অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে, পুণ্য তিথিতে গঙ্গা স্নান করলে সকল পাপ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়।
খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীরা গির্জায় গিয়ে ফাদারের উপস্থিতিতে অপরাধ স্বীকার করলে পাপ মোচন হয়ে যায়।
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, হজ্জ্ব করলে যাবতীয় গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা নেত্রী থেকে শুরু করে দুর্নীতিবাজ, দুদকের লিস্টে থাকা ঋণখেলাপী, জেল খাটা আসামীরাও বছরে কয়েকবার হজ্জ্ব করতে যায়!
এখানে যুক্ত ছবিটি আনভির সাহেবের। মুনিয়া নামের এক তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পরেই বাংলাদেশে বহুল আলোচিত একটি নাম, আনভির!
আনভির সাহেব হজ্জ্ব করতে গেছেন।
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী আনভির সাহেব জীবনে যদি কোনো খারাপ কাজ করে থাকেন, হজ্জ্ব করার সাথে সাথে উনার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে!
এরপর হয়তো আরেকটি মুনিয়ার অপমৃত্যু হবে, — সে যাক, পরের কথা পরে হবে!
**শোনো রে হিন্দু খৃষ্টান মুমিন মুসলমান—- পাপ তো পাপই, পাপের দাগ মোচন হয় না।
যতই গঙ্গা স্নান করো, ফাদারের কাছে দোষ স্বীকার করো অথবা কাবা পাথরে চুম্বন করো—- যে পাপ করেছো, সেই পাপের মোচন হয় না।
তোমার বুকের ভেতর তোমার সারা জীবনের কুকর্ম এবং কুকর্মের দাগ থেকে যায়।
মরণের পরে বুকের ভেতরে থাকা কালো দাগ তোমার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে, তোমার স্থান হবে নরকে অথবা দোজখে।
পাপ মোচন করতে চাও?
বাকী জীবন যতো পারো সু কর্ম করো।
তাহলে বছর বছর গঙ্গা স্নান অথবা হজ্জ্ব করার দরকার হবে না।
আনভির সাহেবরাই শুধু বছরে কয়েকবার হজ্জ্ব করতে যায় তা নয়,
অনেক হিন্দুও প্রতিটি পুণ্য তিথিতে পুণ্য লাভের আশায় ঠেলাঠেলি ধাক্কাধাক্কি করে গঙ্গায় স্নান করে, তাতে কি আসলেই পাপ স্খলন হয়?
আমেরিকায় প্রতি রবিবার প্রতিটি গির্জায় খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীরা ভীড় করে পুণ্য লাভের আশায়।
পুণ্য তো কোনো বস্তু নয়, তাই পুণ্য কখনো লাভ করা যায় না। পুণ্য হচ্ছে ভালো কর্মের সূচক।
তাই পুণ্যের কাজ করে যেতে হয়। তাতেই সকলের মঙ্গল হয়, একজনের পুণ্য কাজের ফল দশজনের জীবন আলোকিত করে।
গীতায় বলে, ফল লাভের আশা করিও না, সঠিক কর্ম করে যাও।
সু কর্ম করো, তাতে আগের পাপ মোচন না হলেও পাপের ভার কমে যাবে।
মৃত্যুর পরেও তোমার নামের পাশে তোমার সু কর্মের ছাপ রয়ে যাবে।
এতো পয়সার মালিক তোমরা, পরবর্তী চার পুরুষেও খেয়ে শেষ করতে পারবে না। অর্ধেক সম্পদ নিজের জন্য খরচ করো, বাকী অর্ধেক দিয়ে তো সমাজের উন্নতিকল্পে বিশাল কোনো অবদান রাখতে পারো!
ভালো কাজের এমন নিদর্শন রেখে যাও, যাতে আর নতুন কোনো মুনিয়াকে আত্মহত্যা করতে না হয়।
তোমার রেখে যাওয়া কর্মের সুফল যেনো হাজার হাজার দুর্গা ফারিয়া রোজি হাফিজ উদ্দিন নরেশ পরেশ মুনিয়াদের জীবনে আশার আলো দেখায়।