১৯৭১ সালে কলকাতার কাছে নদীয়া জেলায় আশ্রয় নেয় ২২ লাখ বাংলাদেশি। কলেরায় মারা যায় প্রায় দশ হাজার মানুষ। ওই শরণার্থী ক্যাম্পের প্রধান ছিলেন নদীয়ার তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট দীপক কুমার ঘোষ। কোনো পুরস্কার নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী কর্মকর্তাদের অবদানের স্বীকৃতির অনুরোধ তার।
নিভৃতে থাকা দীপক কুমারকে খুঁজে পেয়ে জানা গেল যুদ্ধ সময়ে ভিটেবাড়ি ছাড়া স্বজন হারানো মানুষদের বিভীষিকার চিত্র। সীমান্তে তখন কাঁটা তার নেই, খুলে দেয়া হয়েছে ভারতের সব সীমান্ত এপারের মানুষ কেবল ছুটছে বাঁচার আশায় ওপারের দিকে।
সাবেক জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং তৃণমুল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ দীপক কুমার দাস বলেন: তাদের খাওয়দাওয়ার জন্য আমাদের ফুড কর্পোরেশনের গোডাউন খুলে দেয়া হলো। কোন রেস্ট্রিকশন নেই। চাল-গমের কোন অভাব ছিল না।
১৯৭১ সালে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে ছিলো ভারত। প্রায় ৭০ লাখই ছিল পশ্চিমবঙ্গে। কলকাতার ১৫টি জেলার মধ্যে ৮ সীমান্ত জেলায় ছিল শরণার্থী ক্যাম্প, নদীয়া জেলায় সব থেকে বড়। ২০০ ক্যাম্পে ছিলো ২২ লাখ নির্যাতিত অসহায় বাংলাদেশি।
সেই সময় ক্যাম্প প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জে জন্ম নেয়া ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস অফিসার দীপক কুমার দাস।
তিনি জানান: পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলায় বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষদের থাকা খাওয়া ওষুধপাতিসহ দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রায় ২০ হাজার কর্মচারী। আক্ষেপ নয় খানিকটা দু:খ করেই বললেন, কোন দেশই সরকারী কর্মচারীদের অবদান মনে রাখেনি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেকোন ষড়যন্ত্রর সঙ্গে আপোষ না করার জন্য তরুণদের সতর্ক থাকতে বলেছেন স্বাধীনতার এই বন্ধু।