#হিন্দু_নারীদের_পিতার_সম্পত্তির_সমাধিকার_প্রসঙ্গে
আমাদের হিন্দুদের মধ্যে নারীরা বাবার বাড়ি থেকে কোনো সম্পত্তির ভাগ পায় না, আবার স্বামীর কোনো সম্পত্তিও পায় না। তাহলে নারীরা কি শুধু পুরুষদের সেবা করতে আর রান্না ঘরের বাসন মাজতে জন্ম নিয়েছে নাকি??
আবার ভাই না থাকলে পিতার অবর্তমানে সম্পত্তি পায় জেঠতুত /কাকাতো ভাই রা। আহা একেবারে মগের মুল্লুক। সম্পত্তির ব্যাপারে হিন্দু নারীরা অনেক বেশী অবহেলিত, আর বাকি অবহেলা গুলোও তৈরী হয় মুলত এই কারনেই। যে হিন্দু নারী/ বউ রা চাকরি করে না সেই মেয়ে গুলোর ব্যাপারে অনেক পুরুষদের ভাবনা এমন যে, ‘এরা তো আামাদের উপর ডিপেন্ডেন্ট, তাই এরা সব মানতে বাধ্য’।
কেউ কেউ আবার দেখলাম বলছে যে এই আইন পাস হলে ভাইবোনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হবে।বোনকে বাবার সম্পত্তির ভাগ দিলে যদি ভাইদের সাথে সম্পর্কের অবনতি হয় তাহলে ওমন ভাইয়ের কোনো দরকার নেই।
এরপর আসছে লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে যারা ধর্ম পরিবর্তন করে তাদের মাধ্যমে বিধর্মীদের আরও বেশি সুবিধা হবে। একথা টা যুক্তিযুক্ত অনেক। প্রথমেই একটা কথা জানিয়ে রাখি যে লাভ জিহাদের মাধ্যমে শুধু হিন্দু মেয়েরাই ধর্ম পরিবর্তন করে না, অনেক হিন্দু ছেলেরাও ধর্মান্তরিত হয়ে থাকে। সুতরাং আপনাদের পক্ষপাতিক দৃষ্টি এখন থেকে সাইডে রাখেন। আইন হলে এমনভাবে আইন হতে হবে যেন যেসমস্ত ছেলে /মেয়ে ধর্ম পরিবর্তন করবে তারা কোনোভাবেই পিতার সম্পত্তির অংশীদার হতে পারবে না।
আবার কেউ বলেছেন যে পুরুষরাই তাদের সম্পত্তি দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না, নারীরা কি করে পারবে?? প্রথমত নারীদের দুর্বল ভাবা টা এখন থেকে দয়া করে বন্ধ করেন। আপনারা শুধু নারীদের দুর্বল ভাবেন না, আপনাদের নিজেরাই যে মানসিক ভাবে দুর্বল সেটাও বুঝেন না। কিন্তু যারা দখল করতে আসে তারা ঠিকই জানে যে আপনারা মেরুদন্ডহীন। আপনারা প্রতীবাদ করতে জানেন না, শেখেন নাই, এ জন্যেই দখলদাররা আপনাদের উপর চড়াও হয় এবং আপনারা চুপ করে দরজা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকেন।
দ্বিতীয়ত কোনো নারীর নামে যদি কোনো সম্পত্তি বৈধভাবে থাকে সেটা রক্ষা করা ওই নারীর স্বামী এবং সন্তানদেরও কর্তব্য। আপনারা যদি মানসিক ভাবে দুর্বল না হয়ে থাকেন তাহলে আপনারা সেটা এমনিতেই করবেন।
কিছু কতিপয় নিকৃষ্ট ব্যাক্তির জন্যে একটা কথা বলি আপনাদের বোনদেরকে বিয়ে দিতে যেমন টাকা খরচ হয়, আপনাদের কে বিয়ে দিতেও কিন্তু টাকাই খরচ হয়। আপনাদের বোনদেরকে বিয়েতে যেমন অনেক কিছু দিয়ে থাকেন (যারা দেয়) ঠিক তেমন ভাবে আপনাদের শ্বশুর বাড়ি থেকেও ওই আপনারাই নিয়ে আসেন।(যারা নেয়)
কেউ আবার বলতে পারেন যে আমি এত কথা বলছি নারীদের সম্পত্তি নিয়ে কিন্তু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে আমি কি করেছি সেটা। তাদরকে বলবো যে ব্যাক্তিগত জীবনে কে কি করেছে সেটা তার ব্যাপারে খোঁজ খবর না নিয়ে প্রশ্ন করা সাঁঝে না। শুধুমাত্র সোস্যাল মিডিয়াতে টাইপ করে কিবোর্ড ফাটাইলেই হয় না, মাঝে মধ্যে বাইরে গিয়ে গলা আর হাত পা গুলোও ফাটানো লাগে। আর সব থেকে বড় কথা হলো, প্রথমে ঘরের মানুষের ন্যায্য পাওনা টা বুঝিয়ে দিন, তারপরে বাইরে গিয়ে যারা আপনাদের উপর নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাড়ান।
সর্বপরি সবাইকে একটা কথা বলে দিতে চাই যে আপনার বোন আপনার মতো আপনার পিতারই সন্তান। আপনার পিতার সম্পত্তির উপর আপনার এবং আপনার বোনের সমান সমান অধিকার রয়েছে। আর সেই অধিকার নিয়ে কথা বলার মতো অধিকার একমাত্র আপনার পিতার
এবং আইনের রয়েছে, আপনার না।
আর হ্যাঁ আমার মতে হিন্দু নারীদের স্বামীর সম্পত্তির একটা অংশ দেওয়ার আইনও করা উচিৎ। কেননা এমন অনেক অকৃতজ্ঞ ছেলেমেয়ে দেখেছি যারা মাকে বয়স হয়ে গেলে দেখাশোনা করে না। বুড়ো বয়সে কিছু সম্পত্তি নিজের নামে থাকলে অন্তত কষ্ট কম হবে ওই মা দের।
ধন্যবাদ