা পৃথিবীর এমন বৈচিত্রময়তা আমাদেরকে মুগ্ধ করে, অবাক করে। আসুন কুসংস্কারে আবদ্ধ না থেকে, মিথ্যা ভয় না পেয়ে — সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ উপভোগ করি। তবে খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকাবেন না যেন।
তথ্যসূত্র: